থানার ওসির রুমে ঢুকতে লাগে না অনুমতি, বলতে হয় না স্যার। একজন গণ কর্মচারী হয়েই সাধারণ মানুষের সেবায় জনগনের কাছে নিজেকে এভাবেই উপস্থাপন করেছেন এক থানার ওসি। সরাসরি শুনছেন অভিযোগ। ঘটনার সত্যতা যাচাই করে দিচ্ছেন আইনী সহায়তাও।
দৌলতদিয়া পতিতাপল্লীর মৃত যৌনকর্মীদের প্রথমবারের মতো জানাজা নামাজ ও জনগণের দরবার গড়ে তুলে ইতোমধ্যেই ব্যাপক সারা ফেলেছেন তিনি।
তিনি হলেন রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আশিকুর রহমান, পিপিএম।
আমাদের দেশে সাধারণত থানায় ওসির রুমে ঢুকতে লাগে নানা ধরনের অনুমতি। একজন গ্রামের সাধারণ খেটে খাওয়া দিন মজুর সরাসরি ওসির রুমে ঢুকে তার সাথে কথা বলবে এটা সচরাচর দেখা যায় না। কিন্তু থানায় গিয়ে যদি দেখেন ওসির রুমের দরজায় ঝুলছে একটি লেখা যে ‘ইহা একজন গণ কর্মচারীর অফিস। যে কোন প্রয়োজনে এই অফিসে ঢুকতে অনুমতির প্রয়োজন নাই। সরাসরি রুমে ঢুকুন। ওসিকে স্যার বলার দরকার নাই’। ভিন্নধর্মী এই উদ্যোগ গ্রহণ করে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আশিকুর রহমান প্রশংসা পাচ্ছেন। ওসির এমন উদার মহানুভবতায় অবাক জেলাবাসীসহ থানায় আইনী সেবা নিতে আসা সাধারণ জনগণ।
জানা যায়, ওসি আশিকুর রহমান গত ১১ জানুয়ারি যোগদান করেন গোয়ালন্দ ঘাট থানায়। তারপর থেকেই নিতে থাকেন ভিন্নধর্মী সেবামূলক উদ্যোগ। গত ২ ফেব্রুয়ারি দৌলতদিয়া পতীতাপল্লীর বয়স্ক এক যৌনকর্মী মারা গেলে তার জানাজা নামাজ পড়িয়ে দাফনের ব্যবস্থা করেন তিনি। এই উদ্যোগের কারণে ইতোমধ্যেই তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন। পাশাপাশি তিনি দৌলতদিয়া পতীতাপল্লীর অসহায় নারীদের নানাবিধ অভিযোগ ও আইনী সহায়তা প্রদানে সেখানে গড়ে তুলেছেন ‘জনগণের দরবার’ নামে একটি আইনী সহায়তা কেন্দ্র। প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সেখানে গিয়ে অসহায় নারীদের দিচ্ছেন আইনী সহায়তা। ওসির এই কর্মকাণ্ডে অনেক খুশি দৌলতদিয়ার যৌনকর্মী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
এমন উদার মনমানসিকতা সম্পন্ন একজন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পেয়ে সাধারণ মানুষের সেবায় আরও আগ্রহী হয়ে উঠেছেন থানার অনান্য পুলিশ সদস্যরা।
পুলিশ হবে জনবান্ধব ও সাধারণ মানুষের সাথে পুলিশের দূরত্ব, ভয় ভীতি দূর করে মানুষের দ্রুত সেবা দিতেই এমন উদ্যোগের কথা জানান ওসি মোঃ আশিকুর রহমান।
Leave a reply