নোয়াখালী প্রতিনিধি
নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদী জেল খানা রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে নাছির উদ্দিন (৩১) নামের বিদ্যুৎ অফিসের একজন মিটার রিডারকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি। এসময় তার কাছ থেকে বিপুল পরিমান জাল বিদ্যুৎ বিল, মিটার, বিভিন্ন কর্মকর্তার সিল, একটি কম্পিউটার একটি প্রিন্টার জব্দ করা হয়।
মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড নোয়াখালী কার্যালয়ের পাশের একটি ভবন থেকে তাকে আটক করা হয়েছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড নোয়াখালীতে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া একাধিক সদস্য (মিটার রিডার) ও একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে জেলা শহরের বিভিন্ন বাসা/বাড়ি/দোকানে অবৈধভাবে নতুন সংযোগ, বিদ্যুৎ অফিস থেকে প্রদত্ত মূল মিটার খুলে তার রিডিং রিসেট করে তাদের কাছে থাকা নকল মিটার লাগিয়ে দিতো। চক্রটি অফিসের কাগজপত্রে বিপিডিবি উপ-সহকারি প্রকৌশলী, সহকারি প্রকৌশলী ও নির্বাহী প্রকৌশলীর স্বাক্ষর জাল করতো। এছাড়াও তারা বিদ্যুৎ বিলের মূল কপিগুলো অফিস থেকে কৌশলে সরিয়ে নিয়ে কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল করে জাল বিল তৈরি করে গ্রাহকের কাছ থেকে নগদ টাকা নিয়ে আসছিল।
মঙ্গলবার দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড নোয়াখালী কার্যালয়ের পাশের একটি ভবনের নিচ তলার একটি কক্ষে অভিযান চালায়। এসময় বিপুল পরিমান জাল বিদ্যুৎ বিল, মিটার, বিভিন্ন কর্মকর্তার সিল, একটি কম্পিউটার একটি প্রিন্টারসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে বিদ্যুৎ অফিস থেকে মিটার রিডার নাছির উদ্দিনকে আটক করে।
বিতরন বিভাগ বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড মাইজদী নোয়াখালী নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুল আমিন জানান, গত ৪ ফেব্রুয়ারি তিনি একজন গ্রাহকের মিটার পরিবর্তনের জন্য কাগজপত্র চেক করতে গিয়ে তিনিসহ বাকী কর্মকর্তাদের জাল স্বাক্ষর দেখতে পান। ওইদিন এ ঘটনায় মিটার রিডার হানিফকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন তারা। এই ঘটনায় ৫ ফেব্রুয়ারি হানিফের বিরুদ্ধে সুধারাম মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
তিনি আরো জানান, আটককৃত নাছিরকে গ্রাহকদের কাছ থেকে পাওয়া লিখিত বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে গত জানুয়ারি মাসে চাকরিচ্যুত করা হয়। এই চক্রের সাথে বিদ্যুৎ অফিসের অন্য কোন কর্মকর্তা ও কর্মচারী জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আলমগীর হোসেন জানান, জিজ্ঞাসাবাদে নাছির অবৈধভাবে গ্রাহকের মিটার পরিবর্তন, কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর জাল করে জাল বিল তৈরি চক্রের সাথে জড়িত বলে স্বীকার করেছে। এই চক্রে নাছির ছাড়াও একাধিক ব্যক্তি জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Leave a reply