স্টাফ রিপোর্টার:
দুধ দিয়ে ধুয়ে ‘পবিত্র’ করা হলো কেশবপুর আওয়ামী লীগ অফিস। হাতুড়ি-গামছা বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে অফিসটি দখল করে তাদের আস্তানা হিসাবে ব্যবহার করে আসছিল। এর আগে ওই কক্ষ থেকে দেশিয় অস্ত্র ও ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়। বাহিনীর সদস্যরা গা ঢাকা দিলে মঙ্গলবার দুপুরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অফিসটি দখল নেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের নিচে কৃষকলীগের অফিসটি ২০১৪ সালে হাতুড়ি ও গামছা বাহিনী দখলে নেয়। এরপর উপজেলার মাছের ঘের দখল, মাদক ব্যবসা ও সেবন, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, বাজার লুটসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এখান থেকে পরিচালনা করা হতো। তাদের অত্যাচারে আতংকে থাকত কেশবপুরবাসি।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদারকে যশোর-৬ (কেশবপুর) সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী করা হয়। এরপর হাতুড়ি ও গামছা বাহিনীর সদস্যসহ তাদের গডফাদাররা গা ঢাকা দেয়। আর আওয়ামী লীগের নির্যাতিত নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ দলে দলে হাতুড়ি ও গামছা বাহিনীর সদস্যদের খুঁজতে থাকে। সাথে সাথে তাদের দখলে থাকা বিভিন্ন ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ অফিস দখলমুক্ত করে গরুর দুধ দিয়ে ধুয়ে তাদের অপকর্মের পাপমোচন করা হয় বলে জানান উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রাবেয়া ইকবাল।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় ধোয়ামোছার সময় থানা পুলিশের উপস্থিতিতে হাতুড়ি বাহিনীর দখলে থাকা কক্ষটি খোলা হয়। এ সময় পুলিশ ওই কক্ষ থেকে ওই বাহিনীর ব্যবহৃত ২টি ধারালো বেকী (দা), ৪টি তলোয়ার, ১টি কিরিচ ও ফেনসিডিলের ৭টি বোতল উদ্ধার করে। এরপর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ গরুর দুধ দিয়ে কক্ষটি ধুয়েমুছে ফেলে।
এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম রুহুল আমীন বলেন, গত ৬ বছরে আওয়ামী লীগ অফিসে নেতা-কর্মীরা ঢুকতে পারেনি। মঙ্গলবার অফিসে এসে জানতে পারি থানা পুলিশ হাতুড়ি ও গামছা বাহিনীর দখলে থাকা কক্ষটির তালা খুলে বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রসহ ফেনসিডিলের বোতল উদ্ধার করে। তিনি আরও বলেন, হাতুড়ি বাহিনী প্রধান খন্দকার আব্দুল আজিজ, গামছা বাহিনী প্রধান খন্দকার শরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ অফিস দখল করে মাছের ঘের দখল, মাদক ব্যবসা ও সেবন, বাজার লুটসহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করা হতো। তাদের বিরুদ্ধে কেশবপুর ও মণিরামপুর থানায় ডাকাতি, বাজার লুট, নারী নির্যাতন, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, মাছের ঘের দখলের অসংখ্য মামলা রয়েছে। দলীয় নেতাকর্মীরা এর প্রতিবাদ করলে তাদের হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হতো। তাদের ভয়ে কেশবপুরবাসি ছিল আতঙ্কিত।
কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবু সাঈদ বলেন, দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় থানায় জিডি করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a reply