শরীয়তপুর প্রতিনিধি:
শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলা সদরের সরকারি শামছুর রহমান কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছয় ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত ও হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে ইয়ামিন সিকদার ও তার বন্ধু মারুফ রায়হানের বিরুদ্ধে। ইয়ামিন ওই কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণীর তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এবং কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও মারুফ রায়হান দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র। মারুফও কলেজ ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে পরিচিত।
সোমবার দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসে ওই ছাত্রীদের উত্যক্ত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে ওই ছয় ছাত্রী কলেজের অধ্যক্ষর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এর প্রেক্ষিতে অধ্যক্ষ মো. ফজলুল হক শিক্ষক পরিষদের জরুরি সভা আহবান করে মঙ্গলবার পাঁচ সদস্যর তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।
কলেজের শিক্ষার্থীরা জানায়, গত সোমবার বেলা সোয়া ১২টার দিকে একাদশ শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের ছয় শিক্ষার্থী শ্রেণী কক্ষ থেকে বের হয়ে ক্যান্টিনের দিকে যাচ্ছিলেন। ১২টা ২৯ মিনিটের সময় ওই কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়ামিন সিকদার ও ছাত্রলীগ নেতা মারুফ রায়হান ছাত্রীদের ঘিরে প্রেমের প্রস্তাব, অশালিন মন্তব্য করতে থাকেন। ছাত্রীদের সাথে ওই আচরণ ভিডিও করা হয়। তারা ওই স্থান থেকে নিরাপদে যেতে চাইলে তাদের ঘিরে রাখা হয়। পরবর্তীতে ওই ছাত্রীরা শিক্ষক মিলনায়তনে আশ্রয় নেন। বিষয়টি অধ্যক্ষকে জানানো হলে তিনি লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরামর্শ দেন।
ওই ছয় ছাত্রী লিখিত অভিযোগ দিলে অধ্যক্ষ ওই দিনই শিক্ষক পরিষদের সভা আহবান করেন। পরের দিন শিক্ষক পরিষদের সভায় এ ঘটনা তদন্ত করার জন্য পাঁচ সদস্যর একটি কমিটি গঠন করা হয়।
ঘটনার শিকার এক ছাত্রী বলেন, এ ঘটনায় আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি। এখন কলেজে আসতে ভয় পাচ্ছি। আমরা স্কুল ছেড়ে সবে কলেজে এসেছি। এমন মুহুর্তে এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হবে ভাবতে পারিনি। অভিযোগ দেয়ার পর তারা অনবরত আমাদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
ওই ঘটনার তদন্ত কমিটি গঠন করার পর থেকে ইয়ামিন ও মারুফ কলেজে আসছেন না। তাদের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
গোসাইরহাট থানার কর্মকর্তা (ওসি) মোল্যা শোহেব আলী বলেন, বুধবার সকালে কলেজের অধ্যক্ষের মাধ্যমে ছাত্রীদের উত্যক্ত করার কথা জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে এখনো কেউ থানায় অভিযোগ দেয়নি। ব্যক্তিগত ভাবে আমি বিষয়টির খোঁজ নিচ্ছি। প্রয়োজনে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
সরকারি শামছুর রহমান কলেজের অধ্যক্ষ মো.ফজলুল হক বলেন, ঘটনটি জানার সাথে সাথেই আমি ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দেয়া আমাদের অন্যতম দায়িত্ব। দুই কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওই ছাত্রদের ছাত্রত্ব বাতিলসহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a reply