গাইবান্ধা প্রতিনিধি :
‘মন্ত্রী-এমপি যত কিছুই থাকুক না কেন, আমার চেয়ে বড় মাইকেল এই গাইবান্ধা ডিস্ট্রিকে (জেলাতে) আর নাই। আমি চ্যালেঞ্জ দেবো, চেয়ারম্যান-মেম্বার নয়, এমপি-মন্ত্রীও যদি আমার সাথে টিকে থাকতে পারে তাহলে আমি এই সংস্থা থেকে বহিষ্কার হয়ে যাবো, এই গাইবান্ধাতেই আর থাকবো না।
সম্প্রতি এমন বক্তব্য দিয়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘আশার আলো প্রভাতি সংস্থা’র চেয়ারম্যান ডা. মো শফিকুল ইসলাম সাজু।
গত শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সাঘাটা উপজেলার ডাক বাংলো সংলগ্ন সংস্থার কর্মী সম্মেলন ও হতদরিদ্র অসহায় মানুষদের ত্রাণ বিতরণী উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
সাজু আরও বলেন, ‘ডিসি কন (বলেন), এসপি কন যেটাই কন সব আমাদের নিয়ন্ত্রণে চলে।’
এদিকে, তার বক্তব্যের এই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নানা আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে ডা. শফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। এমনকি তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারও বন্ধ পাওয়া যায়।
ভিডিওতে দেখা যায় সাজু তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমি মনে করি আমার মতো ৬৪টি ছেলে ৬৪টি ডিস্ট্রিকে যদি জন্ম নেয় তাহলে মন্ত্রী লাগবে না, সরকার লাগবে না, এমপিকেও লাগবে না। এই ৬৪ জন দিয়ে দেশ চালানো যাবে। আমাকে ধরতে গেলে অবশ্যই তোমার প্লাটফর্মের পায়ে দাঁড় হয়ে তারপর আমাকে ধরতে হবে। আমাকে ধরতে গেলে ডেপুটি স্পিকারের অনুমতি নিয়ে ধরতে হবে। আর ডেপুটি স্পিকার ফুলছড়ি থানার এমপি। মাথার মধ্যে কথা মনে রাখবেন, আর একটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, একটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, আমাকে গোটা গাইবান্ধা ডিস্ট্রিক পরিচালনা করার মতো ক্ষমতা আমাকে সরকার দিছে। সরকারের সাথে এতে যদি লড়াই-যুদ্ধ করা লাগে আমি তাই করতে বাধ্য হবো’।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, প্রভাতি সংস্থার পরিচালনা পর্ষদের আসলাম প্রধান, আবদুল মতিন, সংস্থার বাদিয়াখালি শাখা ব্যবস্থাপক সিদ্দিকুর রহমান, সুন্দরগঞ্জ শাখার ম্যানেজার আব্দুর রাজ্জাক, জুমারবাড়ি শাখার ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম ও এরিয়া ম্যানেজার মাহতাব। অনুষ্ঠানের শুরুতেই সংস্থার কর্মীদের ফুলের শুভেচ্ছা ও পুরস্কার তুলে দেন শফিকুল ইসলাম।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আবদুল মতিনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। ভিডিও যেসব কথা বলেছেন শফিকুল তা যদি সত্য হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে’।
ডা. শফিকুল ইসলাম সাজুর বাড়ি সাঘাটা উপজেলার ঘুড়িদহ ইউনিয়নের ঘুড়িদহ গ্রামে। শফিকুল ইসলাম সাজু গাইবান্ধা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান সরকারের ছোট ভাই। ২০১৭ সালে সেচ্ছাসেবী সংগঠন রেজি নং ১৪৪৩/২০১৭ লাইসেন্স নিয়ে গাইবান্ধার সাত উপজেলায় প্রভাতি সংস্থা পরিচালনা করে আসছেন তিনি।
Leave a reply