সন্ত্রাসবাদ দমনে সহায়তা না করার অভিযোগ তুলে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে কড়া বক্তব্য দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের টুইটের পর পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ালো দেশটির প্রতিবেশী ও ঘনিষ্ট মিত্র চীন।
আজ মঙ্গলবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গেংগ সুয়াং বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় পাকিস্তানের অবদান অবিস্মরণীয়। দেশটি এ ইস্যুতে অসংখ্য পদক্ষেপ নিয়েছে এবং ত্যাগ স্বীকার করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদবিরোধী লড়াইসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ক্ষেত্রে পাকিস্তানের অংশগ্রহণে বেইজিং খুবই সন্তুষ্ট। বিশ্ব সম্প্রদায়কেও এটা স্বীকার করা উচিত।’
এর আগে সোমবার বছরের প্রথম টুইট বার্তায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পাকিস্তানকে ‘মিথ্যবাদী ও প্রতারক’ আখ্যা দেন। পাশাপাশি টুইটারে বিষোদগারের কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে পাকিস্তানের জন্য বরাদ্দকৃত সাড়ে ২৫ কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা আটকে দিয়েছে হোয়াইট হাউস।
ট্রাম্প তার টুইটে বলেন, মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ১৫ বছরে ৩ হাজার ৩০০ কোটি ডলার হাতিয়ে নিয়েছে পাকিস্তান। একইসাথে, দেশটিকে সন্ত্রাসের স্বর্গরাজ্য আখ্যা দিয়ে ট্রাম্প বলেন, মার্কিন নেতৃত্বকে ইসলামাবাদ বোকা ভাবছে।
এর প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান জানিয়েছে, মার্কিন সন্ত্রাসবাদবিরোধী অভিযানে আর কোন সহায়তা করবে না তারা।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদ দমন অভিযান যুক্তরাষ্ট্রকে দেয়া আমাদের একধরণের সেবা। যার পরিবর্তে আমরা টাকা উসুল করেছি। কেননা তারা পাকিস্তানের ভূখণ্ড, আকাশ ও রেলপথ ব্যবহার করছে। এখন ওয়াশিংটন যদি চায় তাহলে পাই-পাই হিসাব দিতে আমরা প্রস্তুত। একইসাথে শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, কোন দেশের জন্যেই আমরা আর সহযোগিতামূলক কাজ করবো না।’
ডিজিআইএসপিআর কর্মকর্তা মেজর জেনারেল আসিফ গফুর বলেন, ‘আমরা যথেষ্ট ছাড় দিয়েছি, আর নয়। এবার পাকিস্তান সেনাবাহিনী যা করবে শুধু দেশের জন্যেই করবে। যে সামরিক সহায়তার কথা বলছে যুক্তরাষ্ট্র, তা কেবল আমাদের জন্য নয় বরং আফগানিস্তান ও সন্ত্রাসবাদবিরোধী জোটের জন্য বরাদ্দ ছিলো।’
এদিকে ট্রাম্পের বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে প্রতিবেশী ভারত ও আফগানিস্তান। ভারতের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখপাত্র জিতেন্ত্র সিং বলেন, ‘মোদি প্রশাসনের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী অবস্থানের সাথে এতোদিনে একমত হলো মার্কিন সরকার। আমরা বরাবর বলে আসছি, সীমান্তে জঙ্গি অনুপ্রবেশের জন্য দায়ী প্রতিবেশী রাষ্ট্র। এবার ট্রাম্পই বললেন, পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের স্বর্গরাজ্য।’
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের টুইটের কয়েক ঘণ্টা পরই হোয়াইট হাউসের বিবৃতিতে বলা হয়, সন্ত্রাসী ও জঙ্গি নির্মূল না করা পর্যন্ত স্থগিত করা হলো পাকিস্তানের জন্য বরাদ্দকৃত সাড়ে ২৫ কোটি ডলার। গত বছর দেশটির জন্য মার্কিন কংগ্রেসে পাস হওয়া ১১০ কোটি ডলারের তহবিলের অংশ এটি।
Leave a reply