বরগুনার বামনা উপজেলার বেগম ফাইজুন্নেসা মহিলা ডিগ্রি কলেজের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক আশরাফুল হাসান লিটনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছেন ওই কলেজের প্রাক্তন এক ছাত্রী। ওই ছাত্রী দাবি করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেম ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জারে অশ্লীল ও আপত্তিকর ছবি পাঠিয়েছেন শিক্ষক লিটন।
তবে অভিযুক্ত শিক্ষক অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তার ফেসবুক হ্যাক করে এসব করা হয়েছে। অন্যদিকে, কলেজ কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত শিক্ষককে বহিষ্কার করেছে। জানা যায়, শিক্ষক লিটন ওই ছাত্রীর আত্মীয়।
ছাত্রীর ফেসবুক পোস্টে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, অভিযুক্ত শিক্ষক আশরাফুল হাসান লিটন তার প্রাক্তন ছাত্রীকে বারবারই কিছু একটা বলতে চাচ্ছিলেন। পরবর্তীতে মোবাইল নম্বর চান। এক পর্যায়ে ভিডিও কল দেন। কল কেটে সরি বলেন। এরপর গোপনাঙ্গের ছবি পাঠান।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ছাত্রীর ফেসবুকে লেখেন-
‘(কেউ কেউ) পড়তে নিলে পুরোটা পড়বেন। আধাপড়া বিষয়ে পরে ভারী কটুক্তি ছুড়বেন না। আমার হজম হবে না। আমি জানি না আমি কি লিখতে যাচ্ছি। তবে এটুকু বুঝতে পারছি অন্তত কিছু মানুষের মুখোশ উন্মোচন অবশ্য প্রয়োজন। কোনদিনও ভাবি নি যে পরিচিত মানুষের নোংরা ম্যাসেজে আমার ফেসবুক ওয়াল নোংরা করতে হবে। আর আমি এতটুকু ভীত নই যে এজন্য পরবর্তীতে আরো ভয়াল কোন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় কি না! আমি নিজের ব্যাপারে অন্তত এতটা কনফিডেন্ট। একটি মানুষের সাথে যে ভালোবাসার সম্পর্ক আছে কখনো তিনিও চাইলে আমাকে ব্ল্যাকমেল করতে পারবেন না। যদিও তিনি সম্পূর্ণ বিপরীত চিন্তার মানুষ। তাই আমার কিছুতেই কিছু যায় আসে না। কাল যদি লোকে ঐ লুচুটার উপর না হেসে আমার উপর হাসে এই টপিক্স উল্লেখ করে তবে আমিও তাদের তথা এই সমাজের উপর উলটো হাসি হেসে দেব।’
তিনি লেখেন, ‘শুনে অবাক হবেন যে এই শুয়োরটা আমার কলেজ শিক্ষক ছিল অন্যদিকে আত্মীয় (*** আত্মীয়)। আমি মানুষটাকে কি শ্রদ্ধাটাই না করতাম। কতটা মানসিক অবক্ষয় হয়েছে তার ভেবে দেখুন। কলেজে থাকতে শুনতাম হারামিটা বউকে মারধর করে পরক্ষণেই গরুর মাংস কিনে আনে খুশি করতে। তখন ভাবতাম দাম্পত্য জীবনে টুকটাক ঝগড়া তো হয়ই। তবুও তো তিনি মিটিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু বিয়েও করেছে অন্তত ৪/৫ টা। এখন বুঝলাম যে ও কতটা অসুস্থ। আর ওর এই অসুস্থতা যতটা না ওর মনের তার অধিক ওর শরীরের কিছু উত্তেজক প্রত্যঙ্গের। গতকাল ফুফুর বাসায় থাকতে অনলাইনে বারবার কল করছিল। আমি ভাবলাম কোন জরুরি প্রয়োজন কি না। নক করার পর বললাম আপনি এখানে বলুন কেননা কথার ধরন অস্বাভাবিক লাগছিল। কিন্তু যে ভাবসাব দেখালো আমারই মনে হলো আমি হয়ত কোথাও ভুল করছি। তাই দিলাম নাম্বার। ফোনে কোন কল আসে নি। আজ আবার ম্যাসেজ দিচ্ছে দেখে আমি রিপ্লাই করলাম।
একপর্যায়ে সে ম্যাসেজে রিপ্লাই না করে ভিডিও কল দিল।রিসিভ হয়ে যাওয়ার পরপরই আবার কেটে দিলাম।এরপর আবার কল এলো। আমি অনেকটা বিরক্তি নিয়ে ফোন রিসিভ করি এটা বলতে যে- কি হয়েছে?কি এমন বলবেন আপনি? এবং আমি দেখলাম তিনি ক্যামেরাটা ঘুরিয়ে তার উলঙ্গ শরীরের বিকৃত অঙ্গভংগি করছে, এককথায় মাস্টারবেট। আমি যেন কিছুই বুঝে উঠতে পারলাম না। তাড়াতাড়ি ফোন কেটে দিলাম। কল কাটার পরও সে আমাকে অনবরত তার উলঙ্গ ছবি পাঠিয়ে যাচ্ছিল আর সেই সাথে ননস্টপ ভিডিও কল। আমি অনুভব করতে লাগলাম- আমার বুক কাপছে এবং চোখ থেকে টপাটপ পানি পড়ছে!!! কিছুতেই নর্মাল হতে পারছিলাম না। সারাটা জীবন আমি কি তবে শিক্ষকের ভুল সংজ্ঞা জেনে এসেছি না কি শিক্ষক হিসেবে একটা ভুল মানুষকে জেনেছি?? মাথায় খেলছে বহু প্রশ্ন, উত্তর নেই একটিরও। আমি সত্যি কাদছি এজন্য যে আমার অনেক শ্রদ্ধেয় শিক্ষকের এখন অনেকে কবরে এবং অনেকেই প্রবীণ। যারা আমার কাছে ছিলেন ঈশ্বরপুত্রের ন্যায়, এমনকি এখনো। মুহূর্তের জন্য হলেও নিজেকে ধিক্কার দিলাম কাকে আমি স্যার সম্বোধন করেছি? সে তো জানোয়ারের চেয়েও অধঃ। অথচ আমাদের পুরো পরিবার ওকে যথেষ্ট ভালো জানে, আজকের আগে আমিও জেনে আসতাম যেমনটা!!’
Leave a reply