কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
ফাহিমাকে শিকল মুক্ত করে চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। বৃহস্পতিবার দুপুরে চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ.ডব্লিউ. এম. রায়হান ফাহিমার বাড়িতে গিয়ে ফাহিমার ডান পায়ে লাগানো প্রায় ১০/১২ফিট লম্বা শিকল খুলে ফেলার নির্দেশ দেন। পরে তিনি ফাহিমা এবং পরিবারের সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। এরপর ফাহিমার পরিবারসহ তার চিকিৎসাভারের দায়িত্ব নেন তিনি। এছাড়াও পরিবারটিকে ব্যক্তিগতভাবে এবং সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা দেবার প্রতিশ্রুতি দেন ইউএনও।
এই বিষয়ে চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ.ডব্লিউ. এম. রায়হান বলেন, খবরটি শুনেই আমি ফাহিমার বাড়িতে গিয়ে তাকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা থেকে মুক্ত করি। ফাহিমাকে দেখে এবং তার কথাবার্তা শুনে মনে হয়েছে সঠিক চিকিৎসা করা গেলে হয়তোবা ভাল হতে পারে। সেজন্য আমি পাবনায় একজন ইউএনও’র সাথে আমি কথা বলেছি। তারা দু/একদিনের মধ্যে আমাকে খবর দেবেন। ফাহিমার চিকিৎসার যাবতীয় খরচ আমি বহন করব পাশাপাশি পরিবারটির জন্য কিছু করার চেষ্ঠা করব।
উল্লেখ্য, মানসিক ভারসাম্যহীন মেধাবী শিক্ষার্থী ফাহিমা ৩মাস ধরে শিকল বন্দি রয়েছে। সে চিলমারী উপজেলার কাঁচকোল বুরুজের পার গ্রামের ঈমাম মৃত: নুরুজ্জামানের মেয়ে। সে কাঁচকল খামার ছকিনা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে ১৯৯৬সালে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিয়ে দ্বিতীয় বিভাগে পাশ করে। আকষ্মিকভাবে বাবা নুরুজ্জামান পার্যালাইজড হয়ে পড়ায় সংসারে নেমে আসে অভাব।
নিজের পড়াশোনার খরচ এবং সংসার চালাতে চাকুরির সন্ধানে ফাহিমা পাড়ি জমান চট্রগ্রামে। চাকুরিরত অবস্থায় এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে অসাদু পথ অবলম্বন করায় তাকে বহিষ্কার করা হয়। তখন থেকেই ভেঙ্গে পরেন ফাহিমা। পুনরায় চাকুরিতে চলে গিয়ে কয়েক মাসের মাথায় মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলতে শুরু করে ফাহিমা। কয়েক বছর পর বাবা’র মৃত্যু এবং অভাবের কারণে সঠিক চিকিৎসা না হওয়ায় মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে ফাহিমা।
Leave a reply