করোনাভাইরাসের প্রভাবে চীনে নাটকীয়ভাবে কমেছে বায়ুদূষণ

|

করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রভাবে চীনের বায়ুদূষণ নাটকীয় পর্যায়ে কমে গেছে। সম্প্রতি মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার স্যাটেলাইট ছবিতে চীনের বায়ুদূষণ মাত্রা হ্রাস পাওয়ার চিত্র উঠে এসেছে।

করোনাভাইরাসের প্রকোপে চীনে প্রাণ হারিয়েছে অসংখ্য মানুষ। বন্ধ কল-কারখানা। ধস নেমেছে অর্থনীতিতে। এসব খারাপ খবরের মধ্যেই একে চীনের জন্য ইতিবাচক হিসেবে দেখছে বিবিসি। নাসার স্যাটেলাইট মানচিত্রে দেখা গেছে, চীনে হঠাৎ করেই কমে গেছে বায়ুদূষণের মাত্রা।

সংস্থাটি জানিয়েছে, চীনের অত্যাধিক ভাইরাস সংক্রমিত এলাকাগুলোতে নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ কমে গেছে আশ্চর্যজনক হারে। সাধারণত কল-কারখানা ও গাড়ির ধোঁয়া থেকেই বিষাক্ত এ গ্যাস নির্গত হয়।

কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে চীনে বেশিরভাগ কল-কারখানা বন্ধ, বেশকিছু শহরে গাড়ি চলাচল নিষিদ্ধ হওয়ায় এর সুপ্রভাব পড়েছে প্রাকৃতিক পরিবেশে।
মহাকাশ সংস্থা নাসা ২০১৯ সালের প্রথম দুই মাসের এবং চলতি বছরের প্রথম দুই মাসের বায়ুদূষণের একটি স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশ করেছে। সেখানে চীনে বায়ুদূষণের বড় পার্থক্য দেখা গেছে।

নাসার গড্ডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের বায়ুবিষয়ক গবেষক ফেই লিউ এক বিবৃতিতে বলেন, এটাই প্রথমবার কোনো বিশেষ ঘটনায় একটি বিশাল অঞ্চলে নাটকীয়ভাবে এত বড় পরিবর্তন দেখলাম।

তিনি জানান, ২০০৮ সালে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার সময়েও বায়দূষণের হার কমে গিয়েছিল। তবে সেবারের ঘটনাটি ছিল কিছুটা ধীর প্রক্রিয়ায়। জানুয়ারি শেষভাগ ও ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে চীনা নববর্ষ উদযাপনের সময় চীনের বায়ুদূষণ কিছুটা কমে যায়। তবে উদযাপন শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দূষণ আগের অবস্থায় ফিরে আসে বলে জানিয়েছে নাসা। ফেই লিউ বলেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার দূষণ হ্রাসের হার অনেক বেশি এবং দীর্ঘস্থায়ী।

গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। এরপর দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে গোটা দেশে। চীনে এ পর্যন্ত ৭৯ হাজার ৮২৪ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

মারা গেছেন ২ হাজার ৮৭০ জন। এরই মধ্যে বিশ্বের অন্তত ৫৪টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। এর মধ্যে চীনের বাইরে সর্বাধিক আক্রান্তের সংখ্যা দক্ষিণ কোরিয়ায় ও মৃত্যুর ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানে। দক্ষিণ কোরিয়ায় এ পর্যন্ত ৩ হাজার ১৫০ জন আক্রান্ত ও ১৭ জন মারা গেছেন। আর ইরানে আক্রান্ত ৫৯৩ ও মৃত্যু ৪৩ জনের।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply