বিশ্বজুড়ে জটিল আকার ধারণ করেছে করোনাভাইরাস। চীনের পর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইউরোপের দেশ ইতালি। দেশটিতে পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে করোনা আক্রান্ত এক নারী মারা যাওয়ার পর দু’দিন ধরে তার বাড়িতেই লাশ পড়ে ছিল। পরিস্থিতি এমন যে সৎকারেরই লোক পাওয়া দায়, সেখানে করোনাভাইরাসে মৃতের জন্য সংকট আরও তীব্র হবে সেটাই যেন স্বাভাবিক। ইতালির নেপলেস শহরে গত শনিবার মারা যান ৪০ বছর বয়সী থেরেসা ফ্রান্জাসে। সপ্তাহখানেক আগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, থেরেসার মরদেহ ওই বাড়িতে তার ভাই, বাবা-মা এবং অন্য সদস্যদের সামনে পড়ে ছিল ৩৬ ঘণ্টার মতো। স্বজন হারানোর শোকের মাঝেও তার সৎকার কীভাবে হবে সে চিন্তায়ই যেন বেশি নিমজ্জিত হয়ে পড়েছিলেন তারা। এ এক ভয়াবহ বাস্তবতা।
ওই নারীর ভাই লুসা বলেন, রাতের বেলা আমার বোন মারা গেছে, সম্ভবত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে। গতরাত পর্যন্ত আমি দেহ সৎকারের অপেক্ষায় ছিলাম।
কী কপাল, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বোনের মৃত্যুর পর ভাই লুসাও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হন। আবেগাক্রান্ত লুসা বলেন, পরিবারের সবাইকে আমি করোনা পরীক্ষার কথা বলেছি। আমরা ধ্বংস হয়ে গেছি, আমাদের সব হারিয়ে গেল।
লুসা এ ব্যাপারে একটি ভিডিও তৈরি করে ফেসবুকে পোস্ট করেন। পরে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত একটি সংস্থা আপ্রিয়া ফিনারেল হোম ওই দেহ সৎকারের আগ্রহ দেখায়। আপ্রিয়া ফিনারেল হোমের কর্মকর্তারা বলছেন, এটা একেবারেই বিভৎস একটা ব্যাপার। আমরা মাস্ক, সুরক্ষিত জুতা, স্যুট, গ্লাভসসহ অন্যান্য প্রতিরক্ষামূলক পোশাক পরে মরদেহ উদ্ধার করেছি।
স্থানীয় মেয়র এ ঘটনায় প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। বলেন, আমরা এখনো জানি না এ ধরনের পরিস্থিতিতে কী করা উচিত। তবে কারো উচিত তাদের সাহায্য করা। এটি মর্মান্তিক ব্যাপার।
এদিকে, বুধবার পর্যন্ত ইতালিতে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে ৬৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি।
Leave a reply