ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে বিয়ের প্রলোভনে ১৩ বছরের এক কিশোরীকে বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়ে নেশা দ্রব্য খাইয়ে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রাম্য সালিশ হয়েছে। এতে ধর্ষণের শিকার ওই কিশোরীকে তিন লক্ষ টাকা দেনমোহরে ধর্ষক কেফায়েত উল্লাহর সঙ্গে বিয়ের রায় দিয়েছেন গ্রাম্য সর্দাররা।
শুক্রবার রাতে উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের টিঘর গ্রামে এই সালিশ সভা হয়।
সালিশে অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন গ্রাম্য সর্দার টিঘর গ্রামের মৃত সফি মিয়ার ছেলে মো. জজ মিয়া, মৃত ইউনুছ মিয়ার ছেলে এনামুল মাস্টার, মৃত আবদুল অদুদ মিয়ার ছেলে কালু মিয়া, মৃত আজিজ সরকারের ছেলে কবির মিয়া ও মৃত মধু মিয়ার ছেলে কুদ্দুস মিয়া।
জানা যায়, গত শনিবার (৭মার্চ) বিকেলে সরাইল উপজেলার টিঘর গ্রামের দক্ষিণপাড়ার পিতৃহারা ওই কিশোরীকে বিয়ের প্রলোভনে বাড়ি থেকে নিয়ে যায় একই গ্রামের আবদুল হাই এর ছেলে বখাটে কেফায়েত উল্লাহ। পরে ওই কিশোরীকে বিজয়নগর উপজেলার ইসলামপুর এলাকায় নিয়ে নেশা দ্রব্য খাইয়ে ধর্ষণ করে কেফায়েত উল্লাহ।
পরদিন অচেতন অবস্থায় ওই কিশোরীকে বাড়ির পাশে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত যুবক। পরে বিষয়টি নিস্পত্তি করতে চলে গ্রাম্য সালিশ। অপরদিকে ওই কিশোরীর শারীরিক অবস্থা অবনতি হলে গত বুধবার রাতে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শনিবার দুপুরে টিঘর গ্রামের ইউপি সদস্য লায়েছ মিয়া বলেন, নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরীকে তিন লক্ষ টাকা দেনমোহরে অভিযুক্ত কেফায়েত উল্লাহর সাথে বিয়ের রায় দিয়েছেন সর্দাররা। সালিশে নির্যাতিতা কিশোরীর বিধবা মা এবং অভিযুক্ত কেফায়েত উল্লাহর বাবা উপস্থিত ছিলেন।
লায়েস মিয়া আরও বলেন, ভুক্তভোগী ওই কিশোরী জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে। তবে শুনেছি মেয়েটির শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। আমি সালিশে যাইনি। তারা দাওয়াত করেছিল। কারণ মেয়ের বয়স ১৩ বছর, আর অভিযুক্ত ছেলের বয়স ১৫ বছর।
এ ব্যাপারে সরাইল থানা উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম জানান, তিনি জেলা সদর হাসপাতালে গিয়ে ওই কিশোরী ও তার মায়ের সাথে কথা বলেছেন। নির্জনস্থানে একটি বাঁশঝাড়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে কেফায়েত উল্লাহ। কিন্তু মেয়ের মা জানান, কেফায়েত উল্লাহর সাথে তার মেয়ের বিয়ে দেবে বলে সর্দাররা দায়িত্ব নিয়েছেন। সর্দারদের কথার বাইরে গিয়ে তিনি এ ঘটনায় মামলা করতে অপরাগতা প্রকাশ করেন।
Leave a reply