কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
মধ্যরাতে কুড়িগ্রাম বাংলা ট্রিবিউনের জেলা প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম রিগ্যানের বাড়ি থেকে তাকে তুলে এনে ভ্রাম্যমাণ আদালতে কারাদণ্ড ও জরিমানা করার ঘটনায় অভিযুক্ত ডিসির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে।
শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে রংপুর বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার (রাজস্ব) মো: মাসুদ রানার নেতৃত্বে এক সদস্যের তদন্ত কমিটি এ তদন্ত শুরু করে।
প্রাথমিকভাবে রিগ্যানের শ্বশুর মোহাম্মদ আলী, মামা নজরুল ইসলাম ও নুর ইসলাম নুরু, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমাসহ কয়েকজনের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে।
এ সময় রিগ্যানের মামা কুড়িগ্রাম পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম ইসলাম অভিযোগ করেন, কারো প্ররোচনায় সম্পূর্ণ নির্দোষ রিগ্যানকে আটক করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে কোন সাক্ষ্য না নিয়ে অবৈধভাবে রিগ্যানকে সাজা দেয়া হয়েছে।
অপর মামা নুর ইসলাম নুরু অভিযোগ করেন বাড়ির গেট ও দরজা ভেঙে রিগ্যানকে আটক করে নিয়ে আসা হয়।
শ্বশুর মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘যে ছেলে একটা সিগারেট খায়না, তাঁর বিরুদ্ধে মাদক মামলা দেয়া দু:খজনক।’
রিগ্যানের স্ত্রী মোস্তারিমা সরদার নিতু বলেন, যখন শুয়ে ছিলাম তখন দরজায় কিছু লোক নক করতে ছিলো। এ সময় রিগ্যান থানায় ফোন করে থানার ওসি জানান, তারা কোন লোক পাঠান নি। তারপর দরজায় জোরে ধাক্কা দিয়ে ঘরে ঢুকে তাকে মারধর করে ধরে নিয়ে যায়। তারপর রাত ১টার দিকে আমরা শুনতে পাই ডিসি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে মাদক মামলা দেয়া হয়েছে।’
উল্লেখ্য, শুক্রবার রাত ১২টার দিকে কুড়িগ্রাম শহরের চড়য়াপাড়াস্থ বাড়ি থেকে আটকের পর রিগ্যানকে তুলে এনে ভ্রাম্যমান আদালতে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে টাস্কফোর্সের মাদক বিরোধী অভিযানে গভীর রাতে তাকে আটক করা হয়। এসময় তার বাড়ি থেকে ৪৫০ এমএল দেশী মদ ও ১০০ গ্রাম গাজা উদ্ধার করা হয় বলেও জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
অভিযান পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমা জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ, আনসার ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সমন্বয়ে টাস্কফোর্সের অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ অভিযানের সময় মাদকসহ আরিফুল ইসলাম রিগ্যানকে আটক করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে সে দোষ স্বীকার করায় এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভিন বলেন, ‘টাস্কফোর্সের নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে এবং ভ্রাম্যমান আদালতের বিধিবিধান অনুসরণ করে সাজা দেয়া হয়েছে।’
Leave a reply