করোনায় বিপদগ্রস্ত রিকশাচালকদের চাল-ডাল দিচ্ছেন এক ডাক্তার

|

বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৯ জন। মারা গেছেন ৪ জন।এমন পরিস্থিতিতে ২৫ মার্চ রাত থেকে ১০ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার।

এ ছুটি পেয়েই গ্রামের পথে ছুটছেন হাজার হাজার মানুষ। ব্যস্তবহুল ঢাকার রাস্তা এখন অনেকটাই ফাঁকা। এতে দিনমজুর, শ্রমিক, রিকশাচালকরা চরম বিপদে পড়েছেন। যাত্রী না পেয়ে মালিককে জমা দেয়ার টাকাই জোগাড় করতে পারছেন না রিকশাচালকরা। দিনমজুরদের কেউ কাজে নিচ্ছে না। ফলে এসব শ্রেণি পেশার মানুষদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারা বলছেন- করোনায় নয়, না খেয়েই মারা পড়ব আমরা।

এমন পরিস্থিতিতে যেন ফেরেস্তা হয়ে এলেন এক ব্যক্তি। এসব দিনমজুর ও রিকশাচালকদের চাল-ডাল-পেয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিতরণ করে যাচ্ছেন তিনি।

গত কয়েকদিন ধরে রাজধানীর উত্তরায় নিজের গাড়ি থামিয়ে রিকশাচালকদের চাল-ডাল-লবণ-আলু এবং সাবান দিতে দেখা যাচ্ছে ওই ব্যক্তিকে। এসবের জন্য কোনোই টাকা নিচ্ছেন না তিনি।

স্থানীয়রা তার এই উদ্যোগের বাহবা জানিয়ে ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপলোড করেছেন। সেই ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল। নেট দুনিয়ায় প্রশংসায় ভাসছেন ওই ব্যক্তি।

জানা গেছে, করোনার কারণে সৃষ্ট সংকটময় এই পরিস্থিতিতে এমন চমৎকার ও মানবিক উদ্যোগ নেয়া সেই ব্যক্তির নাম নুরুল হাসান। পেশায় তিনি একজন চিকিৎসক।

ডাক্তার নুরুল হাসানের এমন অনবদ্য উদ্যোগে চোখের পানি ছেড়ে দিয়েছেন অনুদান পাওয়া এমন কয়েকজন রিকশাচালক।

তারা জানিয়েছেন, ‘ফাঁকা ঢাকায় যাত্রী না পেয়ে কি খাব, ছেলেমেয়েদের জন্য কি নিয়ে যাব সেই চিন্তায় মাথায় হাত দিয়ে বসেছিলাম।এমন সময় তিনি আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। ২-৩ দিন চলার মতো রসদ দিয়েছেন। আল্লাহ যেন তাকে ভালো রাখেন। ওই চিকিৎসকের কথা আমরা কোনোদিন ভুলব না।’

এ কথা বলে আকাশে দু হাত তুলে কেঁদে ফেলেন তারা।

এদিকে ফেসবুকে চিকিৎসক নুরুল হাসানের এমন উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে নেটিজেনদের একাংশ বলছেন, এমন আরও অনেককে এগিয়ে আসতে হবে। তবে দেশ লকডাউন হলেও এসব দিনে এনে দিনে খাওয়ার মানুষরা বাঁচতে পারবেন।

প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসে লাগাম টেনে ধরতে পারছে না বিশ্বের কোনো বিজ্ঞানী। এর কার্যকর প্রতিষেধক এখনো আবিষ্কার হয়নি। এরইমধ্যে বিশ্বজুড়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৮ হাজার মানুষ। আক্রান্তের সংখ্যাও সাড়ে ৩ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply