দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার সেই দুঃস্বপ্নের রাতেরও ছিল একটি সুখ-স্মৃতি! রাতের আকাশে এক রোমাঞ্চকর জ্যোতির প্রথম হদিশ পেয়েছিলেন এক বঙ্গসন্তান অধ্যাপক শিশির কুমার মিত্র।
৭৫ বছর পর সেই সুখ-স্মৃতিই ফিরিয়ে আনল করোনায় দূষণ-হীন পরিষ্কার আকাশ! করোনার ভয়ে গোটা দেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মানুষও যখন ঘরবন্দি, তখন আকাশে দেখা মিলল এমন এক ঝাঁক তারা, বহু বহু দূরে থাকার ফলে যাদের কথা আমরা এর আগে কখনও জানতেই পারিনি। তাদের কোনওটা আমাদের মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সিরই অন্য এক প্রান্তের। কোনওটা বা আরও অনেক অনেক দূরের কোনও গ্যালাক্সির।
খুব দূরে আছে বলে বড় টেলিস্কোপেও এত দিন যাদের চেনা যায়নি, মেদিনীপুরের সীতাপুরে সেই ‘অচেনা অতিথি’রা ধরা দিল মাত্র ২৪ ইঞ্চি লেন্সের টেলিস্কোপে। কলকাতার ‘ইন্ডিয়ান সেন্টার ফর স্পেস ফিজিক্সের এক গবেষকদের চোখে।
আইসিএসপি-র অধিকর্তা দেশের বিশিষ্ট জ্যোতির্বিজ্ঞানী সন্দীপ চক্রবর্তী বলছেন, “আমরা অনেকগুলি তারার খোঁজ পেয়েছি। যাদের অনেকগুলির কথাই আগে জানা ছিল না। তাই তাদের নিয়ে এর আগে কোনও গবেষণাও হয়নি। আগে কেউ এই তারাদের খোঁজ পেলে তাদের নামকরণ করা হত। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও রেকর্ডেই এদের নামধাম, কতটা দূরে রয়েছে তারা, তার কোনও উল্লেখ নেই।
‘নতুন অতিথি’দের মধ্যে যারা উজ্জ্বলতর, সেগুলি রয়েছে আমাদের থেকে প্রায় ১৬০০ আলোকবর্ষ দূরে। আর যেগুলির আলো খুবই ক্ষীণ সেগুলি রয়েছে আরও দূরের কোনও গ্যালাক্সিতে।
এছাড়াও, “যেগুলি থেকে খুব কম আলো আসছে আমাদের দিকে, সেগুলি কোনও তারা না-ও হতে পারে। হতে পারে অন্য কোনও কিছু। তবে সেগুলি কী, তা এখনও আমরা বুঝে উঠতে পারিনি। সামনে পূর্ণিমা। তাই আকাশ আলোয় ভরে থাকবে বলে এই অচেনাদের চেনার সুযোগ তখন পাব না। তবে পূর্ণিমা থেকে অমাবস্যার মধ্যে তাদের চাক্ষুষ করার সুযোগ আমরা পাব বলেই মনে হচ্ছে। তখনও তো চলবে লকডাউন!”
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা
Leave a reply