বর্তমানে সারা বিশ্বে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করেছে এবং জনজীবন বিপর্যস্ত করছে। সমগ্র বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও করোনাভাইরাস প্রভাব বিস্তার করছে। এর মোকাবেলা, প্রতিরোধ ও প্রভাব বিস্তাররোধে অন্যান্য বাহিনীর মতো কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীও।
মঙ্গলবার আনসার সদর দফতর থেকে পাঠানো এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়, ব্যাটালিয়ন আনসার, সাধারণ আনসার ও ভিডিপি সদস্যরা বর্তমানে করোনাভাইরাস মোকাবেলা এবং এর প্রভাব বিস্তাররোধে সকল জেলা, উপজেলা ও প্রত্যন্ত লে নিয়োজিত থেকে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে সহযোগিতার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে কাজ করে যাচ্ছে। বাহিনীর সদস্যরা করোনা সংক্রামণ থেকে রক্ষার্থে সমগ্র দেশের লকডাউন পরিস্থিতিতে জনগণকে ঘরে থাকার জন্য উদ্বুদ্ধ করছে এবং জরুরি প্রয়োজনে বাহিরে বের হওয়া ব্যক্তিদের সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে পরামর্শ দিচ্ছে।
এছাড়াও বাহিনীর সদস্যরা বাজার মনিটরিংসহ সার্বিক পরিস্থিতির উন্নয়নকল্পে বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে মোবাইল কোর্টে দায়িত্ব পালন করছে। সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে দোকান-পাট বন্ধসহ জনগণের অবাধ বিচরণ এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নিশ্চিতকল্পে বাহিনীর সদস্যরা আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় টহল ও পেট্রোল ডিউটিতেও তারা নিয়োজিত রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ এবং করোনা আক্রান্ত রোগীদের সুচিকিৎসা প্রাপ্যতার লক্ষ্যে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশন সেন্টার স্থাপনসহ প্রভৃতি কার্যক্রমে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে স্থানীয়ভাবে জেলা প্রশাসন ও জেলা সদর হাসপাতাল সমূহের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ স্থাপন করে দৃষ্টান্তমূলক দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল কাজী শরীফ কায়কোবাদ, এনডিসি, পিএসসি, জি এর নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে গাইবান্ধা জেলার আনসার-ভিডিপি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশন সেন্টার হিসেবে জেলা প্রশাসন ও জেলা সদর হাসপাতালের অধীনে হস্তান্তর করা হয়েছে। উক্ত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ১০০ জন রোগীর জন্য বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর পক্ষ থেকে করোনা ভাইরাসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্থ, দুঃস্থ ও হতদরিদ্র জনগণের মাঝে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মহামারি এই করোনা ভাইরাসের প্রভাব বিস্তার রোধে এবং জনকল্যাণে সার্বিক পরিস্থিতি মনিটরিং ও প্রয়োজনীয় কার্যক্রমের লক্ষ্যে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদর দপ্তরসহ প্রতিটি রেঞ্জ কার্যালয়ে জরুরি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এছাড়া জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সারাদেশে বাহিনীর জেলা, উপজেলা ও ব্যাটালিয়ন ইউনিট কার্যালয়সহ প্রতিটি কার্যালয়ের সামনে জনসাধারণ ও নিজেদের জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান, হ্যান্ড ওয়াশ দিয়ে হাত ধোয়ার সরঞ্জামাদিসহ বেসিন স্থাপন এবং পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মহামারি এই করোনাভাইরাস মোকাবেলায় দুর্যোগের শুরু থেকেই তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত প্রায় ৬১ লক্ষ সদস্যের দেশের সর্ববৃহৎ সুশৃঙ্খল এ বাহিনীর প্রতিটি ইউনিট কার্যালয়ের সদস্য-সদস্যারা এবং তৃণমূল পর্যায়ের ইউনিয়ন/ওয়ার্ড দলনেতা/দলনেত্রী ও ভিডিপি/টিডিপি সদস্য-সদস্যরা জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাহিনীর প্রস্তুতকৃত লিফলেট জনগণের মাঝে বিতরণ করেছে এবং তা চলমান আছে।
/বিজ্ঞপ্তি
Leave a reply