বরগুনা প্রতিনিধি:
বরগুনার তালতলীতে করোনাভাইরাসের কারণে আরও অনেকের মতো বেকার হয়ে খাদ্য সংকটে পড়ে এক দিনমজুরের পরিবার। অভিযোগ উঠেছে, খাদ্য সহায়তার তালিকায় ঐ পরিবারের নাম অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলে স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার খান দিনমজুরের মেয়েকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেছে।
ভুক্তভোগী পরিবার জানিয়েছে, করোনাভাইরাসকালীন পরিস্থিতির কারণে উপজেলার শারিকখালী ইউনিয়নের পূর্ব বাদুরগাছা এলাকার সেই দিনমজুর বেকার হয়ে পড়েন। এতে খাদ্য সংকটে পড়ে পরিবার। গত ৬ এপ্রিল সোমবার সোবহান তার পরিবারের নাম সরকারি সহায়তার খাতায় তালিকাভুক্ত করার জন্য ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার খানের কাছে যান। আনোয়ার খান সেই সময় তার মেয়েকে ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে আসতে বলেন। পরদিন ৭ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে সেই দিনমজুরের বিবাহিত মেয়ে ইউপি সদস্যের বাড়িতে গেলে তিনি তাকে ধর্ষণ করেন।
ভুক্তভোগীর পরিবার আরও জানিয়েছে, এ সময় ঐ মেয়ের স্বামী ইউপি সদস্যর বাড়িতে গিয়ে ঘটনাটি দেখে ফেলে। এই ঘটনা কাউকে বললে খুন করার হুমকি দেওয়া হয় তাকে। পরে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়ে গেলে ভুক্তভোগী দিনমজুর পরিবারকে মামলা করলে এলাকা ছাড়া করার হুমকি দেওয়া হয়। পরের দিন মেয়েটির স্বামীকে তুলে নিয়ে যান অভিযুক্ত ইউপি সদস্য।
এদিকে, ইউপি সদস্যর এমন কর্মকাণ্ডে হতবাক এলাকাবাসী। তার বিচার দাবি করেন স্থানীয় সচেতন সমাজ। অভিযুক্ত আনোয়ার খান তালতলী উপজেলার শারিকখালী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি।
ভুক্তভোগীর বাবা সেই দিনমজুর বলেন, এই করোনাভাইরাসের কারণে আমি অসহায় দিনযাপন করছি। এর মধ্যে আমার মেয়ে তার স্বামী ইসরাফিলকে নিয়ে বেড়াতে আসে বাড়িতে। সরকারি সহায়তার জন্য স্থানীয় মেম্বার আনোয়ার খানের কাছে গেলে তিনি আমার মেয়েকে ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে তার বাড়িতে যেতে বলেন। পরে বিকেলের দিকে তার বাড়িতে আমার মেয়ে তার গেলে বাড়িতে গেলে তিনি তাকে ধর্ষণ করেন। এই ঘটনায় মামলা করলে এলাকা ছাড়ার হুমকি দেন তিনি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আনোয়ার খান বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে। এই মেয়ে যাকে স্বামী হিসেবে পরিচয় দেয় সে তার আসল স্বামী না। তাকে তুলে আনা হয়নি বরং ছেলের পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল বাশারের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিউজ করার দরকার নেই। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে যোগাযোগ করা হবে।
তালতলী থানার অফিসার্স ইনচার্জ(ওসি) কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে খোঁজখবর নিয়ে দেখছি এখনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) সেলিম মিঞা বলেন, খাদ্য সহায়তা দেওয়ার কথা বলে ধর্ষণের বিষয়টি খুব দুঃখজনক। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a reply