সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে জ্বর, সর্দি, শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা যাওয়া যুবকের লাশ দাফনে মসজিদের খাটিয়া ব্যবহার করতে না দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার লাশ দাফন হলেও বৃহস্পতিবার খাটিয়া ছাড়া দুই ভাই ও পিতার কাঁধে করে লাশ দাফনে নিয়ে যাওয়ার একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
যদিও বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত মারা যাওয়া যুবকের করোনা পরীক্ষার ফলাফল জানা যায়নি।
গত মঙ্গলবার রাতে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের বক্তারপুর গ্রামে করোনাভাইরাসের উপসর্গ জ্বর, গলা ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা যান এই শ্রমিক। সে সিলেটের একটি ইট ভাটায় কাজ করতো।
করোনা উপসর্গে মারা যাওয়ায় তার নমুনা সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য বিভাগ। পরে স্বাস্থ্য বিভাগ ও পরিবারের লোকজন লাশ দাফনের উদ্যোগ নেয়। তবে লাশ বহনের জন্য গ্রামের মসজিদের খাটিয়া ব্যবহারে বাঁধা দেয় গ্রামের মানুষজন। এক পর্যায়ে বাড়ি থেকে কিছু দূরে মারা যাওয়া যুবকের দুই ভাই ও বাবা কাঁধে করে নিয়ে কবরস্থানে লাশ দাফন করেন।
লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম বলেন, হয়তো গ্রামের মানুষজন আতঙ্কে মসজিদের খাটিয়ে ব্যবহার করতে দেয়নি। তবে, আমরা একটি লাশ বহনের বাক্স ও পলিথিন দিয়েছিলাম লাশ বহনের কাছে ব্যবহার করার জন্য, মারা যাওয়া যুবকের পরিবার তা ব্যবহার করেন নি। শুনেছি দুই ভাই ও বাবা কাঁধে নিয়ে কবরে লাশ দাফন করেছে।
মারা যাওয়া যুবকের পিতা জইবুর রহমান বলেন, গ্রামের শরিফ উল্লাহ মেম্বারসহ কয়েকজন (স্থানীয় ইউপি সদস্য) মসজিদের খাটিয়া ব্যবহার করতে দেয়নি। পরে বাধ্য হয়ে অন্য জায়গা থেকে খাটিয়া নিয়ে আসি, সেটিও তারা ব্যবহার করতে দেয়নি, তারা সেটি নিয়ে যায়। পরে মরদেহ কাঁধে নিয়ে কবরস্থানে দাফন করতে হয়েছে আমাদের। তিনি আরও অভিযোগ করেন, আমরা পানি দিলেও স্বাস্থ্য বিভাগ আমার ছেলেকে দাফনের আগে গোসল করায় নি, তারা লাশ বহন করে কবরস্থানেও নিয়ে যায়নি।
অভিযোগের ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য শরিফ উল্লাহ বলেন, মারা যাওয়া যুবকের পরিবারের লোকজন আমাদের সঙ্গে উল্টো খারাপ ব্যবহার করেছে। তারা দাবি করেছিল, তাদের ছেলের মৃত্যুকে করোনাভাইরাসের নাম দিয়ে সমাজে হেনস্তা করা হচ্ছে। তবে তিনি, মসজিদের খাটিয়া ব্যবহার করতে না দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন সুমন জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই যুবকের লাশ দাফন করা হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের লাশ বহন করে দাফন করার সুযোগ নেই, কারণ তার আত্মীয়স্বজন হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিল।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোনিয়া সুলতানা জানান, বিষয়টি শুনেছি, এ ব্যাপারে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
Leave a reply