করোনাভাইরাসকে প্রচণ্ড সংক্রামক। কথা বলার সময় এমনকি শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমেও করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে বলে মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ‘সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) কয়েকজন বিশেষজ্ঞ।
সিডিসি’র পরিচালক ডা. রবার্ট রেডফিল্ড বলেছেন, এই ভাইরাসের সংক্রমণ ক্ষমতা ‘ফ্লু’য়ের চেয়েও তিনগুণ বেশি। এটি কতটা সহজে ছড়াতে পারে সে সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ অনেক নতুন তথ্য উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিডিসির সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে। ২৩ জানুয়ারি থেকে ১৬ মার্চ পর্যন্ত সময়ে সংক্রমণের শিকারদের, বিশেষত সিঙ্গাপুরের সাতটি ‘ক্লাস্টার’য়ের ‘প্রিসিমটোম্যাটিক’দের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন করা হয়।
‘প্রিসিমটোম্যাটিক’রা হলেন, সেসব মানুষ, যারা করোনায় আক্রান্ত রোগীর মাধ্যমে করোনাভাইরাস সংক্রমণের শিকার হয়েছেন; কিন্তু এখনও তাদের মাঝে কোনো উপসর্গ দেখা যায়নি।
এই মানুষগুলোর মাধ্যমেও ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে, যার কারণে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখা আরও কঠিন হয়ে যাচ্ছে। ডা. রেডফিল্ড বলেন, একাধিক গবেষণার মাধ্যমে আমরা অনেকটাই নিশ্চিত যে, এই ভাইরাস সংক্রমণের শিকার হওয়া মানুষের এই বড় অংশেরই কোনো উপসর্গ দেখা দেয় না।
সিডিসি জানিয়েছে, এটি শ্বাসতন্ত্র থেকে বেরিয়ে আসা লালার কণার সঙ্গে করোনাভাইরাস মিশে থাকে, যা আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির মাধ্যমে বাইরে বেরিয়ে বাতাসে মেশে। ফলে আক্রান্ত ব্যক্তির ৬ ফিটের মধ্যে থাকলে কিংবা ভাইরাস আছে এমন স্থান স্পর্শ করার পর নাক, মুখ, চোখ স্পর্শ করলে সুস্থ ব্যক্তিও সংক্রমণের শিকার হবেন।
সিডিসির মতে, প্রিসিমটোম্যাটিক ট্রান্সমিশন হতে পারে লালা কণার পাশাপাশি পরোক্ষভাবেও। আর কথা বলা এবং অন্যান্য স্বরতন্ত্রের কর্মকাণ্ড যেমন- গান গাওয়ার মাধ্যমেও এই ভাইরাস ছড়াতে পারে।
ভ্যাণ্ডারবেল্ট ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের অধ্যাপক এবং সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. উইলিয়াম স্ক্যাফনার বলেন, আপনি সুস্থ বোধ করা মানেই যে আপনি ভাইরাস সংক্রমণের শিকার হননি এ কথা জোর দিয়ে বলা সম্ভব নয়। আবার যে সুস্থ মানুষটির সঙ্গে আপনি কথা বলছেন বা যার গান শুনছেন সে মানুষটিও যে নিরাপদ সেটিও বলা যাবে না।
ডা. স্ক্যাফনার বলেন, সবারই উচিত হবে মুখে মাস্ক ব্যবহার করা। যেন হাঁচি, কাশি ও কথা বলার মাধ্যমে শরীরে থাকা ভাইরাস অন্য কাউকে সংক্রমিত করতে পারবে না।
Leave a reply