মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি :
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করতে দেশজুড়ে চলা ‘লকডাউনের’ মধ্যে কর্মহীন হয়ে পড়া খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের নিরন্ন মানুষ কাজের খোঁজে ও বেঁচে থাকার তাগিদে গোপনে এক স্থান থেকে অন্য স্থানেপাড়ি জমাচ্ছেন। অনেকটা রোহিঙ্গাদের মতোই যেন রাতের আঁধারে নদী পার হয়ে অনত্র যাওয়ার চেষ্টা তাদের। সম্প্রতি মুন্সিগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জ সংযোগ পথ মুক্তারপুর সেতু বন্ধ করে দেয়ায় রাতের আঁধারে ট্রলারে করে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ থেকে অনেকে মুন্সিগঞ্জে ঢোকার চেষ্টা করে।
মানুষ ভর্তি বেশ কয়েকটি ট্রলার নৌপুলিশ ফেরতও পাঠিয়েছে। কিন্তু তারপরও অনেকে নদী কিংবা পায়ে হাঁটা পথে মুন্সিগঞ্জে ঢুকে পড়ছে। স্থানীয় প্রশাসন ও চিকিৎসকদের সূত্রে জানা গেছে, মুন্সিগঞ্জে যে ১৮ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে তাদের অধিকাংশই নারায়ণগঞ্জ এবং একজন ঢাকার মীরপুর থেকে সংক্রমিত হয়েছেন।
সোমবার রাতের আঁধারে ট্রলারে করে ঢাকার কেরাণীগঞ্জ থেকে পটুয়াখালী যাওয়ার পথে ধলেশ্বরী নদী থেকে ৯০ জন ইটভাটার শ্রমিককে আটক করা হয়। রাত দেড়টার দিকে মুন্সিগঞ্জ শহরের উপকণ্ঠে মুক্তারপুর এলাকা সংলগ্ন ধলেশ্বরী নদী থেকে ওই শ্রমিকদের আটক করে নৌ-পুলিশ। আটককৃতদের মধ্যে ৩০ জন নারী, ৪৮ জন পুরুষ ও ১২ জন শিশু রয়েছে।
মুক্তারপুর নৌফাঁড়ির ইনচার্জ কবীর হোসেন খান জানান, দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের জাজিরা এলাকার বিভিন্ন ইটভাটার প্রায় ৯০ জন শ্রমিক ট্রলারযোগে পটুয়াখালীর উদ্দেশে রওনা দেয়। রাত দেড়টার দিকে ট্রলারটি মুক্তারপুর এলাকা সংলগ্ন ধলেশ্বরী নদীতে আসলে নৌ-পুলিশের একটি টিম তাদের আটক করে। বর্তমানে আটক শ্রমিকরা মুক্তারপুর নৌফাঁড়ি পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। তাদের দুপুরের খাবার দেওয়া হচ্ছে।
নৌফাঁড়ির ইনচার্জ আরও জানান, আটককৃতদের দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। নৌ-পুলিশের উদ্যোগে আটক শ্রমিকদের মাঝে ৪-৫ দিনের জন্য চাল, ডাল ও আলুসহ নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।
এভাবে, বিভিন্ন আক্রান্ত এলাকা থেকে মুন্সিগঞ্জে মানুষ আসতে থাকায় স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। তারা মনে করছেন , বিষয়টি যেমন একদিকে মানবিক অন্যদিকে ঝুঁকিপূর্ণও।
Leave a reply