স্পেনসহ ইউরোপের দেশ আর পুরো বিশ্ব যখন লড়ছে করোনাভাইরাস এর বিপক্ষে তখন অন্যরকম এক যুদ্ধ শুরু হয়েছে স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনায়। কাতালান ক্লাবটির বোর্ড সদস্যদের মধ্যে তৈরি হয়েছে কলহ। পদত্যাগ করেছে ক্লাবের ৬ শীর্ষ কর্মকর্তা।
শুধু তাই নয় এর আগে বেতন কাটা নিয়ে সভাপতি বার্তোমেউরের সাথে সম্পর্কটা তেতো হয়ে গেছে মেসিদের।
সারা পৃথিবীর ক্লাবগুলোর কাছে বার্সেলোনা রোল মডেল। ক্লাবের সঙ্গে ফুটবলারদের সুসম্পর্ক কর্মকর্তাদের সৌহার্দ্য সবকিছুই পাথেয় উদীয়মান ক্লাব গুলোর জন্য। কিন্তু সেই বার্সেলোনায় দেখা দিয়েছে ফাটল। সভাপতি হোসে মারিয়া বার্তোমেউরের সাথে দ্বন্দ্বে পদত্যাগ করেছেন দুই ভাইস প্রেসিডেন্টসহ ৬ শীর্ষ কর্মকর্তা।
কিন্তু হঠাৎ কি নিয়ে বাধলো দ্বন্দ্ব? আপাতদৃষ্টিতে সবার আগে সামনে চলে আসে করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট আর্থিক জটিলতা। মাত্র একমাস খেলা বন্ধ থাকায় ক্লাবের স্টাফদের বেতন পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছিলো বার্সেলোনা সভাপতি।
পরিস্থিতি সামাল দিতে মেসি সুয়ারেজ দের ৩০% বেতন কেটে নেন বার্তোমেউ। তবে ক্লাব সভাপতির এই সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত হয় বুমেরাং। কেননা সব দলের সাথে কোন রকম আলোচনা না করে বেতন কাটার বিষয়টি তীব্র সমালোচনা করেছেন মেসিসহ ক্লাবের সিনিয়র ফুটবলাররা।
এই সব বিষয়ে চরম ভাবমূর্তি সংকটে পড়ে বাসলোনা। এমন পরিস্থিতিতে বার্সেলোনার বর্তমান পর্ষদের দুর্নীতির খবর ছাপা হয় বেশ কিছু গণমাধ্যমে। মূলত সেসব কারণ থেকে সভাপতির প্রতি অনাস্থার কারণে সরে দাঁড়ান ক্লাবের ছয় শীর্ষ কর্তা।
তবে স্প্যানিশ সংবাদ মাধ্যম বলছে, সংকটের শুরু এখানে নয়। গোলোযোগের বীজ বপন হয়েছিল বেশ কিছুদিন আগে। আরও স্পষ্ট করে বললে ১৪ জানুয়ারি ২০২০। লীগ টেবিলের শীর্ষে বার্সেলোনা কিন্তু তারপরও অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে এক ম্যাচ হারায় কোচ এরনেস্ত ভালভেরদেকে ছাঁটাই করেন সভাপতি বার্তোমেউ। যা ভালোভাবে নেয়নি মেসিরা।
দ্বিতীয় ঘটনা- লম্বা ইনজুরিতে যখন লুইস সুয়ারেজ তখন জানুয়ারির দলবদলে বদলি হিসেবে বিশ্বমানের স্ট্রাইকার দলে নেবার দাবি ওঠে। ক্লাব সমর্থক ফুটবলারদের সেই চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হন বার্তোমেউ।
বার্সেলোনার সংকটের পেছনে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড নেইমারের হাতও আছে। বর্তমান মৌসুমের শুরুর আগে মেসির উত্তরসূরি হিসেবে নেইমারকে আবারও দলে ফেরানোর দাবি তোলেন ক্লাব সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু সেই চাহিদাকে পাত্তা দেননি বার্সেলোনা সভাপতি।
ছোট ছোট বিন্দু-কণার মতো জমতে থাকা সেই ক্ষোভগুলো আজ সিন্ধুতে পরিণত হয়েছে। চরম ইমেজ সংকটে পড়েছেন বার্তোমেউ। মরার উপর খরার ঘা। দরজায় কড়া নাড়ছে সামনের নির্বাচন যার পুরো ফায়দা নিতে প্রস্তুত তার প্রতিদ্বন্দ্বী ভিক্টর ফন্ত।
Leave a reply