পাবনা প্রতিনিধি:
করোনা উপসর্গ দেখা দেয়ায় এবার দুর্গম চরে এক বৃদ্ধকে ফেলে আসার ঘটনা ঘটেছে। পাবনার বেড়া উপজেলার নতুন ভারেঙ্গা ইউনিয়নের দুর্গম চর চরসাফুল্যা গ্রামে কে বা কারা মানসিক ভারসাম্যহীন এই বৃদ্ধকে (৬৫) ফেলে রেখে গিয়েছে। সোমবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসিফ আনাম সিদ্দিকী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি চিকিৎসা দল নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সেই বৃদ্ধকে উদ্ধার করে আইসোলেশনে ওয়ার্ডে ভর্তি করেছেন।
এলাকাবাসী ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুরের পর যমুনা নদীর দুর্গম চর চরসাফুল্যা গ্রামে ওই বৃদ্ধকে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় তিনি চরবাসীকে তার পরিচয় দিতে পারেননি। এছাড়া তিনি কীভাবে ওই চরে এলেন তাও বলতে পারেননি। রোববার (১৯
এপ্রিল) ওই বৃদ্ধ গ্রামের এক ব্যক্তির বাড়ির কাছে গিয়ে নেতিয়ে পড়েন।
স্থানীয় লোকজন ও ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে খবর পেয়ে ইউএনও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেন।
রোববার (১৯ এপ্রিল) বিকালে ওই গ্রামে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কয়েকজন মাঠকর্মী গিয়ে ওই বৃদ্ধকে নামে মাত্র চিকিৎসা দিয়ে আসেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি জানান, গতকাল রোববার হাসপাতাল থেকে যেসকল ডাক্তাররা এসেছিলেন তারা ঐ বৃদ্ধর কাছেও যায়নি। দূর থেকেই ওষুধ দিয়ে চলে গেছে।
সোমবার ইউএনও আসিফ আনাম সিদ্দিকী ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সরদার মো. মিলন মাহমুদ একটি চিকিৎসা দল (মেডিক্যাল টিম) নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন। বৃদ্ধকে সেখান থেকে উদ্ধার করে বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি করান।
ইউএনও আসিফ আনাম সিদ্দিকী বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করেছি। তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য রাজশাহী পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। ওই বৃদ্ধ কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় তার পরিচয় বের করতে পারিনি। তবে, স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে কোনো নৌকা থেকে তাকে নামিয়ে ওই চরে রেখে যাওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে টাঙ্গাইলের সখীপুরে করোনা উপসর্গ থাকায় এক নারীকে জঙ্গলে ফেলে আসার অভিযোগ উঠেছিল পরিবারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় দেশব্যাপী নিন্দার ঝড় উঠেছিল। এমন অমানবিক আচরণে বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। পরবর্তীতে ঐ নারীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা দেয়া হয়। তার শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়নি।
Leave a reply