সবচেয়ে দূষণমুক্ত সময় পার করছে পৃথিবী

|

করোনাভাইরাসের প্রকোপে যখন বিপর্যস্ত বিশ্ব তখন প্রকৃতি ফিরছে তার আপন রূপে। ছবি প্রতিকী

নেই কোনো আলোচনা সভা কিংবা আন্দোলন; অথচ ৫০তম ধরিত্রী দিবসে সবচেয়ে দূষণমুক্ত সময় পার করছে পৃথিবী। করোনাভাইরাসের প্রকোপে যখন বিপর্যস্ত বিশ্ব তখন প্রকৃতি ফিরছে তার আপন রূপে।

১৮০টির বেশি দেশে টানা লকডাউন আর কড়াকড়ির ফলে কমেছে দূষণ। সভ্যতা বিনির্মাণের নামে বছরের পর বছর নিষ্পেষণের শিকার পৃথিবী ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে। ধরিত্রী দিবসে বোধহয় এ বার্তাই দিলো করোনাভাইরাস।

দূষণ কমাতে বছর বছর সম্মেলন যেখানে ব্যর্থ, ফল হয়নি কোনো আন্দোলনেও, তখন অদৃশ্য এক ভাইরাসের কারণে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই কমে গেছে দূষণ। বিশ্বজুড়ে বন্ধ কলকারখানা, চলছে না গাড়ি-বিমান-ট্রেন।

ফলে ভেনিসের স্বচ্ছ হয়ে যাওয়া গ্র্যান্ড ক্যানেলে ফিরতে শুরু করেছে ডলফিন-জেলিফিশ। লোকালয়ে দেখা মিলছে নাম না জানা বিরল পাখি আর কীটপতঙ্গের। থাইল্যান্ডের সৈকতে এসেছে দুর্লভ প্রজাতির কচ্ছপ।

পরিবেশ বিষয়ক বিভিন্ন সংস্থার জরিপ বলছে, গেল বছরের তুলনায় দূষণের মাত্রা কমেছে রেকর্ড, প্রায় ৫০ শতাংশ। বায়ুস্তরে কার্বন মনো অক্সাইডের পরিমাণও নেমে এসেছে অর্ধেকে। চাইলেই দূষণ রোধ সম্ভব, সেই বার্তাই যেন দিলো পৃথিবী। তাই ৫০তম বিশ্ব ধরিত্রী দিবসে দাবি উঠেছে, করোনা বিদায় হলেও প্রতি বছর নিয়ম করে নির্দিষ্ট কিছু সময়ের জন্য রাখতে হবে লকডাউন।

পরিবেশবিদ ক্রিসটোস জেফরোস জানান, চাইলেই আমরা পরিবেশ সুন্দর রাখতে পারি- এটাই তার প্রমাণ। তাই প্রতি বছর যদি এভাবে নির্দিষ্ট কিছু সময়ের জন্য বিশ্বজুড়ে লকডাউন চলে, তাহলে প্রকৃতি আরও সুন্দর হয়ে উঠবে।

শিল্প বিপ্লবের মাধ্যমে উন্নয়নের ধারা থেকেই আজকের বিজ্ঞান আশ্রিত যান্ত্রিক সভ্যতা। যা তৈরি করেছে একের পর এক শিল্প কারখানা, প্রতিযোগিতা চলেছে আণবিক শক্তি অর্জন আর পারমাণবিক বোমা তৈরির। অব্যাহত এই অত্যাচারে দিন দিন পরিবেশে স্পষ্ট হয়েছে ক্ষত; নষ্ট হয়েছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য।
ফলশ্রুতিতে স্বাভাবিকতা হারিয়েছে পৃথিবী।

লকডাউনে যখন আবারও ধরিত্রী ফিরছে নিজ রূপে, তখন প্রশ্ন ওঠে- তাহলে কি নিষ্পেষণের প্রতিশোধ নিতেই কি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে পৃথিবী।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply