করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত ২১৭ জন পুলিশ সদস্য আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১১৭ জনই ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত। এছাড়া সংক্রমণের ঝুঁকিতে আছেন এমন কয়েকশ’ পুলিশ সদস্যকে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সদর দফতর এবং ডিএমপি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের ২১৭ জনের মধ্যে ১১৭ জন ডিএমপিতে কর্মরত। এছাড়া, গাজীপুর মেট্রোপলিটনে ২৫ জন, ১৮ জন গোপালগঞ্জে, ১৬ জন নারায়ণগঞ্জে, ৭ জন গাজীপুর জেলায়, ৯ জন কিশোরগঞ্জে, ৫ জন গোয়েন্দা ইউনিট স্পেশাল ব্রাঞ্চে, ৩ জন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটনে, ৩ জন শেরপুরে, ২ জন ঢাকা জেলায় ও ৬ জন নরসিংদী জেলায় কর্মরত। আর ১ জন করে মুন্সিগঞ্জ, পুলিশ টিঅ্যান্ডআইএম, এপিবিএন ময়মনসিংহ, নৌ–পুলিশ ইউনিট ও অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের সদস্য।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশজুড়ে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত ও লকডাউন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য পুলিশ সদস্যরা নিয়মিত টহল দিচ্ছেন। এছাড়া রাস্তায় জীবাণুনাশক ছিটানো, শ্রমজীবী মানুষকে সহায়তা করা, চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া এবং কোয়ারেন্টাই থেকে পালানো ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার কাজ করছেন তারা। পর্যাপ্ত পরিমাণ সুরক্ষাসামগ্রী না থাকায় দায়িত্ব পালনের সময় ‘অসাবধানতাবশত’ সাধারণ মানুষের সংস্পর্শে এসে তাদের মধ্যে এই সংক্রমণ হচ্ছে।
বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যসংখ্যা দুই লাখের বেশি। পুলিশের কর্মকর্তা পর্যায়ের সদস্যরা সাধারণত নিজেদের বাসায় অবস্থান করেন। তবে অনেক পুলিশ সদস্যই অবস্থান করেন জেলাগুলোর পুলিশ লাইনসে। এসব জায়গায় একটি কক্ষে ১০ থেকে ১২ জন করে সদস্য থাকেন। তাদের যেকোনো একজন থেকে অনেকের মধ্যে সংক্রমণ দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজির আহমেদ বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুলিশের অন্যান্য হাসপাতালগুলোতেও পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। এছাড়া, দেশের ৫টি বিভাগে চিকিৎসার আয়োজন করা হচ্ছে। আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের ঢাকায় যে চিকিৎসা দেয়া হবে, একই চিকিৎসা বিভাগীয় হাসপাতালেও দেয়া হবে। যে সকল পুলিশ সদস্য কোয়ারেন্টাইনে, আইসোলেশনে এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তাদের নিয়মিত খোঁজখবর নেয়ার জন্য ইউনিট প্রধানদের নির্দেশ দেন তিনি।
তাদের প্রার্থনা, বিনোদন ও বই পড়ার ব্যবস্থা করার জন্যও নির্দেশ দেন আইজিপি। তিনি বলেন, শুধু আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের নয়, তাদের পরিবারেরও খোঁজখবর নিতে হবে, যেন তারা নিজেদের একা মনে না করেন।
Leave a reply