ভারতে সুস্থ হওয়ার পরদিন কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীরা মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ছেন। এক্ষেত্রে নারী রোগীরাই বেশি মারা যাচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে ভীষণ দুশ্চিন্তায় পড়েছেন দেশটির চিকিৎসকরা।
ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসকরা এমন তথ্য দিয়েছেন বলে দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, করোনাভাইরাস শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ফুসফস, হৃদপিণ্ড ও মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলছে। এ থেকেই শরীরে বৈকল্য তৈরি হচ্ছে।
হায়দরাবাদের অ্যাপেলো হাসপাতালের পালমোনলজিস্ট ডা. সি বিজয় কুমার জানান, বাইরে থেকে দেখে রোগীদের সুস্থ মনে হচ্ছে, কিন্তু ভেতরে ভেতরে রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কমতে থাকে। সারা পৃথিবীর কোভিড-১৯ কেসেই এই চিত্রটাই চোখে পড়েছে। ভারতও তার ব্যতিক্রম নয়।
আক্রান্তদের ৫ শতাংশ কেসে এই ঘটনা এমন জায়গায় পৌঁছে যাচ্ছে যেখানে আক্রান্ত রোগী অত্যন্ত ক্রিটিক্যাল স্টেজে পৌঁছে যাচ্ছে।
প্রাথমিকভাবে যে পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছে, তাতে ভারতে এই অতিরিক্ত কঠিন কেসে যারা মারা যাচ্ছে তাদের বয়স ৪০ থেকে ৬০।
ম্যাক্স হেলথ কেয়ারের পক্ষ থেকে ডা. সন্দীপ বুদ্ধিরাজা জানিয়েছেন, যাদের আগে ব্রেন স্ট্রোক কিম্বা হার্ট অ্যাটাক হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে আরও মারাত্মক খারাপভাবে প্রভাব বিস্তার করছে করোনাভাইরাস।
এই ক্রিটিক্যাল কেসে পুরুষরা নারীদের তুলনায় বেশি তাড়াতাড়ি মারা যাচ্ছেন।
ডা. রাজেশ চাওলা জানিয়েছেন, শিশুদের ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ কেসে ও ভালো রোগ প্রতিরোধক্ষমতা আছে এমন রোগীদের ৮০ শতাংশ কোভিড ১৯ কে জয় করে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং সঙ্গে আরও বিভিন্ন রোগ থাকলে দ্রুত রক্তে
অক্সিজেনের যোগান কমিয়ে দিয়ে রোগিকে একেবারে মৃত্যুমুখে ঠেলে দিচ্ছে কোভিড-১৯।
প্রসঙ্গত, ভারতে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৩ হাজার ৭৭। মোট মৃত্যু হয়েছে ৭১৮ জনের।
সর্বাধিক করোনা আক্রান্ত রাজ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম গুজরাট। সারা দেশের মতো সেখানে রোগীর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। মোট আক্রান্তের ভিত্তিতে রাজ্যগুলোর মধ্যে এ মুহূর্তে গুজরাট দুই নম্বরে আছে। সবার ওপরে একমাত্র মহারাষ্ট্র।
গুজরাটে বৃহস্পতিবার আরও ২১৭ জন নতুন করে এই প্রাণঘাতী ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে মোট সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬২৪ জন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১১২ জনের।
Leave a reply