সাফল্য-ব্যর্থতায় ক্ষমতার দ্বিতীয় মেয়াদে চার বছর পার করলো আওয়ামী লীগ সরকার। ধরে রেখেছে আগের মেয়াদের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা। অর্থনীতির সূচক, কূটনীতি ও অবকাঠামো খাতের উন্নয়নে ভর করে আরও একবার ক্ষমতায় আসার আশায় বুক বাধছেন নেতাকর্মীরা। তবে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, প্রশ্নফাঁস ও দুর্নীতির কারণে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে সরকারের কার্যক্রম।
প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনের অভিযোগ মাথায় নিয়েই ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি শপথ নেয় আওয়ামী লীগের টানা দ্বিতীয় মেয়াদের সরকার। চার বছরে যোগ হয়েছে নানা সাফল্য। বিশেষ করে বিশাল চ্যালেঞ্জের মুখে পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ এগিয়ে নিচ্ছে সরকার। চলছে রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মাতারবাড়িসহ বড় বড় বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের কাজ।
মেয়াদের শেষ বছরে একটু ঘটা করেই অর্জন-সাফল্য তুলে ধরছে সরকার। সড়কে শোভা পাচ্ছে উন্নয়নের তথ্য সম্বলিত ব্যানার প্লাকার্ড।
দারিদ্রের হার কমানো, রিজার্ভ বৃদ্ধি ,অবকাঠামো উন্নয়নসহ ৭ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জনে রোড মডেল এখন বাংলাদেশ।
জঙ্গিবাদি হামলা-হুমকিতে মেয়াদের বেশিরভাগ সময় পার করলেও শেষ দিকে এসেছে সাফল্যও। কার্যকর হয়েছে শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের রায়। কূটনৈতিক ক্ষেত্রে বড় অর্জন আছে ছিটমহল বিনিময়ে। রোহিঙ্গা সংকটে সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে সরকারের ভূমিকা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্লানেট ফিফটি-ফিফটি চ্যাম্পিয়ন ও এজেন্ট অব চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছেন জাতিসংঘে। ইউনেস্কোর দলিল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ।
৭ মার্চের ভাষণের স্বীকৃতি শুধু বঙ্গবন্ধুকে সম্মনিত করেনি ববং পুরো বাঙালি জাতিকে সম্মানিত করেছে বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।
সফলতার পাল্লায় অনেক কিছু যোগ হলেও,আছে ব্যর্থতা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রায় ৮’শ কোটি টাকা রিজার্ভ চুরির ঘটনায় নাক কাটা গেছে বাংলাদেশের। ব্যাংকিং খাতে জেকে বসেছে অনিয়ম-লুটপাট। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে নাভিশ্বাস সাধারণ মানুষের। ব্যাপক সমালোচনা আছে প্রশ্নফাঁসের ঘটনায়।
আওয়ামী লীগ সরকারের সর্বশেষ চার বছরের শাসনামলের মূল্যায়ন করতে গিয়ে প্রবীণ এই অধ্যাপক বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের গলায় ফাঁস হচ্ছে প্রশ্নপত্রফাঁস। বিষয়টি নিয়ে বার বার সমালোচিত হলেও পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন আসেনি।”
উন্নয়নে সাফল্য-ব্যার্থতার বাইরে রাজনৈতিক সংস্কৃতির উন্নয়ন এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিয়ে আছে প্রশ্ন।
“ গণতন্ত্রণ হল একটি বাই-সাইকেল। একটি চাকা হলো সরকারি দল আর অন্যটি হলো বিরোধী দল। তবে গণতান্ত্রিক শাসনাবস্থায় সরকারি চাকার দাপুটে অব্স্থান থাকলেও বিরোধী চাকার কোনো কার্যক্রম ছিল না। যাতে করে গণতন্ত্রের সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে।”
যমুনা অনলাইন: এএস/
Leave a reply