নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি:
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা নাজমুল (২২) নামে এক করোনা পজিটিভ রোগীকে বাড়ি থেকে মারধর করে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বাড়ির মালিকসহ এলাকার কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
বুধবার (৬ মে) রাত সাড়ে এগারটার দিকে উপজেলার রূপসী বাগবাড়ি এলাকায় নির্মম এই ঘটনাটি ঘটে।
নাজমুল ময়মিনসিংহের বাসিন্দা আবুসিদ্দিকের ছেলে। সে রূপসী বাগবাড়ি এলাকার নূর হোসেনের বাড়ির ব্যাচেলার ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে। সে এলাকার সিটি গ্রুপে চাকরি করার পাশাপাশি পড়াশোনা করছিল।
ভুক্তভোগী নাজমুলের মামা সিরাজূল ইসলাম জানান, নাজমুলের জ্বর, সর্দি দেখা দিলে ৩ মে উপজেলার স্বাস্থ্য বিভাগে তার নমুনা দিয়ে আসি। আজ (৬ মে) রিপোর্টে তার করোনা পজিটিভ আসে। কিন্তু তার কোনও উপসর্গ ছিল না। তারপরও চিকিৎসকের পরামর্শে বাসাতেই ছিল। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর বাড়ির মালিকসহ এলাকার কিছু লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে এসে ভয়-ভীতি দেখিয়ে জোর করে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এই অবস্থায় সে মীরবাড়ি মসজিদের কাছে দাঁড়িয়ে থাকে। এটা খুবই অমানবিক একটি কাজ। বিষয়টি নাজমুল করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর যে ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন তাকে মোবাইল ফোনে জানান। পরে ওই ডাক্তার বিষয়টি স্থানীয় পুলিশ উপজেলা প্রশাসন কে জানায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে নাজমুল ইসলাম কে উদ্ধার করে ওই বাড়িতে রেখে আসে এবং বাড়ির মালিক কে ঝামেলা না করার জন্য পুলিশ বলে দিয়ে আসে।
এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মমতাজ বেগম জানান,‘মারধরের বিষয় ঘটেনি তবে, বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে’। আমি একটু আগে বিষয়টি শুনেছি। সাথে সাথেই ঘটনাস্থলে ডাক্তার এবং পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আমি নিজেও ওই ছেলের সাথে কথা বলেছি। এটা কেউ করতে পারে না। যে ব্যক্তি বা যারাই এই কাজটি করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তিনি বলেন, সে আমাদের পরামর্শে বাসায় ছিল। এত রাতে একজন মানুষকে এভাবে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়াটা অমানবিক। ওই ছেলে ওই বাড়িতেই থাকবে। তাকে যদি সেখান থেকে হাসপাতাল বা অন্য কোথাও নিতে হয় সেটি আমরা নেব। তাছাড়া এভাবে একজন করোনা রোগীকে বের করে দেওয়া মানে অন্যকে সংক্রমিত করা।
এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানা পুলিশের অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) মাহমুদুল হাসান জানান, ঘটনা জানার পর সাথে সাথে পুলিশ পাঠিয়ে ব্যবস্থা নিয়েছি। রুগীকে ওই বাসাতেই রেখে আসা হয়েছে। সকালের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। রাতে ওই রোগীর সাথে কোন ঝামেলা করা হলে বাড়িওয়ালার সহ অন্যদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a reply