নিজস্ব প্রতিনিধি, জয়পুরহাট:
করোনা আক্রান্ত স্ত্রীর সাথে হাসপাতালে থাকছেন সুস্থ স্বামী। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পত্নীসেবা করে ভালোবাসার এক অনন্য উদাহরণ তৈরি করেছেন। এমন ঘটনা দেখা গেছে, জয়পুরহাটের আক্কেলপুর হেলথ ইন্সটিটিউটের আইসোলেশন ওয়ার্ডে।
এমন ব্যতিক্রমী ঘটনায় হতবাক এলাকাবাসী। নানা বাধা বা সরকারি নিয়মকে তোয়াক্কা না করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আক্কেলপুরের যুবক তার করোনা আক্রান্ত স্ত্রীর সাথে জোর করেই আইসোলেশনে থাকছেন।
জানা গেছে, ক’দিন আগে আক্কেলপুর উপজেলার ১৯ বছর বয়সী গার্মেন্টস ফেরত এক গৃহবধুর করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়। স্বাস্থ্য বিভাগ করোনা আক্রান্ত রোগীকে আইসোলেশনে আনতে গেলে স্ত্রীকে কিছুতেই একা ছাড়তে রাজি হননি তার স্বামী। তাই শেষ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত স্ত্রীর সঙ্গে আইসোলেশন সেন্টারেই থাকছেন তিনি।
বুধবার রাতে ওই নারীকে জেলার আক্কেলপুর উপজেলার গোপীনাথপুর ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির আইসোলেশন ইউনিটে (সেফ অতিথিশালা) রাখা হলে তার স্বামীও জোর করে সেখানেই প্রবেশ করেন। জানা যায়, স্ত্রীর প্রতি ভালবাসা থেকেই নাকি তিনি স্ত্রীর সাথে আইসোলেশন সেন্টারে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। অবশেষে সেখানকার কর্তৃপক্ষও তাকে আইসোলেশনে নিতে বাধ্য হয়।
আইসোলেশন ইউনিটের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক ডা. শাহীন রেজা ঘটনাটি তার নিজ ফেসবুকে শেয়ার করেছেন। তিনি জানান, স্ত্রীর করোনা পজেটিভ থাকলেও স্বামীর নেই অথচ স্বামী স্ত্রীর প্রতি ভালবাসা থেকে একসাথে থাকতে চান। তাই বাধ্য হয়ে তারা স্বামীকে আইসোলেশনে থাকার অনুমতি দিয়েছেন তবে আলাদা রুমে থাকছেন তারা। আর এখন পর্যন্ত তারা ভালো আছেন।
চিকিৎসক আরও জানান, ওই ইউনিটের দ্বিতীয় তলায় ভর্তি থাকা করোনা আক্রান্ত এক তরুণী ৩য় তলার এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। আইসোলেশনে থাকা ওই যুবক ও যুবতী ২য় ও তয় তলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে কথা বলছেন নিয়মিত। চিকিৎসক ও কর্তৃপক্ষের কোনো নিষেধই তারা শুনছেন না বরং নতুন উদ্দীপনায় তারা নিজেদের আবিস্কার করেছেন প্রেমিক ও প্রেমিকা হিসেবে।
বলতে গেলে যেখানে করোনা শনাক্ত হওয়া রোগীরা জীবন বিপন্ন হওয়ার আশংকায় প্রতিনিয়ত সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করছেন সেখানে তারা পেয়েছেন নতুন জীবন। ভালবাসার শক্তিতে তারা হয়তো নতুন স্বপ্ন দেখছেন।
Leave a reply