গেলো ডিসেম্বরে চীনের উহান থেকে এক ভাইরাস যে সাতসমুদ্র তেরো নদী পাড়ি দেবে সেটি কে ভেবেছিল? বাংলাদেশই বা বাদ পড়ে কী করে? দেশের বাইরে থেকে আসা প্রবাসীদেরকেই তাই বাহন হিসেবে বেছে নিলো অদৃশ্য এই ভাইরাস। চীন বা ইউরোপের সাথে বাংলাদেশের ভাইরাসে কোনো চরিত্রগত পরিবর্তন হয়েছে কিনা? সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে জিনোম সিকোয়েন্সিং।
সুখবর হলো, বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ মে) চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন এ তথ্য জানিয়েছে। তারাই সর্বপ্রথম এ জিনোম সিকোয়েন্স করেছে।
এর ফলে ভাইরাসটির গতি প্রকৃতি নির্ণয় করতে পারবেন গবেষকরা।
চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড. সমীর কুমার সাহা যমুনা নিউজকে জানান, জিনোম সিকোয়েন্স ভাইরাসটির গতি, প্রকৃতি ও ধরন সম্পর্কে আমাদের পরিষ্কার ধারণা দেবে। এর ফলে আমরা জানতে পারবো আমাদের এখানে ভাইরাসটি মোকাবেলায় কোন ধরনের ভ্যাকসিন বা ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে।
এর আগে, করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সের গুরুত্ব সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় করোনাভাইরাস রেসপন্স টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. শরীফ আখতারুজ্জামান বলেন, এখন পর্যন্ত মোটাদাগে নভেল করোনাভাইরাসের ৩টি ধরনের কথা জানা গেছে। বাংলাদেশে কোন ধরনটি প্রভাব বিস্তার করছে বা মিউটেশনের মাধ্যমে নতুন কোনো ধরন সৃষ্টি হয়েছে কিনা সেটি জানাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটা নিয়ে আমরা ব্যাকগ্রাউন্ডে কাজ করছি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিরিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মুশতাক ইবনে আয়ূব যমুনা নিউজকে বলেন, একটি ভাইরাস কতটুকু শক্তিশালী, তার সংক্রমণ ক্ষমতা কতটুকু জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে এ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে। পাশাপাশি, ভাইরাসটি কোনো ভৌগলিক পরিবেশে নতুন কোনো বৈশিষ্ট্য অর্জন করেছে কিনা সে সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যাবে এর মাধ্যমে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে গত ৮ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত হয়। করোনায় প্রথম মৃত্যুর খবর আসে ১৮ মার্চ। করোনা আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যানুযায়ী মঙ্গলবার (১২ মে) পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২ লাখ ৮৭ হাজার ৩৩২ জন। এছাড়া এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে ৪২ লাখেরও বেশি মানুষের শরীরে।
Leave a reply