ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণ কারাবন্দীদের মহামারি করোনা থেকে রক্ষায় কারা কর্তৃপক্ষ কি পদক্ষেপ নিয়েছেন তা জানতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ মে) সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির এ নোটিশ পাঠিয়েছেন। নোটিশে বিভিন্ন কারাগার ও সংশোধনাগারে কারাবন্দীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং মুক্তির বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষের প্রস্তুতি এবং পদক্ষেপ সম্পর্কে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জানতে চাওয়া হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী করোনা থেকে রক্ষায় সামাজিক দূরত্বকে প্রধান উপায় হিসাবে গণ্য করা হয়। এই বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বিশ্বের সকল দেশ, আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহ এই ভাইরাস প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য প্রতিনিয়ত নির্দেশনা জারি করছে।
গত ২৬ মার্চ থেকে বাংলাদেশ সাধারণ ছুটির আদলে মূলত লকডাউন পালন করছে। সকল পর্যায়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। কিন্তু করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা কারা বন্দীদের অবস্থা খুবই নাজুক। দেশের কারাগারগুলোতে ধারণ ক্ষমতার দিগুণেরও বেশি বন্দী রয়েছে।
নোটিশে আরও বলা হয়, সাম্প্রতিক রিপোর্ট অনুসারে দেশের ৬৮ টি কারাগারে ৪১ হাজার ২৪৪ জনের স্থান হলেও বর্তমানে সেখানে ৮৫ হাজার বন্দী রয়েছে। এই অবস্থায় কারাভ্যন্তরের বন্দীদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা বস্তুত অসম্ভব। এরইমধ্যে ২৩ জন কারারক্ষী এবং ২ জন বন্দীর শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গত ১২ মে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে একজন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেছে।
গবেষণায় প্রতীয়মান হয় যে, কারাগারের সংকীর্ণ জায়গা সংক্রামক ব্যাধির উর্বর ক্ষেত্র। অধিকন্তু কারাবন্দীদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে কোন পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ নেই। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা এবং আদেশ-নিষেধ অনুযায়ী তাদের চলতে হয়। এই প্রেক্ষাপটে কারাবন্দীদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কর্তৃপক্ষের উপর বর্তায়।
নোটিশে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র, ইরান, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিল, আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হাজার হাজার বন্দীদের মুক্তি দিয়েছে। বাংলাদেশ সরকার প্রায় ৩ হাজার বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে। এটি অবশ্য প্রশংসনীয় উদ্যোগ কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে এটি যথেষ্ট নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কারাবন্দী, কারারক্ষী এবং কারা চিকিৎসকদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন কারাগার ও সংশোধনাগারে কারাবন্দীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং মুক্তির বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষের প্রস্তুতি এবং পদক্ষেপ কি নেওয়া হয়েছে তা আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে। অন্যথায় হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে বলেও জানিয়েছেন রিটকারি আইনজীবী।
Leave a reply