শুরু থেকেই কোভিড নাইনটিনকে শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাস হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও কেবল ফুসফুস নয়, হার্ট, কিডনি বা অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গেও সংক্রমণ ঘটাতে পারে করোনা। নিউইয়র্কের সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্যসেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান নর্থওয়েল হেলথের এক জরিপে উঠে এসেছে এ তথ্য।
জরিপে দেখা যায় কোভিড নাইনটিন আক্রান্ত রোগীদের ৪০ শতাংশ ভোগে কিডনী সংক্রান্ত জটিলতায়। জটিল রোগীদের ৩৬ দশমিক ৬ শতাংশেরই কিডনি অকার্যকর হয়ে পড়ে। সরাসরি করোনার সংক্রমণে এ পরিস্থিতি হয় কি না সে বিষয়ে নিশ্চিত নন গবেষকরা।
তবে নিউইয়র্কের নর্থওয়েল হেলথের জরিপে দেখা যায়, কোভিড নাইনটিনে আক্রান্ত এক-তৃতীয়াংশ রোগীর ক্ষেত্রেই তৈরি হয়েছে মারাত্মক কিডনি জটিলতা। যাদের মধ্যে ডায়ালাইসিস করতে হয়েছে ১৫ শতাংশ রোগীর।
১ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৫ হাজার ৪৪৯ করোনা রোগীর ওপর জরিপ চালায় প্রতিষ্ঠানটি। এদের মধ্যে কিডনি জটিলতা তৈরি হয়েছে ৩৬.৬ শতাংশের। অবস্থা যতো গুরুতর হয়, জটিলতার সম্ভাবনাও ততো বাড়ে। ভেন্টিলেটরে নেয়া দরকার এমন ৯০ শতাংশ রোগীর বেলায় অকার্যকর হয়ে পড়ে কিডনি।
নর্থওয়েল’র নেফ্রোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কেনার জাভেরি বলেন, ‘বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কিডনি বিকল হওয়ার ঘটনা ঘটেছে, ভর্তি হওয়ার শুরুর দিকেই। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি পর্যবেক্ষণ। আরেকটা বিষয় হলো, কৃত্রিম ভেন্টিলেশনের ক্ষেত্রে এটি বেশি ঘটছে। শ্বাস-প্রশ্বাসে বেশি সমস্যা হয়ে যাদের ভেন্টিলেশনের প্রয়োজন হয়েছে, কিডনি বিকল হওয়ার বিষয়টিও বেশি ঘটেছে।’
জরিপ বলছে, জটিল রোগীদের ৩৭.৩ শতাংশ অকার্যকর কিডনি নিয়েই ভর্তি হয় হাসপাতালে। কারও ক্ষেত্রে বিকল হয়ে পড়ে চিকিৎসা শুরুর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে। দেহের দূষিত পদার্থ পরিশোধন করতে না পারার মতো সমস্যা তৈরি হয়। তবে, এখনই শতভাগ নিশ্চিত না যে, করোনার সরাসরি সংক্রমণে এটা হচ্ছে।
কেনার জাভেরি বলেন, আমরা মনে করি অনেক অসুস্থ হওয়া এবং আইসিইউ-তে ভেন্টিলেটরে রাখার সাথে এটা জড়িত। কিন্তু কিছু গবেষণা আসছে, যেখানে কিডনিতেও ভাইরাসের উপস্থিতি দেখা গেছে। যাতে মনে হয়, ভাইরাসের সরাসরি প্রভাব পড়েছে কিডনিতে। তবে, শতভাগ নিশ্চিত হওয়ার জন্য আরও তথ্য প্রয়োজন।
নর্থওয়েল হেলথ বলছে, বিভিন্ন হাসপাতালের প্রস্তুতিতে সহায়তা করবে তাদের তথ্য। দক্ষ লোক বিশেষ করে নেফ্রালজিস্ট কিংবা ডায়ালাইসিসের জন্য পর্যাপ্ত নার্স প্রস্তুত রাখার পরামর্শ তাদের।
Leave a reply