ঘূর্ণিঝড় আম্পান: কোন সংকেতের কী মানে?

|

প্রবল বেগে ধেয়ে আসছে সুপার ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’। বুধবার খুব ভোর থেকে সন্ধ্যার মধ্যে যে কোনো সময়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দিঘা থেকে বাংলাদেশের নোয়াখালীর হাতিয়া দ্বীপ পর্যন্ত উপকূলজুড়েই আছড়ে পড়তে পারে।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) জানিয়েছে, ‘আম্পান’ ঘণ্টায় গড়ে ২২ কিলোমিটার বেগে এগোচ্ছে উপকূলের দিকে। শক্তি সঞ্চয় করে ‘সুপার সাইক্লোনে’ রূপ নিয়েছে।

আবহাওয়া বিভাগ মোংলা ও পায়রাবন্দরে ৭ নম্বর এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার বন্দরে ৬ নম্বর বিপৎসংকেত জারি করেছে।

ঘূর্ণিঝড়ের কারণে আবহাওয়া অফিস থেকে সতর্কতা সংকেত জারি করা হলেও অনেকে জানেন না যে কোনো সতর্কসংকেতের কী মানে? এ বিষয়ে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

আসুন জেনে নিই কোন সংকেতের কী মানে?

১ থেকে ১১-এর সংক্ষিপ্ত অর্থ–

১নং দূরবর্তী সতর্কসংকেত

জাহাজ ছেড়ে যাওয়ার পর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্মুখীন হতে পারে। দূরবর্তী এলাকায় একটি ঝড়ো হাওয়ার অঞ্চল রয়েছে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬১ কিলোমিটার (কিমি.)। ফলে সামুদ্রিক ঝড় সৃষ্টি হবে।

২নং দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত

দূরে গভীর সাগরে একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিমি.। বন্দর এখনই ঝড়ে কবলিত হবে না, তবে বন্দর ত্যাগকারী জাহাজ পথে বিপদে পড়তে পারে।

৩নং স্থানীয় সতর্কসংকেত

বন্দর ও বন্দরে নোঙর করা জাহাজগুলোর দুর্যোগকবলিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বন্দরে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে এবং ঘূর্ণি বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০-৫০ কিমি. হতে পারে।

৪নং স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত

বন্দর ঘূর্ণিঝড়কবলিত। বাতাসের সম্ভাব্য গতিবেগ ঘণ্টায় ৫১-৬১ কিমি.। তবে ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেয়ার মতো তেমন বিপজ্জনক সময় এখনও আসেনি।

৫নং বিপদ সংকেত

বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিমি.। ঝড়টি বন্দরকে বাম দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

৬নং বিপদ সংকেত

বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিমি.। ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

৭নং বিপদ সংকেত

বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিমি.। ঝড়টি বন্দরের ওপর বা এর নিকট দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

৮নং মহাবিপদ সংকেত

বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতর ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিমি. বা এর বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে বাম দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।

সতর্কসংকেত জারি করা হলে সেখানকার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

৯নং মহাবিপদ সংকেত

বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিমি. বা এর বেশি হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।

১০নং মহাবিপদ সংকেত

বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতর এক সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়বে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিমি.বা তার বেশি হতে পারে।

১১নং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সংকেত

আবহাওয়ার বিপদ সংকেত প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং স্থানীয় আবহাওয়া কর্মকর্তা পরিস্থিতি দুর্যোগপূর্ণ বলে মনে করেন।

নদীবন্দর ও সমুদ্রবন্দরের জন্য সতর্কতাসংকেত আলাদা। তাই সতর্কতা সংকেত ভালো করে বুঝে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply