ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ আছড়ে পড়েছে সুন্দরবনসহ বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলে। এখন পর্যন্ত অন্তত ৮ জনের মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত হওয়া গেছে। নিহতদের মধ্যে পটুয়াখালীতে ২, ভোলায় ২ জন, যশোরে ২, সাতক্ষীরায় ১ জন ও পিরোজপুরে ১ জন। আবহাওয়া অফিস বলছে, শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়টির দিক কিছুটা পরিবর্তন হওয়ায় এর কেন্দ্র বাংলাদেশের উপকূলে প্রবেশ করেনি। এর বর্ধিত অংশের প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে অনেক ঘর-বাড়ি ও গাছপালা ভেঙে পড়েছে। সাগর ও উপকূলীয় জেলার নদীসমূহ খুব উত্তাল হয়ে আছে।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আমাদের প্রতিনিধিরা এ পর্যন্ত ৬ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। এছাড়া বেশ কয়েকজন নিখোঁজের খবর জানা গেছে।
পটুয়াখালী: ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে পটুয়াখালীতে এ পর্যন্ত দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে গলাচিপা উপজেলায় রাসেদ (৬) নামে এক শিশু ও কলাপাড়ায় শাহ আলম (৬০) নামে সিপিপি’র এক কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। গলাচিপা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম জানান, সন্ধ্যায় গলাচিপা উপজেলার পানপট্টি এলাকায় ঝড়ে গাছের ডাল ভেঙে পড়ে ছয় বছরের শিশু রাসেদ মারা গেছে।
আর পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সাধারণ মানুষকে সাইক্লোন শেল্টারে আসার প্রচারণা কাজ চালাতে গিয়ে নৌকা ডুবে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) টিম লিডার সৈয়দ শাহ আলম (৬০) নিখোঁজ হন। পরে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
ভোলা: ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় ভেঙে পড়া গাছের চাপায় সিদ্দিক ফকির (৭০) নামে এক বৃদ্ধ মারা গেছেন। গাছ চাপায়, জেলাটিতে বেশ কয়েকজন গুরুতর জখম হয়েছে।
এছাড়া, ভোলায় ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে রামদাসপুর চ্যানেলে ৩০ যাত্রীসহ একটি ট্রলার ডুবে একজন নিহত হয়েছেন। ট্রলার ডুবিতে নিহত ব্যক্তির নাম রফিকুল ইসলাম বলে জানা গেছে। তার বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার মনিরাম এলাকায়। ওই ব্যক্তিসহ ৩০ যাত্রী ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে আসেন। তারা লক্ষ্মীপুর জেলার মজুচৌধুরী ঘাট থেকে ট্রলার যোগে মেঘনা নদী পাড়ি দিয়ে ভোলায় আসে। ওই ট্রলার রাজাপুর সুলতানীঘাটের কাছে এলে ট্রলারটি ডুবে যায়। ওই সময় স্রোতের টানে ভেসে যান রফিকুল ইসলাম। পরে তার লাশ উদ্ধার করেন স্থানীয়রা।
সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কামালনগরে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে গাছের ডাল পড়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। নিহতের নাম করিমন। তার বয়স ৪০ বছর বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। আম্পানের প্রভাবে সারাদিনই ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে জেলাজুড়ে। উপকূলীয় জেলাটি জলোচ্ছ্বাসের হুমকিতে আছে।
পিরোজপুর: ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে নিজের ঘরের পাকা দেয়াল ভেঙে চাপা পড়ে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নিহত ব্যক্তির নাম মজিবুর রহমান (৫৫)। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মঠবাড়িয়া উপজেলার মঠবাড়িয়া কলেজের পেছনে এ ঘটনা ঘটে।
যশোর: চৌগাছার চাঁদপুর গ্রামে আমপানের ঝড়ে গাছ পড়ে মা ও মেয়ে নিহত হয়েছে। নিহতরা হলেন ওই গ্রামের মৃত ওয়াজেদ আলীর স্ত্রী খ্যান্ত বেগম (৪৫) ও তার মেয়ে রাবেয়া (১৩)। স্থানীয়রা জানান, ঝড়ের সময় তারা ঘরে ছিলেন। রাত ১০টার দিকে ঘরের পাশের একটি গাছ ভেঙ্গে পড়ে ঘরের উপর। এ সময় ও মেয়ে নিহত হয়। প্রচন্ড ঝড় ও বৃষ্টির কারণে তাদের উদ্ধার করতে দেরি হয়।
Leave a reply