চলতি বছরে চীনের প্রতিরক্ষা ব্যয়ের হার গত তিন দশকের মধ্যে সর্বনিম্নে। যদিও ২০১৯ সালের তুলনায় তা ছয় দশমিক ছয় শতাংশ বেশি। চীনের দৃষ্টিতে বাড়তি নিরাপত্তা ঝুঁকি ও ধীরগতির অর্থনীতির মধ্যেই এমন সিদ্ধান্ত এসেছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, শুক্রবার ১২ লাখ ছয় হাজার ৮০০ কোটি ইউয়ানের জাতীয় বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্বের দ্বিতীয় অর্থনীতির দেশটি সামরিক শক্তি বাড়াতে কতটা আগ্রাসী হয়ে ওঠে তা জানতে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয় এই বাজেট।
আগের তুলনায় এ বছর চীনের অর্থনীতি ছয় দশমিক আট শতাংশ সংকুচিত হয়ে পড়েছে। গত বছরের শেষ দিনে হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে প্রথম করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটে।
এরপর তা বৈশ্বিক মহামারীর রূপ নিয়ে ৫০ লাখের বেশি মানুষকে আক্রান্ত করেছে।
প্রথমবারের মতো চীন তার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা বাদ দিয়েছে। আর অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের প্রতিবেদনে সরকারের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে।
শুক্রবার দেশটির বার্ষিক পার্লামেন্টারি অধিবেশন শুরু হয়েছে। অঙ্গীকার করে লি বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে বড় সশস্ত্র বাহিনী খারাপ অবস্থায় পড়তে পারে না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের জাতীয় প্রতিরক্ষা ও সামরিক বাহিনীতে ব্যাপক সংস্কার আনা হবে। সরঞ্জাম ও উপকরণগত সহায়তা সক্ষমতা বাড়ানো হবে। প্রতিরক্ষা সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে উদ্ভাবন উন্নয়নে উৎসাহিত করা হবে।
অধিবেশনে তিন হাজারের মতো আইনপ্রণেতা অংশ নিয়েছেন। গ্রেট ওয়াল অব পিপলে দেয়া ভাষণে চীনা প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জাতীয় প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি ও রসদ ব্যবস্থা আরও উন্নত করবো। এভাবে সরকার ও সামরিক বাহিনীর মধ্যকার ঐক্য দৃঢ় করবো। জনগণ ও সেনাবাহিনীর ঐক্য পাথরের মতো শক্ত হবে।
করোনা প্রাদুর্ভাব সত্ত্বেও দক্ষিণ চীন সাগর ও চীনের দাবি করা তাইওয়ানে চীন ও মার্কিন সশস্ত্র বাহিনী সক্রিয় রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার ম্যাকোয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক বেইট গিল বলেন, প্রতিরক্ষা বাজেট বৃদ্ধির ক্ষেত্রে একটা ভারসাম্য রক্ষা করা হয়েছে। এতে কঠিন বাজেট পরিস্থিতিরই প্রতিফলন ঘটেছে।
তিনি বলেন, ছয় দশমিক ছয় শতাংশ বৃদ্ধি কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় না। আসছে বছরগুলোতে প্রত্যাশিত বৃদ্ধির চেয়ে তা বহুগুণ বেশি।
গিল বলেন, সেনা সংগ্রহ, প্রশিক্ষণ, উন্নত-শিক্ষা, প্রযুক্তিগতভাবে জানাশোনা ও জটিল উন্নত-প্রযুক্তি পরিচালনায় দক্ষ সেনা নিয়োগে চীনা সামরিক বাহিনীকে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছে।
Leave a reply