বরিশাল ব্যুরো:
উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় একটি মাদ্রাসার এক অফিস সহকারীকে মারধর ও গলায় জুতার মালা পরিয়ে তাকে হেনেস্তা করার অভিযোগ উঠেছে। আর এসব অভিযোগ উপজেলার দরিচর খাজুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও কয়েকজন মেম্বারের বিরুদ্ধে। গলায় জুতা পরানোর একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে বুধবার রাতে। এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে বিভিন্ন মহলে।
ভিডিওতে দেখা যায়, ‘দড়িচর খাজুরিয়া দাখিল মাদ্রাসার’ অফিস সহকারী শহিদুল ইসলাম আলাউদ্দিনের গলায় জুতার মালা পরিয়ে তাকে গালমন্দ করছেন দরিচর খাজুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা রাঢ়ী। পরে আলাউদ্দিনের মাথা থেকে টুপি খুলে নেয় ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার সত্তার সিকদার।
এ ব্যাপারে নির্যাতনের শিকার শহিদুল ইসলাম আলাউদ্দিন জানান, মাদ্রাসায় অফিস সহকারীর চাকরির পাশাপাশি স্থানীয় একটি মসজিদে ইমামতি করেন। তিনি জানান, উপবৃত্তির টাকা শিক্ষার্থীদের নিজ মোবাইল নম্বরে আসে। ২০১৯ সালে উপবৃত্তির তালিকা পাঠানোর সময় এক ছাত্রী মাদ্রাসায় না আসায় সেখানে নিজের একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে দেন তিনি। কিন্তু দীর্ঘ দিন নম্বরটি ব্যবহার না করায় এটি বন্ধ করে দেয় সংশ্লিষ্ট মোবাইল কোম্পানী। এরই মধ্যে ছাত্রীর এক বছরের উপ বৃত্তির ১৮শ টাকা ওই মোবাইল নম্বরে জমা হয়। কিছুদিন আগে মোবাইল নম্বরটি সচল করে উপবৃত্তির টাকা দেখতে পান তিনি। ওই টাকা ছাত্রীর পরিবারকে বুঝিয়ে দেয়ার আগেই গেল ৩০ মে তাকে মারধর করে সিম কার্ডটি নিয়ে যায় ছাত্রীর খালু সাবেক ইউপি মেম্বার সত্তার সিকদার। এসময় তার ছেলেকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ আলাউদ্দিনের। তিনি বলেন, ৩০ মে বিষয়টি মিমাংসা হয়ে গেলেও বুধবার দুপুরে তাকে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চেয়ারম্যান সহ কয়েকজন তার উপর নির্যাতন চালায়। সবশেষ তার গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয়া হয়।
দরিচর খাজুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তফা রাঢ়ী জানান, ‘আলাউদ্দিন হুজুর উপ বৃত্তির ৪৮শ’ টাকা আত্মসাত করেছে। এছাড়াও ইন্সুরেন্স করিয়ে দেয়ার কথা বলে মানুষের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা নিয়ে আত্মসাত করারও অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের বিষয়ে সালিশ বৈঠক হয় ইউনিয়ন পরিষদে। এসময় মেম্বার শফি দেওয়ান, ফিরোজসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে তাকে উপবৃত্তির টাকা ফেরত দিতে বলা হয়। না দিতে পারলে তাকে জুতার মালা পরানোর সিদ্ধান্ত হয়। এসময় স্বেচ্ছায় জুতার মালা পরতে রাজি হয় আলাউদ্দিন।’ তাকে মারধর করা হয়নি বলে দাবি ইউপি চেয়ারম্যানের।
এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান মেহেন্দিগঞ্জ থানার ওসি আবিদুর রহমান। তিনি জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে বিষয়টি তাদের নজরে এসেছে।
Leave a reply