পাবনা প্রতিনিধি:
পাবনার দিলালপুরে ভাড়া বাসায় একই পরিবারের তিনজন খুন হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেইসাথে হত্যকাণ্ডে জড়িত নিহত আব্দুল জব্বারের পালিত ছেলে ও স্থানীয় মসজিদের ইমাম তানভীর হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূলত অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কারের লোভে নি:সন্তান দম্পতি ও তাদের পালিত মেয়েকে নৃশংসভাবে হত্যা করে তানভীর। তানভীরের বাড়ি নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার হরিপুর গ্রামে।
আজ দুপুরে পাবনা পুলিশ লাইন মিলনায়তনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম।
তিনি জানান, অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার ও তার স্ত্রী ছুম্মা খাতুন ছিলেন নি:সন্তান। একদিন বয়সী শিশু সানজিদাকে পালক নিয়ে লালন-পালন করছিলেন। এর মধ্যে দেড় বছর আগে বাড়ির পাশে ফায়ার সার্ভিস মসজিদের ইমাম তানভীরের ব্যবহারে সন্তুষ্ট হয়ে তাকেও সন্তান হিসেবে আপন করে নেন। তানভীরও তাদের বাবা-মা হিসেবে ডাকতে থাকেন। ব্যাংক, পোস্ট অফিসে টাকা লেনদেনেও তানভীরকে সাথে নিয়ে যেতেন আব্দুল জব্বার। এখান থেকেই জব্বারের টাকা পয়সা ও স্বর্ণালঙ্কারের দিকে দৃষ্টি পড়ে তানভীরের। পরিকল্পনা করতে থাকে হত্যাকাণ্ডের।
গত ২৯ মে ছুটি নিয়ে গ্রামের বাড়ি নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার হরিপুর গ্রামে চলে যায় তানভীর। ছুটি শেষ হওয়ার আগেই ৩১ মে পাবনা ফিরে আসে সে। ওইদিন রাতে ব্যাংক কর্মকর্তা আব্দুল জব্বারের বাড়িতে অবস্থান নেয় তানভীর। রাত ২টার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় আব্দুল জব্বার, তার স্ত্রী ছুম্মা খাতুন ও মেয়ে সানজিদা (১২) কে কুপিয়ে ও কাঠের বাটাম দিয়ে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে সে। পরে নগদ দুই লাখ টাকা, এক লাখ ভারতীয় রুপি ও স্বর্ণের গহনা লুট করে পালিয়ে যায়। গত শুক্রবার দুপুরে ওই বাড়ি থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
ঘটনার রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক টিম। অবশেষে তথ্য প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে গত রাতে নওগাঁর নিজ বাড়ি থেকে তানভীরকে গ্রেফতার করে। নৃশংস হত্যাকাণ্ডে জড়িত তানভীরের শাস্তি নিশ্চিতে সব ধরনের আইনগত প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হবে বলে জানান পুলিশ সুপার।
Leave a reply