মহামারিতে প্রতিনিয়ত ক্ষয় হচ্ছে প্রাণ ও সম্পদ। অর্থনৈতিক ও জীবিকার সব খাতে হানা দিয়েছে করোনা। করোনা সংক্রমণের প্রথম দেড় মাসে পোশাক খাতের চেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কৃষিখাতে। এ খাতে ক্ষতি হয়েছে ৫৬ হাজার কোটি টাকা। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হলে বন্ধ হয়ে যায় গণপরিবহন চলাচল। অঘোষিত এই লকডাউনে ক্ষতির মুখে পড়ে কৃষিপণ্যের বিপণন। বিক্রি না হওয়ায় ক্ষেতে পড়ে থাকে সবজি, পুকুরে মাছ ও খামারে মুরগি ও দুধ। যেসব কৃষক কোনো রকমে বিক্রি করতে পেরেছেন তারাও পাননি ন্যায্য দাম।
এদিকে এই সময়ে বিজিএমইএর তথ্য অনুযায়ী পোশাক খাতে ক্ষতি ৩৮ হাজার কোটি। কৃষি ও কৃষককে বাঁচাতে লালফিতার দৌরাত্ম কমানো ও এনজিওদের মাধ্যমে তরল অর্থ সহায়তা বিতরণের সুপারিশ উঠে আসে ব্র্যাকের গবেষণায়।
করোনায় কৃষি খাতের ক্ষতি নিয়ে গবেষণা করতে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ৬৪ জেলার এক হাজার ৫৮১ কৃষক, উৎপাদক ও ব্যবসায়ীর ওপর দুটি সমীক্ষা চালায় তারা।
গবেষণায় উঠে এসেছে, মোট ৫৬ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে কৃষি খাতে। একই সময়ে তৈরি পোশাক খাতে ক্ষতি হয়েছে ৩৮ হাজার কোটি টাকা। জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান ১৪ দশমিক ২৩ ভাগ। মোট শ্রমশক্তির ৪০ ভাগ এখাতে জড়িত।
ব্র্যাকের গবেষণার তথ্য বলছে, করোনার প্রভাবে দেড় মাসে শস্য খাতে প্রায় ১৫ হাজার এবং মত্স্য খাতে ৩৯ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। এতে গড়ে প্রতিজন কৃষকের লোকসান হয়েছে প্রায় ২ লাখ ৭ হাজার টাকা।
৪ শতাংশ সুদে ১৯ হাজার কোটি টাকা কৃষকের জন্য বিশেষ ঋণ বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। কৃষকের জন্য সুবিধা নিশ্চিতে লালফিতার দৌরাত্ম, বিতরণে স্বচ্ছতার পরামর্শ উঠে আসে ব্র্যাকের গবেষণায়। কৃষিতে সরকারের উদ্যোগ সঠিকভাবে বাস্তবায়ন না হলে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকিতে পড়তে পারে বলেও শঙ্কা অর্থনীতিবিদদের।
টিবিজেড/
Leave a reply