ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় লোকমান নামের এক প্রবাসীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নে কালাছড়া থেকে হত্যার পর মাটি চাপা দেয়া লাশটি উদ্ধার করা হয়।
লোকমান মিয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার শ্রীঘর এলাকার নূরুল ইসলামের ছেলে ও ওমান প্রবাসী। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকায় উপজেলা সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের লেবদ আলীর ছেলে খোকন মিয়াকে (৩৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। খোকন মিয়া প্রাথমিক অবস্থায় পুলিশের কাছে দোষ স্বীকার করে নেয়।
রবিবার বিকেলে খোকন মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া চিফ জুডিসিয়াল আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। আদালত পরিচালনা করেন বিচারক জ্যাকী আল ফারাবি। রবিবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন সত্যতা নিশ্চিত করেন।
খোকন মিয়া পুলিশকে জানায়, তার স্ত্রী সৌদি আরবে থাকেন। সেখানে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিচয় হয় ওমান প্রবাসী লোকমান মিয়ার সাথে। দুইজনের মাঝে মোবাইলে যোগাযোগ ছিল। ওমান প্রবাসী লোকমান মিয়া দেশে এসেছেন জেনে খোকনের প্রবাসী স্ত্রী মোবাইলে লোকমান মিয়াকে তার ছোট বোনকে বিয়ের প্রস্তাব দেন এবং বিজয়নগরে এসে খোকন মিয়া সাথে যোগাযোগ করে তার বোনকে দেখে যেতে বলে।
ওমান প্রবাসী লোকমান মিয়া খোকন মিয়ার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করে ১০ জুন বিজয়নগর আসে। খোকন মিয়া স্ত্রীর কথা অনুযায়ী প্রবাসী লোকমান মিয়াকে তার শ্যালিকাকে দেখাতে উপজেলার কালাছড়াতে তার শ্বশুর বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার পর লোকমানের মোবাইলটি দেখতে খোকন হাতে নেয়। মোবাইল হাতে নেওয়ার পর খোকন মিয়া তার প্রবাসী স্ত্রীর আপত্তিকর কিছু ছবি লোকমান মিয়ার মোবাইলে দেখে। এই ছবি দেখে খোকন মিয়া তার শ্যালক শুক্কুর আলীকে জানায়।
এরপর খোকন মিয়া ও তার শ্যালক শুক্কুর আলী লোকমান মিয়াকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১০ জুন মধ্যরাতে দুইজন মিলে লোকমান মিয়াকে পিটিয়ে হত্যা করে। বিষয়টি খোকন মিয়া তার শ্বশুর আ. কাইয়ুমকে জানায়। পরে খোকন মিয়া, তার শশুর কাইয়ুম ও শ্যালক শুক্কুর আলী লোকমান মিয়াকে মেরে একটি জমির মাঝে পুতে ফেলে।
এই ব্যাপারে বিজয়নগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতিকুর রহমান জানান, লোকমান মিয়া নিখোঁজ থাকায় তার বাবা ১৪ জুন নাসিরনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। তদন্তে খোকন মিয়াকে সন্দেহভাজন হওয়ায় আটক করা হয়। পরে সে এই হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে সবকিছু পুলিশের কাছে স্বীকার করে।
শনিবার খোকন মিয়ার দেয়া তথ্যে লোকমান মিয়ার লাশ এদিন মধ্যরাতে উদ্ধার করা হয়। এরপর আদালত খোকন মিয়াকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন। তার শ্বশুর আ. কাইয়ুম ও শ্যালক শুক্কুর আলীকে আটকের অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে ওসি মো. আতিকুর রহমান।
Leave a reply