করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে অন্যতম হাতিয়ার হল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। কারণ, যার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যত বেশি, সে তত ভালো রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম হবে এবং সংক্রমণের ঝুঁকিও কমবে। প্রাপ্ত বয়স্কদের তুলনায় শিশুদের স্বাস্থ্যকর এবং ফিট থাকার জন্য একটি ভালো ডায়েটের প্রয়োজন। কারণ, এটি শিশুকে রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করবে। এমন অনেক খাবার রয়েছে, যেগুলি শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে খুবই কার্যকর। আসুন জেনে নেই বাচ্চাদের ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়াতে কোন কোন খাবারগুলো খাওয়াবেন।
১। মাতৃদুগ্ধ:
মাতৃদুগ্ধ একদম ছোট বাচ্চার ক্ষেত্রে তার প্রয়োজনীয় উপাদান হলো মাতৃদুগ্ধ। শিশুরা তাদের স্তন্যপান থেকেই প্রয়োজনীয় পুষ্টি গ্রহণ করে, তাই মাতৃদুগ্ধের কোন বিকল্প হয় না। এছাড়াও, বয়স অনুযায়ী অন্যান্য খাবার খেতে পারলে সেদ্ধ শাকসবজি, মাছ ইত্যাদি খাবার খাওয়াতে পারেন।
২। হলুদ:
হলুদে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা আপনার সন্তানের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে। ঘুমোতে যাওয়ার আগে বাচ্চাদের দুধের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে খাওয়ান। আবার সকালে হাফ চা চামচ মধুর সঙ্গে অল্প একটু কাঁচা হলুদের টুকরোও খাওয়াতে পারেন।
৩। দই:
দই খাওয়া বাচ্চাদের গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল অসুস্থতা প্রতিরোধে সহায়ক। দই প্রো-বায়োটিক পূর্ণ, যা দেহের খারাপ ব্যাকটেরিয়াগুলোকে ধ্বংস করতে সহায়তা করে এবং বাচ্চার ইমিউন সিস্টেমকে বাড়িয়ে তোলে। তাই রোজ খাবারের পর দই খাওয়ান।
৪। ডিম:
ডিমে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেলস্ এবং প্রোটিন, যা শরীরকে সুস্থ রাখতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। তাই বাচ্চাদের নিয়মিত ডিম খাওয়ান।
৫। সবুজ শাকসবজি:
অনেক বাচ্চাই শাকসবজি খেতে পছন্দ করে না। কিন্তু এই সময়ে তাদের সুস্থ রাখতে এবং ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে প্রত্যেক দিনের খাবারের তালিকায় রাখুন শাকসবজি। ফুলকপি, ব্রকলি, পালং শাক, মেথি শাক ইত্যাদি রাখলে আরও ভালো।
৬। বাদাম:
বাদাম যা বাচ্চার শরীরের অনেক চাহিদাকে পূরণ করতে সহায়ক। তাই প্রতিদিনের ডায়েটে রাখুন খেজুর, পেস্তা বাদাম, কাজু বাদাম, আখরোট ইত্যাদি। এগুলি শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। তবে যাদের বাদামে এল্যার্জি আছে তাদের খাওয়াবেন না।
৭। রসুন:
রসুনে অ্যান্টিভাইরাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং এটি শরীরের শ্বেত রক্ত কোষের উৎপাদন করতে সাহায্য করে। যা বাচ্চাদের অনাক্রম্যতা বাড়ানোর জন্য খুবই উপকারি। পাশাপাশি বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা প্রতিরোধেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৮। স্যালমন মাছ:
স্যালমন মাছ এটি এমন একটি মাছ যা শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। স্যালমন ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ হওয়ায়, এটি মস্তিষ্কের বিকাশে, দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।
৯। ঝিনুক:
ঝিনুক একটি উচ্চ পুষ্টিযুক্ত খাবার এবং এতে দস্তা থাকার ফলে এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। শিশুর ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে এটি হলো একটি সেরা সিফুড।
১০। ফল:
সুস্থ এবং ফিট থাকতে প্রতিদিন ফল খাওয়া প্রয়োজন। ফলে থাকা প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে এবং অন্যান্য চাহিদা পূরণ করতে সাহায্য করে। বিভিন্ন বেরি জাতীয় ফল, আপেল, কমলালেবু, তরমুজ, আঙুর, ডালিম, পীচ ইত্যাদি খাওয়ান।
Leave a reply