ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী লতিফুর রহমান মারা গেছেন। বুধবার কুমিল্লায় তার গ্রামের বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৭৫ বছর। গুলশান আজাদ মসজিদে বাদ এশা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর দাফন করা হয় বনানী কবরস্থানে।
মৃত্যুর সময়ে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে গেছেন।
লতিফুর রহমান দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা। বেশ কিছুদিন ধরেই শারীরিক নানা জটিলতায় ভুগছিলেন লতিফুর রহমান। নাতি ফারাজ আইয়াজ হোসেনের মৃত্যুদিবসেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুতে বিভিন্ন রাজনীতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন গভীর শোক প্রকাশ করেছে।
ভারতের জলপাইগুড়িতে জন্ম হলেও, লতিফুর রহমানকে বরাবরই নাড়ির টানে বেশি বেঁধেছে বাংলাদেশ। দুই বোনের পর ১৯৪৫ সালে দাদা খান বাহাদুরের বংশের আলো উজ্জ্বল করেন তিনি। কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে পাট চুকিয়ে নাম লেখান পারিবারিক পাটের ব্যবসায়।
মুক্তিযুদ্ধের পর সে কারখানা জাতীয়করণ হলে, দাদার কেনা বাগানের চা রফতানির উদ্যোগ নেন। সেটাই ছিলো টার্নিং পয়েন্ট। আর পেছনে তাকাতে হয়নি। ট্রান্সকম গ্রুপের ছাতার নিচে গড়ে তোলেন একের পর এক শিল্প। কিনে নেন বহুজাতিক ওষুধ, সিমেন্ট ও ফুড চেইনের স্বত্বও। দেশের জনপ্রিয় গণমাধ্যম দৈনিক প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতাও লতিফুর রহমান। ব্যবসায় অনবদ্য সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১২ সালে মর্যাদাপূর্ণ বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন তিনি।
জীবনের আরেক পরতে ট্র্যাজেডিও দেখতে হয়েছে তাকে। ছোট মেয়ে শাজনীন হত্যার শোক কাটিয়ে না উঠতেই, ২০১৬ সালে হোলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় হারান নাতি ফারাজ হোসেনকে। এরপর থেকেই নিভৃতে সময় কাটাতে চলে যেতেন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে, নিজের ছেলেবেলার জগতে।
লতিফুর রহমান বিশ্বাস করতেন রাজনৈতিক সংঘাত একদিন শেষ হবে। তরুণদের হাত ধরে উন্নতির শিখরে পৌঁছবে বাংলাদেশ।
Leave a reply