সবাইকে কাঁদিয়েই অবশেষে বিদায় নিলেন এন্ড্রু কিশোর। জনপ্রিয় এ কণ্ঠশিল্পীর বিদায়ের শোকে ম্রিয়মান ভক্তদের হৃদয়। তবে চমৎকার কিছু তথ্য রয়েছে এ গুণী শিল্পীর ব্যপারে। বিয়ের দিনেও নাকি তিনি ছুটে গিয়েছিলেন স্টুডিওতে।
এক সাক্ষাৎকারে স্মৃতিচারণ করে এন্ড্রু কিশোর নিজেই বলেছিলেন, ‘বিয়ের দিন যে গান করবো, এমন পরিকল্পনায় ছিলো না। ওইদিন সবকিছু দেখভাল করতে করতে রাত একটা বেজে গেলো। এর মধ্যে বিয়ের আসরেই সংগীত পরিচালক আলী হোসেন আমাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলে গেলেন, সকালে রেকর্ডিং মনে থাকে যেন। প্রথমে গুরুত্ব দিইনি। ভেবেছিলাম দুষ্টামি করছেন। কারণ, উনি জানতেন আমি কতটা গানপাগল। কিন্তু রাত ফুরিয়ে সকালেই সত্যি সত্যি তিনি ফোন করে ডন স্টুডিওতে চলে আসতে বললেন। তখনো আমি বিছানায়। হুড়মুড় করে উঠে গেলাম। চোখ ডলতে ডলতে ছুটলাম।’
এন্ড্রু কিশোর সম্পর্কে জানা যায়, শুধু গানের জন্যই বাসা থেকে অসময়ে বেরিয়ে যাওয়া বা না থাকার ঘটনা জীবনে অনেকবার হয়েছে। ছেলের প্রথম জন্মদিনে তিনি ছিলেন আমেরিকায়। দ্বিতীয় জন্মদিনের দিন স্টুডিওতে। তবে সংগঠন, রাজনীতি, সভা, সমিতি—এসবে খুব একটা দেখা যেতো না তাকে। এন্ড্রু কিশোর নিজেই বলেছেন, ‘আমি জীবনকে সব সময় কাছ থেকে দেখার চেষ্টা করি। জীবনের সুখ, শান্তি সূক্ষ্মভাবে দেখার চেষ্টা করি। খুব ক্ষুদ্র আকারে চিন্তা করি। বউ, বাচ্চা আর ঘরেই সীমাবদ্ধ আমার চিন্তা। আমাকে এ ব্যাপারে স্বার্থপর বলা যায়। আমি আমার মধ্যেই সুখী।’
গুণী এই শিল্পী প্রায় ১৫ হাজার গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। ৮ বার জিতে নিয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। কিন্তু এত ভালোবাসা, এত জনপ্রিয়তা ছেড়ে চরম সত্যিকে বরণ করলেন কিশোর। প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে চলে গেলেন তিনি। মানুষের মনে রেখে গেলেন সংগীতের স্পন্দন। শেষ সময়ে তার পাশে থাকতে ব্যাকুল দুই সন্তান অস্ট্রেলিয়া থেকে যখন দেশে ফেরার চেষ্টায় তখন তিনি চলে গেলেন না ফেরার দেশে। বাবার মৃত্যুর খবর তাদের জানানো হয়েছে।
মরণঘাতী ক্যান্সারের কাছে হার মেনে সোমবার সন্ধ্যায় জন্মস্থান রাজশাহীতে মারা যান তিনি। এর আগে, শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় আইসিইউতে রাখা হয় কিশোরকে। দেশে ফিরে, ক্যান্সার চিকিৎসক দুলাভাই ডা. প্যাট্রিক বিপুল বিশ্বাস ও বোন ডা. শিখা বিশ্বাসের ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
Leave a reply