গাইবান্ধা প্রতিনিধি:
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে মারধর মামলায় আসামিরা জামিনে এসে কেরােসিন দিয়ে বাদির গোয়াল ঘরে আগুন দিয়েছে। এতে ও ৬টি গরু মারা গেছে। এ ঘটনায় ছয়জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।
এরমধ্যে প্রধান অভিযুক্ত আসামি আবদুল খালেককে (৫৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী আতোয়ার বাদি হয়ে ৬ জন ও অজ্ঞাত আরও ২-৩ জনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় আবদুল খালেক তার ছেলে সফিকুলসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়। এর আগে, মঙ্গলবার গভীর রাতে সুন্দরগঞ্জের দহবন্দ ইউনিয়নের পশ্চিম ঝিনিয়া গ্রামের মেহের আলীর বাড়ির গোয়াল ঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী মেহের আলী ও তার ছেলে আতোয়ার জানান, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে হঠাৎ করে ঘোয়াল ঘরের গরু হাকডাক ও লাফালাফি করতে থাকে। এসময় ঘর থেকে বের হয়েই গোয়াল ঘরে আগুন দেখতে পাই। পরে পরিবার ও আশপাশের লোকজন ছুটে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। এলাকাবাসী দীর্ঘ চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও পুড়ে মারা যায় ৬টি গরু।
এছাড়া আগুনে মারাত্বক দ্বগ্ধ হয় আরও ৩টি গরু। কোরবানি ঈদের হাটে বিক্রির জন্য গরুগুলো পালন করা হয়। গোয়াল ঘরসহ ৬টি গরু পুড়ে ছাই হওয়ায় অন্তত চার লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ভুক্তভোগী পরিবারের। বর্তমানে আসামিদের ভয়ে পরিবারের লোকজন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও অভিযোগ তাদের।
মামলার বাদি আতোয়ারের অভিযোগ, প্রতিবেশি আবদুল খালেক ও তার ছেলে সফিকুল কিছুদিন আগে কথাকাটাকাটির জেরে বাবা মেহের আলী, ভাই ধলুসহ তাদের পরিবারের লোকজনকে বেদম মারধর করে আহত করেন। এ ঘটনায় আবদুল খালেক ও ছেলে সফিকুলসহ পরিবারের সদস্যর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করি।
সম্প্রতি আসামিরা আদালত থেকে জামিনে এসে ক্ষুদ্ধ হয়ে বাড়িঘর হামলা, অগ্নিসংযোগসহ তাদের বিভিন্ন হুমকি দিতে থাকে। আবদুল খালেক ও তার ছেলে সফিকুল অন্য আসামিদের নিয়ে পরিকল্পিতভাবে কেরোসিন ঢেলে গোয়াল ঘরে আগুন দেয়। আগুনে ৬টি গরু পুড়ে যাওয়ায় চার লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
ভুক্তভোগী মেহের আলীর অপর ছেলে ধলু মিয়া জানান, কোরবানির ঈদে বিক্রির জন্য বাড়িতে ৯টি গরু লালন-পালন করা হচ্ছে। কিন্তু প্রতিহিংসার আগুনে গরু পুড়ে ছাই করেছে প্রতিপক্ষরা। গরুগুলোই তাদের পরিবারের একমাত্র সম্বল ছিলো। মারা যাওয়া ৬টি গরুর মধ্যে ২টি গরুর পেটেই বাচ্চা ছিল। এমন ঘটনায় নিস্ব তার পরিবার। তাই জড়িতদের দৃষ্টান্ত শাস্তির দাবিও জানান তিনি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহিল জামান জানান, পূর্ব বিরোধ ও মারধরের মামলার জেরে আসামিরা জামিনে এসে গোয়াল ঘরে আগুন দেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও প্রাথমিক তদন্তে তাদের জড়িতদের বিষয়ে সত্যতা পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ছয়জন ও অজ্ঞাত আরও ২-৩ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী। এরমধ্যে প্রধান আসামি আবদুল খালেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।
Leave a reply