ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় মোট ৬টি পশুর হাট বসবে। এর মধ্যে ১টি স্থায়ী হাট এবং ৫টি অস্থায়ী হাট। স্থায়ী হাটটি গাবতলীতে বসবে।
অস্থায়ী হাটগুলো হচ্ছে: উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টরে বৃন্দাবন হতে উত্তর দিকে বিজিএমইএ ভবন পর্যন্ত খালি জায়গা; কাওলা শিয়াল ডাঙ্গা সংলগ্ন খালি জায়গা; ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্বাচল ব্রিজ সংলগ্ন মস্তুল ডুমনী বাজারমুখি রাস্তার উভয় পাশের খালি জায়গা; ভাটারা (সাইদ নগর) পশুর হাট; এবং উত্তরখান মৈনারটেক হাউজিং প্রকল্পের খালি জায়গা।
এছাড়া করোনাভাইরাসের গণসংক্রমণরোধে ই-কমার্স অব বাংলাদেশ (ইক্যাব) এর সহায়তায় অনলাইনে কোরবানির পশু কিনে অনলাইনের মাধ্যমে কোরবানি, মাংস প্রক্রিয়াকরণ এবং বাসায় পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
দরপত্র আহবানের পরও জনস্বার্থে ৬টি হাটের ইজারা বাতিল করা হয়। ইজারা বাতিলকৃত হাটগুলো হচ্ছে, বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং (আফতাব নগর); ভাষানটেক রাস্তার অব্যবহৃত ও পরিত্যক্ত অংশ ও পাশের খালি জায়গা; উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর ব্রিজের পশ্চিম অংশ এবং ২ নম্বর ব্রিজের পশ্চিম পাশের খালি জায়গা; ঢাকা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের খেলার মাঠ; মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের ইস্টার্ন হাউজিংয়ের খালি জায়গা; এবং মোহাম্মদপুর বুদ্ধিজীবী সড়ক সংলগ্ন বছিলা হাট।
হাট ইজারা গ্রহীতাগণকে নিম্নলিখিত শর্তসমূহ মেনে চলতে হবে:
গবাদি পশুর হাট ঈদের দিনসহ মোট পাঁচ দিন চালু থাকবে। নির্ধারিত তারিখের বেশী দিন হাট পরিচালনা করা যাবে না। কোরবানির পশুর হাটের নির্ধারিত সীমানা বহাল থাকবে। হাটের সীমানার বাইরে কোনো হাট বসানো যাবে না। ইজারা গ্রহীতা নিজ ব্যবস্থাপনায় হাটের চৌহদ্দি সংরক্ষণপূর্বক চৌহদ্দির বাইরে যাতে পশুর হাট প্রসারিত না হয় তা নিশ্চিত করবে। পশুর বিক্রয় মূল্যের উপর সরকার অনুমোদিত শতকরা ৫ টাকা হারে হাসিল আদায় করতে হবে; সরকারি হারের অতিরিক্ত হাসিল আদায় করা যাবে না। ইজারা গ্রহীতা নিজ খরচে বাজারে দৃশ্যমান একাধিক স্থানে সর্বসাধারণের অবগতির জন্য টোল চার্ট প্রদর্শনের ব্যবস্থা করবেন। হাট হস্তান্তর করার পূর্বে কোনো টোল আদায় করা যাবে না। যথাযথ কর্তৃপক্ষ যে কোনো সময় ইজারা বাতিল বলে ঘোষণা করলে ইজারা গ্রহীতা তা মেনে নিতে বাধ্য থাকবে এবং কোনো প্রকার ওজর/আপত্তি করতে পারবে না।
এছাড়া হাটে পশু বেঁধে রাখার জন্য বা অন্য কোনো কাজে রাস্তার ইলেকট্রিক পিলার ব্যবহার করা যাবে না। হাটের যে কোনো দুর্ঘটনার জন্য ইজারা গ্রহীতা নিজেই দায়ী থাকবে। ইজারা গ্রহীতা নিজ দায়িত্বে বৈদ্যুতিক লাইন সংযোগ করবে এবং সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করবে। এ বিষয়ে ইজারা গ্রহীতা ঢাকা বিদ্যুৎ সরবরাহ কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করবে। হাটে জেনারেটরের ব্যবস্থা করতে হবে। বৈধ ও লাইসেন্সপ্রাপ্ত লোক দ্বারা বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ করতে হবে। ইজারা গ্রহীতা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের দফতরে যোগাযোগ করে হাট চলাকালীন সময়ে হাট এলাকায় নিজ খরচে পুলিশ/আনসার মোতায়েনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
তাছাড়া, হাটের নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব কর্মী নিযুক্ত করবে। হাটের মধ্যে যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা ফেলে রাখা যাবে না। একটি নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা আবর্জনা রাখতে হবে। রাস্তার ও অন্যান্য অবকাঠামোর ক্ষতি করলে জামানত বাজেয়াপ্তকরণসহ আইনানুগ ক্ষতিপূরণ ধার্য করা হবে এবং ইজারা গ্রহীতা তা পরিশোধ করতে বাধ্য থাকবে।
ইজারা গ্রহীতা অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রের ব্যবস্থা রাখবেন। ইজারা গ্রহীতা জোরপূর্বক কোনো পশুকে হাটে প্রবেশ করানোর চেষ্টা করতে পারবে না এবং হাটের আশেপাশের সড়কপথ বা জলপথ দিয়ে গমনকারী কোনো পশুর উপর জোর পূর্বক কোনো হাসিল আদায় করতে পারবে না। বর্ণিত হাটের সুবিধাজনক স্থানে ডিএনসিসির ভিজিলেন্স টিমের জন্য একটি এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার সদস্যগণের জন্য একটিসহ মোট ২টি অস্থায়ী শেড নির্মাণ করতে হবে।
রাস্তায় যান ও জন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে এমন রাস্তার পার্শ্বে/রাস্তার এমন কোনো জায়গায় গবাদি পশুর ট্রাক লোড-আনলোড করা যাবে না। হাটের মধ্যে পার্কিংয়ের স্থান নির্ধারণপূর্বক পশু নামানোর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। ইজারা গ্রহীতাকে নিজ ব্যবস্থাপনায় হাটের বিভিন্ন স্থানে পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে। পশুর হাটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য হাটের সুবিধাজনক স্থানে একটি ওয়াচ টাওয়ার বসানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
ইজারা গ্রহীতাকে হাটে পর্যাপ্ত সংখ্যক অস্থায়ী টয়লেট স্থাপন করতে হবে। অস্থায়ী টয়লেটের স্থানে হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক সাবান রাখতে হবে। হাট শেষ হওয়ার সাথে সাথে ইজারাদারের নিজ দায়িত্বে হাটের বাঁশ-খুটি অপসারণ করতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে অপসারণ খরচ তার জামানত হতে কর্তন করা হবে।
করোনা সংক্রমণ রোধে ইজারা গ্রহীতাকে ইজারা প্রদত্ত অস্থায়ী পশুর হাটে বাধ্যতামূলকভাবে নিম্নলিখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে:
হাটের প্রবেশ পথে টিভি স্ক্রিনযুক্ত থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে প্রবেশকারীর শরীরের তাপমাত্রা নির্ণয় করতে হবে। গায়ে জ্বর থাকলে কাউকে হাটে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না। হাটে প্রত্যেক প্রবেশকারীকে হ্যান্ড গ্লাভস, মাস্ক, হেড ক্যাপ ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিয়ে হাটে প্রবেশ করতে হবে।
হ্যান্ড-স্যানিটাইজার, হ্যান্ডগ্লাভস, মাস্ক ও হেড কভার ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে এবং এ কাজ তদারকির জন্য মনিটরিং টিম রাখতে হবে। করোনা নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশে স্বাস্থ্য অধিদফতর প্রণীত স্বাস্থ্যবিধি সম্বলিত ব্যানার, পোস্টার টাঙ্গানোসহ এ বিষয়ে মাইকে ধারাবাহিকভাবে প্রচার করতে হবে।
জীবাণুনাশক দিয়ে হাটের সর্বত্র ও আশেপাশের সংশ্লিষ্ট জায়গা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ক্রেতা, বিক্রেতা ও ইজারাদারের নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট সকলকে মাস্ক, গ্লাভস, হেড কভার পড়ে হাটে আসতে হবে। হাটে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সাবান, পানির ড্রাম ও বেসিন রাখতে হবে। (বেসিন স্থাপনের ডিজাইন পূর্বেই ডিএনসিসি বরাবর জমা দিয়ে তা অনুমোদন করিয়ে নিতে হবে)। হাটে প্রবেশ এবং বাহিরের জন্য পৃথক পৃথক গেইট করতে হবে।
ইউএইস/
Leave a reply