সারওয়ার্দী সেনাবাহিনী নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন: আইএসপিআর; অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে ‘অবাঞ্ছিত’ হয়েছিলেন

সাবেক সেনা কর্মকর্তা অবসরপ্রাপ্ত লে. জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী সেনাবাহিনী সম্পর্কে মিথ্যাচার করেছেন বলে বিবৃতি দিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। বিতর্কিত ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য এই সেনা কর্মকর্তাকে ২০১৯ সালে সেনানিবাস ও এর আওতাভুক্ত এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয় বলে জানিয়েছে আইএসপিআর।

রোববার আইএসপিআর’র সহকারি পরিচালক রাশেদুল আলম খান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি বিএ-২০০৪ লে. জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী, বীর বিক্রম, এনডিসি, পিএসসি, PNG (অবসরপ্রাপ্ত) বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে সেনানিবাসে প্রবেশ এবং সেনাবাহিনী সম্পর্কে মিথ্যাচার করেন যা কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। উল্লেখ্য, তিনি লে. জেনারেল পদে পদোন্নতি পাওয়ার পর এনডিসির কমান্ড্যান্ট থাকাবস্থায় একাধিক নারীর সাথে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তিনি এনডিসিতে পরিচালিত বিভিন্ন কোর্সের সাথে বিদেশে ভ্রমণকালেও অনেক মেয়েকে নিয়ে চলাফেরা করেন এবং বিভিন্ন মাধ্যমে তার এই অশোভনীয় আচরণ এবং মেলামেশার ছবি কর্তৃপক্ষের গোচরীভূত হলে কর্তৃপক্ষ বিব্রত হয় এবং তাকে বিভিন্নভাবে উপদেশ দেয়া হয়। তিনি এলপিআর-এ থাকাকালীন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে ১৬ আগস্ট ২০১৮ তারিখে প্রথম স্ত্রীকে তালাক প্রদান করেন এবং সেনা আইন বর্হিভূতভাবে মেসকিট (সামরিক পোষাক) পরে ২১ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিত দ্বিতীয় স্ত্রীকে বিবাহ করেন। কিন্তু তিনি বিবাহের পূর্বে সেই মিডিয়া ব্যক্তিত্বকে (তার দ্বিতীয় স্ত্রী) নিয়ে ০৩ নভেম্বর ২০১৮ থেকে একই বাসায় অনৈতিকভাবে অবস্থান করেন। এমনকি তিনি বিবাহের পূর্বে সেই মিডিয়া ব্যক্তিত্বকে সাথে নিয়ে পহেলা বৈশাখ উদযাপন, সাজেক রিসোর্ট, খাগড়াছড়ি’তে অবকাশ যাপন, বিভিন্ন সময় ভারত, থাইল্যান্ড, আইসল্যান্ড, নরওয়ে ও সুইজারল্যান্ডে ভ্রমণ ও অবস্থান করেন, যার সচিত্র আলামত সামরিক ও অসামরিক পরিমণ্ডলে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়। এছাড়াও তিনি যাকে বিয়ে করেন তিনি একজন বিতর্কিত নারী হিসেবে পরিচিত।

লে. জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী (অবসরপ্রাপ্ত) এর এ ধরনের আচরণ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের জন্য অস্বস্তিকর ও বিব্রতকর বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

আইএসপিআর’র বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়- এ ধরনের ঘটনা সেনাবাহিনীতে কর্মরত অফিসার এবং অন্যান্য পদবীর মধ্যে নেতিবাচক উদাহরণ হিসেবে কাজ করে ও বিরুপ প্রভাব ফেলে। সামগ্রিক বিবেচনায়, গত ১০ এপ্রিল ২০১৯ তারিখ উক্ত অফিসার’কে সেনানিবাস ও সেনানিবাস আওতাভূক্ত এলাকায় অবাঞ্চিত (Persona non grata) ঘোষণা করা হয়। উল্লেখ্য সেনা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক “অবাঞ্চিত ব্যক্তি’র জন্য সেনানিবাস ও সেনানিবাসের আওতাভূক্ত সকল স্থাপনা এবং সেনানিবাসের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা যেমনঃ সিএমএইচ এ চিকিৎসা সেবা, অফিসার্স ক্লাব, সিএসডি শপ ইত্যাদি’তে প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ।