প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলা চিঠি লিখেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। সোমবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর তেজগাঁও কার্যালয়ে চিঠিটি পৌঁছে দেয়া হয়েছে।
খোলা চিঠিতে এই মুক্তিযোদ্ধা দেশের চলমান পরিস্থিতি, সংকট নিয়ে লিখেছেন। চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ঈদুল আজহার দিন গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বাসভবনে তাকে দেখতে যেতে বলেছেন। এমনটা করলে দেশের জনগণ খুশি হবে বলেও জানিয়েছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
চিঠির শুরুতে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী লিখেছেন, প্রিয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে একজন নাগরিকের খোলা চিঠি।
অতীতে আপনার সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে এই খোলা চিঠি লিখছি। আশা করি, প্রধানমন্ত্রীর দফতরের কেউ না কেউ আমার এই খোলা চিঠিটি আপনার নজরে আনবেন এবং আমি একটি প্রাপ্তি স্বীকারপত্র পাব। প্রিয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এটাই একজন নাগরিকের আকাঙ্ক্ষা।
নিচে চিঠিটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
মাননীয়া,
শেখ হাসিনা ওয়াজেদ।
প্রধানমন্ত্রী গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার,
প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় তেজগাঁও, ঢাকা।
বিষয়: প্রিয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে একজন নাগরিকের খোলা চিঠি।
অতীতে আপনার সাথে সাক্ষাতের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে এই খোলা চিঠি লিখছি। আশা করি, প্রধানমন্ত্রীর (PMO) দফতরের কেউ না কেউ আমার এই খোলা চিঠিটি আপনার নজরে আনবেন এবং আমি একটি প্রাপ্তি স্বীকার পত্র পাব। প্রিয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এটাই একজন নাগরিকের আকাঙ্ক্ষা।
পৃথিবীর কোথাও যে নিয়ম নেই রােগীর হাসপাতালে ভর্তির জন্য কোনো দেশে তাদের প্রধানমন্ত্রী, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা স্বাস্থ্য অধিদফতরের অনুমোদন লাগে না। কোভিড-১৯ আক্রান্তই হােক অথবা কোভিড মুক্ত অন্য কোনো রােগাক্রান্ত রােগীর হাসপাতালে ভর্তির সিদ্ধান্ত দেন উক্ত হাসপাতালের পরিচালক। কার্যত: ডিউটিরত চিকিৎসক, নার্স বা ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার। কিন্তু বাংলাদেশে কোভিড-১৯ রােগী হাসপাতালে ভর্তি হতে পারবে কিনা তার সিদ্ধান্ত দেন স্বাস্থ্য অধিদফতর, রােগী নিজে বা চিকিৎসক নন। কেন্দ্রীকতার এরূপ নিদর্শন পৃথিবীর অন্য কোথাও নেই। অপূর্ব সিদ্ধান্ত। মারহাবা। কেন্দ্রীকতা দুর্নীতির সহজ বাহন।
* হাসপাতাল অনুমােদিত না হবার কারণ সমূহ:
বাংলাদেশের অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্য অধিদফতরের অনুমােদন নেই, এমনকি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের, গণস্বাস্থ্য ডায়ালাইসিস সেন্টারেরও। আলাদা আলাদা অনুমােদন মানে আলাদা তদবির ব্যয়, আলাদা দরাদরি। অবশ্য মধ্যে মধ্যে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের দক্ষতা প্রদর্শন মিডিয়ায় আলােড়ন আনন্দ সৃষ্টি করে বটে। হাসপাতাল, ল্যাবরেটরি, রােগ নির্ণয় কেন্দ্র অনুমােদনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এমন নিয়মাবলী করেছেন যা পূরণ সম্ভব প্রায় অসম্ভব। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হির করে দেন কয়টি পায়খানা, প্রস্রাব খানা থাকবে, কয়জন ডিপ্লোমা পাশ নার্স থাকতে হবে।
* চাঁদাবাজির সরকারি নাম লাইসেন্স ফি:
প্রত্যেক হাসপাতালের সাথে আলাদা আলাদা ল্যাবরেটরি, আলাদা রােগ নির্ণায়ক (Xray,USG) বিভাগ, দন্ত বিভাগ, আলাদা রক্ত পরিসঞ্চালন (Blood Transfusion) বিভাগের লাইসেন্স নিতে হয়, যার বর্ধিত হার নিম্নরূপ। হাসপাতাল বিভাগ পর্বে প্রচলিত। বর্ধিত লাইসেন্স ফি ২০১৮ সন। কেবল লাইসেন্স ফি নির্ধারিত ফি থেকে প্রতিবছর জমা দেয়া যাবে না, পরিবেশ অধিদফতররা ও অগ্নি নির্বাপক বিভাগে অনেক টাকা খরচ করে তাদের হাসপাতাল ৫,০০০,০০ ২০০,০০০.০০ ৪০ গুণ বেশি। নিয়ম মেনে উভয় বিভাগের অনুমােদন পত্র সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য অধিদফতরে জমা দিতে হবে।
Online দন্ত বিভাগ। ১,০০,০০০ | ৩০,০০০,০০ | ৩০ গুণ বৃদ্ধি। এ সামান্য হের থাকলে আবেদন পত্র অগ্রসর হবে ল্যাবরেটরি না। অধিদফতরে ব্যবস্থা নেয়া থাকলে এবং ১,০০০.০০ | ৫০,০০০.০০
| ৫০ গুণ বৃদ্ধি। অনুমােদন না থাকলেও কেউ বিরক্ত করবে না। রোগ নির্ণায়ক বিভাগ |১,০০০.০০ ) | ৫০,০০০,০০। তবে দালালের মাধ্যমে যােগাযােগ সঞ্চল রাখতে ৫০ গুণ বৃদ্ধি। | হবে। মাসিকের নিয়মটা মানতে হবে, নিয়মিত রক্তে পরিসঞ্চালন বিভাগ |১.০০০.০০ মাসােয়ারা জমা দিতে হবে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের ৫,০০০.০০ ৫০ গুণ বৃদ্ধি | নির্ধারিত ব্যক্তির নিকট পৌঁছাতে হবে। দুর্নীতির নিয়মের সিঁড়িটা মেপে চলতে হবে। ভবিষ্যতে হয়তাে বা হাসপাতালের বিভাগের সংখ্যা আরও বাড়বে, যথা- ১) বায়ােকেমিস্ট্রি ২) সেরােলজি ৩) ক্লিনিক্যাল প্যাথলজি ৪) মাইক্রোবায়ােলজি ৫) ইমিউনােলজি ৬) হিস্টোপ্যাথলজি এবং আরও কত কি!!
কেবল হাসপাতালের অনুমােদন থাকলে চলবে না, হাসপাতালের প্রত্যেক বিভাগের জন্য আলাদা আলাদা অনুমােদন থাকতে হবে। অনুগ্রহ করে সরকারি চাঁদা কত বেড়েছে তা লক্ষ্য করুন। হয়রানী ও দুর্নীতি একত্রে চলাফেরা করে। একটা উদাহরণ দেই।
রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগের (Blood Transfusion Department) জন্য অনুমােদন চাইতে হলে রক্ত পরিসঞ্চালন (Blood Transfusion) বিভাগ। পরিচালনার জন্য রক্ত পরিসঞ্চালন সংক্রান্ত দুই বৎসর মেয়াদী একটা ডিপ্লোমাধারী চিকিৎসক থাকতে হবে। বাংলাদেশে ২০০০ এর বেশি রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্র আছে। উক্ত বিষয়ে দুই বৎসর মেয়াদী ডিপ্লোমা প্রাপ্ত চিকিৎসক আছেন ৮০ এর অধিক। এ বিভাগে উচ্চ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত অন্ততপক্ষে ১০ জন চিকিত্সক অবসর জীবন যাপন করছেন। ৬০ বত্সর অধিক বয়সী চিকিৎসকদের চাকরি করার বিধান নেই। চিকিত্সকগণরা তাে বিচারপতি বা সিনিয়র সচিব নন।
রক্ত পরিসঞ্চালন (Blood Transfusion) বিভাগে ডিপ্লোমা MBBS চিকিত্সকদের জন্য ব্যবসায়িক দিক থেকে আকর্ষণীয় নয় বলে, তরুণ চিকিৎসকরা দুই বত্সর ব্যয় করে এই উচ্চ বিদ্যা অর্জনে আগ্রহী নন। রক্ত পরিসঞ্চালনে তিন মাসের প্রশিক্ষণ অধ্যয়নই যথেষ্ট।
বিগত ২০ বত্সর যাবত আমি বলে আসছি। MBBS চিকিত্সকদের জন্য তিন মাস মেয়াদী রক্ত পরিসঞ্চালনে সার্টিফিকেট কোর্স এবং ৬ (ছয় মাস) মেয়াদী ডিপ্লোমা কোর্স প্রবর্তন করুন। তিন মাসের অতিরিক্ত এই বিভাগে শিক্ষা গ্রহণ বা অধ্যয়নে ব্যয় সময়ের অপচয় মাত্র। সরকার বিষয়টি গ্রহণ করেননি। সরকারে বিষয়টি অনুধাবনের কর্মকর্তা নেই। আয়ের সম্ভাবনাও কম। ফলে চোখ বন্ধ করে দুর্নীতি করা সহজ হয়েছে। অদ্যাপি বাংলাদেশে একটি রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্র বন্ধ হয়নি, তবে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালকে সতর্ক পত্রের সংখ্যা বেড়েছে। সরকারের চাঁদাবাজি তথা লাইসেন্স ফি বাবদ সরকারের আয় বাড়বে, পকেট কাটা যাবে জনগণের, তাদের রক্ষার কিছু থাকবে না। থানার বিরুদ্ধে অভিযােগ করলে বিপদ আরও বাড়ে।
ল্যাবরেটরি ও রােগ নির্ণায়ক সেন্টার সমেত হাসপাতাল রেজিস্ট্রেশন ফি বত্সরে একলাখ টাকার বেশি হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়। মিউনিসিপ্যাল হােল্ডিং ট্যাক্স ও আর এক ধরনের চাঁদাবাজি। হাসপাতাল অনুমােদনের নিয়মাবলী সহজ হওয়া প্রয়ােজন। স্বাস্থ্য অধিদফতর কেবল নিশ্চিত করবেন প্রত্যেক হাসপাতালে ও ক্লিনিকে চিকিৎসার গুনগত মান অর্থাৎ ন্যূনতম ইমার্জেন্সি চিকিত্সকের উপস্থিতি এবং চিকিৎসকদের নিয়মিত ব্যবহারের জন্য কয়েকটি অতি প্রয়ােজনীয় সচল মেডিকেল যন্ত্রপাতির নিশ্চয়তা যেমন ফ্লোমিটার (Flow Meter) সমেত একাধিক অক্সিজেন ০২ সিলিন্ডার , রক্তে অক্সিজেন মিশ্রণ নির্ধারক পালস অক্সিমিটার (Pulse Oxymeter), এ্যাম্বু (AMBU) ব্যাগ, নেবুলাইজার (Nebulizer), রক্তচাপ মাপার যন্ত্র (BP Set) ও বিভিন্ন পরীক্ষার নির্ণায়ক ডায়াগনস্টিক (Diagnostic Set), ওজন নির্ণায়ক (Weight Machine) একাধিক মেশিন, একটি ইসিজি (ECG) ও একটি ডিফিলেটর (Defibrillator) মেশিন, মৌলিক রােগ নির্ণায়ক এক্সরে, আলট্রাসনােগ্রাফি, ক্লিনিক্যাল প্যাথলজি ল্যাবরেটরি এবং রক্ত পরিসঞ্চালন সুবিধা।
সরকারি অযৌক্তিক অপ্রয়ােজনীয় নিয়মাবলীর কারণে রিজেন্ট সাহেদ তৈরি হয়েছে ঢাকায় এবং প্রত্যেক শহরে ও উপজেলায় বহু রিজেন্ট সাহেদ, সাহাবউদ্দিন ও ডা. সাবরীনা তৈরি হচ্ছে এবং আরও হবে। গত বছর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ডিপ্লোমা নার্সের নিয়োগ বিজ্ঞাপনে ব্যয় করেছে ৫ লাখ টাকার অধিক। সরকারি হাসপাতাল নীতিমালা পুরণের জন্য আমাদের প্রয়ােজন ৫০ জন নার্স, ১০ জন নার্সও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে চাকরির জন্য আবেদন করেনি। সরকারি হাসপাতালে সেবা না দিয়ে ধবধবে ইস্তি করা সাদা শাড়ি পড়ে ঘুরে বেড়ানাে যায়, সরকারি চাকরিতে সেবা না দিয়ে বেতন পাবার সুবিধে আছে।
আপনি বলে দিন, আমাদের কি করনীয়? RAB দ্বারা ধৃত হবার পূর্বে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল কি বন্ধ করে দেব? বিগত কয়েক বছরে কয়েকটি সৌজন্যমূলক সতর্কবাণী আমাদেরকে দেয়া হয়েছে। অনুগ্রহ করে এমন নিয়ম করুন, যা সহজে পালন করে জনসাধারণের কল্যাণ করা যায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের দালালদের দ্বারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বা মালিকগণ হয়রানীর সম্মুখীন হবেন না, নিয়ম অনুসরণ করতে না পারার অজুহাতে।
* প্লাজমা জীবন রক্ষাকারী, কিন্তু তাতে কার কি আসে যায়:
করােনা মুক্ত রােগীর রক্ত থেকে আলাদাভাবে প্লাজমা (Plasma) সংগ্রহ করে, করােনা রােগীকে প্লাজমা ট্রান্সফিউজ করালে করােনা রােগীতে প্রায় নতুন জীবন সঞ্চার হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে তিনবার প্লাজমা নিয়ে আমার করােনা থেকে বেঁচে থাকার সংগ্রাম সহজ হয়েছে। কিন্তু যে সাধারণ গরীব রােগীর জীবন রক্ষার্থে প্লাজমার প্রয়ােজন সবচেয়ে বেশি সে দরিদ্র রােগীই প্লাজমা সুবিধা থেকে বেশি বঞ্চিত। কারণ অধিকাংশ ল্যাবরেটরির প্লাজমা তৈরির অনুমােদন নেই। এই নিয়মের অজুহাতে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে প্লাজমা দেবার জন্য প্রতিবার ১৫,০০০ থেকে ৩০,০০০ (ত্রিশ হাজার) টাকা চার্জ ধরা হয় এবং অধিকাংশ সরকারি হাসপাতাল প্লাজমা প্রাপ্তির সুবিধে নেই। গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল ৫০০০ (পাঁচ হাজার) টাকায় রােগীকে আন্তর্জাতিক মানের প্লাজমা সরবরাহ করতে চায়, কিন্তু গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অনুমােদন নেই, প্লাজমা উৎপাদনের জন্য রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগে নেই উচ্চ ডিগ্রিধারী প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসক, আছে একাধিক রক্ত পরিসঞ্চালনে নিবেদিত ডিগ্রি ডিপ্লোমা বিহীন এমবিবিএস পাশ চিকিৎসক ও টেকনিশিয়ান।
নিয়মের বেড়াজালে পড়ে অদূর ভবিষ্যতে ভারত, ভিয়েতনাম ও চীন থেকে প্লাজমা আমদানি করা হবে ওষুধ হিসাবে, তবে প্লাজমা উৎপাদন করা যাবে না। গণস্বাস্থ্য উদ্ভাবিত করােনায় এ্যান্টিবডি নিৰ্ণায়ক কিটের Rapid Dot Blot এর অনুমােদন অদ্যাপি পাওয়া যায়নি, নিয়মের বেড়াজালে পড়ে।
* সাধারণ বিষয়কে কঠিন অংকে পরিণত করা কি যুক্তি সংগত?
২১ জুলাই ২০২০ ইং তারিখে দৈনিক প্রথম আলাের তথ্যে প্রকাশ পেয়েছে যে, নিজ বাড়িতে আলাদা রুমে রেখে অধিকাংশ করােনা রােগী চিকিৎসা করে সুস্থ করা যায়। বসুন্ধরার কোভিড ২০০০ শয্যার আইসােলেশন হাসপাতালে রােগী ভর্তি আছে মাত্র ১৭ জন (১% অনধিক), চট্টগ্রাম রেলওয়ে ও গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রােগী ছিল মাত্র একজন করে। রােগীর জন্য দুর্ভিক্ষ ও রােগীর জন্য হাহাকার পূর্বে কখনাে বাংলাদেশে দেখা যায়নি।
অপরপক্ষে বেসরকারি হাসপাতালে প্রতিদিন প্রতারিত হবার সংবাদ মিডিয়ায় প্রকাশিত হচ্ছে। ধানমন্ডির আনােয়ার খান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দরিদ্র রােগীকে ৭ দিনের জন্য করােনা রােগীকে চিকিৎসা বাবদ পরিশােধ করতে হয় তিন লাখ টাকার অধিক। রােগ নির্ণায়ক পরীক্ষা, সেবা প্রদানকারীদের বেতন, অক্সিজেন ও ওষুধের মূল্য বাবদ ব্যয় কোনো ক্রমে প্রতিদিন ৫০০০ (পাঁচ হাজার) টাকার বেশি বিল করার কোনো অঙ্ক নেই, কেবলমাত্র প্রতারণা ছাড়া।
সেবা প্রদানকারী চিকিৎসক, নার্স হােটেলে থাকা খাওয়া বাবদ প্রতিদিন খরচ হয় দুই হাজার টাকার অধিক এবং চিকিৎসক ও সেবাকর্মীদের কাজ করতে হয় ২য় সপ্তাহে দুই দিন মাত্র, অপূর্ব ব্যবস্থাপনা। হতে পারতাে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালের ১/৪ অংশ শয্যা কোভিড রােগীদের জন্য নির্ধারিত এবং চিকিত্সক ও অন্য সকল স্বাস্থ্য কর্মীদের মাসিক বেতন অতিরিক্ত করােনা ভাতা ১০,০০০ থেকে ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা, ঠিক যেভাবে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা পার্বত্য চট্টগ্রামে বদলী হলে বিপদ ভাতা (Risk Allowance) পেয়ে থাকেন।
যারা করােনা রােগীদের সেবায় ভীত, তাদেরকে দ্রুত চাকরি থেকে অব্যাহতির সুযােগ দিন। চিন্তা ভাবনা না করে আজগুবি নতুন নিয়ম চালু করলে ব্যবস্থাপনায় উন্নতি হয় না, শত টাকার অনূর্ধ্ব বালিশ, কয়েক হাজার টাকার পর্দা এবং শতগুণ বেশি দামে কেনার সুবিধে হয় মাত্র। বিভাগীয় বিল ভাউচার পরীক্ষা করে কি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতি কমাতে পারবেন, না ঠেকাতে পারবেন? প্রধানমন্ত্রীর মানসিক যাতনা ও সময়ের মূল্যও স্মরণে রাখতে হবে। তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতির ভাগীদার নন, দুর্নীতির দ্রুত বিচার না করায় তা শরীরেও দুর্নীতির আঁচড় পড়ছে। আপনি পরিচ্ছন্ন হওয়া সত্ত্বেও আপনাকেও একদিন হয়তাে বা এজন্য বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। স্মরণ রাখবেন, বিচারের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণে দীর্ঘ সূত্রিতা দুর্নীতির বাহন।
* সুলভে যৌক্তিক চিকিত্সা পাবার অধিকার সবার কিন্তু নিশ্চিত করার দায়িত্ব আপনার সরকারের:
দ্রুত অগ্রসরমান করােনা ধ্বংস যজ্ঞ রহিত করনের জন্য আপনার কামনা দরিদ্রতা মুক্ত সুস্থ বাংলাদেশ। সার্বজনীন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ছাড়া দেশের দরিদ্রতার অবসান হবে না। ২০২০-২১ বাজেট আলােচনায় এই উপলব্ধির প্রমাণ নেই।
প্রথমত: বড় শহরগুলােতে সকল নাগরিককে জেনারেল প্রাকটিশনার্স (General Practitioners : GP) এর সাথে নিবন্ধনকরণ এবং এক একটি এলাকাকে একটি বড় সরকারি হাসপাতালের সাথে সংযুক্ত করে রেফারেল পদ্ধতি (Referal System) প্রবর্তন শুরু হবে রাজধানী ঢাকা দিয়ে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হাজার হাজার টাকার বালিশ পর্দার চোরদের একটা ভালো কাজ করার প্রজেক্ট করার নির্দেশ দিন। অন্যূন ৫০,০০০ লােক সংখ্যার ইউনিয়নে যদি দুইজন সার্বক্ষণিক চিকিৎসকের উপস্থিতি নিশ্চিত না করতে পারলে সার্বজনীন চিকিৎসা সেবার কথা (Universel Health Coverage) চিন্তা করা আকাশ কুসুম চিন্তা হবে মাত্র।
বাংলাদেশের ৫,০০০ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের (UHFWC) ৬ ফুট উঁচু নিরাপত্তা বেষ্টনী, গভীর নলকূপ ও ইলেকট্রিসিটি সুবিধাসহ চিকিত্সকদের বাসস্থান নির্মাণ ও প্রয়ােজনীয় মৌলিক যন্ত্রপাতির জন্য বাজেটে বরাদ্দ ছাড়া ইউনিয়ন পর্যায়ে ন্যূনতম স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তােলা যাবে না। সার্বক্ষণিকভাবে যে সকল নবীন চিকিত্সক ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে ন্যূনতম দুই বৎসর অবস্থান করবেন, তারাই তাদের পছন্দ মত বিষয়ে উচ্চ শিক্ষায় সুবিধে পাবেন, কারও ক্ষেত্রে নিয়মের হেরফের হবে না, এমনকি প্রধানমন্ত্রীর নাতনি হলেও নয়। জনগণ আপনার কথা ও কাজে সমন্বয় দেখতে চায়।
* মেডিকেল যন্ত্রপাতি ও ওষুধের কাঁচামাল আমদানিতে শুষ্ক বৈষম্য দুর্নীতির অপর সােপান:
মেডিকেল যন্ত্রপাতি অত্যন্ত ব্যয়বহুল, একটি ক্যান্সার ইলেকট্রিক ব্রাকিথেরাপি মেশিনের আমদানি মূল্য প্রায় এক মিলিয়ন ডলার যার উপর ১% আমদানি শুল্ক ধার্য করা হয় যা আপেক্ষিক দৃষ্টিতে বেশি নয়। তবে আমদানি শুল্কের অতিরিক্ত ৫% অগ্রিম শুল্ক (Advance Tax) এবং ৫% অগ্রিম আয়কর (Advance Income Tax AIT) এবং ১৫% মূল্য সংযােজন কর ‘VAT’ (সংযুক্তি-১) আপত্তিজনক আমদানি শুল্কও বৈষম্য আছে। আলট্রাসনিক যত্রে শুল্ক ১% কিন্তু কার্ডিয়াক মনিটরের শুল্ক ৫%। মেডিকেল যন্ত্রপাতিতে কেবলমাত্র ১% শুদ্ধ হতে পারে, তবে অন্য কোনো প্রকার শুল্ক, আয়কর মূল্য সংযােজন কর থাকা উচিত নয়। মেডিকেল যন্ত্রপাতি আমদানিতে একাধিক শুল্ক হার ও ট্যাক্স থাকায় দুর্নীতি বার সহজে উন্মুক্ত হয়।
খালি প্রিফিল্ড ইনজেকশন (যা ক্যান্সার ও বিকল কিডনি রােগীদের ইনজেকশন তৈরির জন্য অপরিহার্য) ইউভি কেনুলা, ফিডিং টিউব, ফিস্টুলা (Fistula) নিডলস, মাথার সূক্ষ্ণ শিরায় ব্যবহৃত সুই (Scalp Vein Needles) সাকসন (Suction) ক্যাথেটারে শুষ্ক ১০% কিন্তু ইনসুলিন কার্টিজ, শ্রবণ বৃদ্ধি যন্ত্র (Hearing Aids), হৃদপিণ্ডের কার্যকারিতা বৃদ্ধি যন্ত্র (Pace Makers), ভালভ পরিবর্তন (Heart Valve), ওষুধ যুক্ত বা ওষুধ মুক্ত করােনারী স্ট্যান্ট (Stent) পুরাে শুল্কমুক্ত অর্থাৎ ০% শুদ্ধে আমদানি যােগ্য। কিন্তু স্ট্যান্ট প্রয়ােগ চার্জ ৫০,০০০ থেকে ১৫০,০০০ টাকা। কারণ কি? দুর্নীতির দ্বারের কোন প্রহরী দায়ী? চিকিত্সক, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ না স্টান্ট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান, একক এবং সম্মিলিতভাবে?
ইনফুউশানে (Infusion) ২৫% ইসিজি পেপারে ১০% শুদ্ধ ভুল সিদ্ধান্ত। কতক এ্যান্টিবায়ােটিকের যথা টেট্রাসাইক্লিন, পেনিসিলিন প্রভৃতির শূন্য (০%) শুল্ক, কিন্তু এ্যান্টিবায়ােটিক এজিত্রোমাইসিন, এরিত্রোমাইসিনে শুল্ক ১৫%। আরও উদাহরণ আছে। দুর্নীতি বন্ধ করতে হলে এবং শুষ্ক কর্মচারীদের হয়রানী থেকে জনসাধারণকে রেহাই দিতে হলে দুর্নীতির প্রত্যেক ছিদ্র বন্ধ করতে হবে। শুল্কের একই দর থাকা যুক্তিসংগত হবে। এনার্জি ড্রিংকস, লবণ, মদ, তামাক, পান, জর্দা প্রভৃতির শুল্ক ২৫% নয় ১০০% হওয়া বাঞ্ছনীয়।
* BMRC এর চৈনিক ভ্যাকসিন ট্রায়ালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ অনভিপ্রেত:
৯০ দশকে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় ছিল না, প্রায় সকল আওয়ামী লীগ নেতাই ইঁদুরের মত পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন তখন অধ্যাপক সৈয়দ মােদাচ্ছের আলী সাহসের সাথে তার অফিস রুমে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি টাঙ্গিয়ে রেখেছিলেন। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ মেডিকেল গবেষণা কাউন্সিলের (BMRC) চেয়ারম্যান। অতীতে BMRC এর অনুমােদন ক্রমে আইসিডিডিআরবি (ICDDRB) বিভিন্ন ইউরােপীয় কোম্পানির পক্ষে ভ্যাকসিন ট্রায়াল করেছে, আপত্তি উঠেনি। কিন্তু আজ বাংলাদেশে চৈনিক ভ্যাকসিন ট্রায়ালে স্বায়ত্তশাসিত বাংলাদেশ মেডিকেল গবেষণা পরিষদের (BMRC) অধিকার নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হৈ হৈ রব করে বলছে ভ্যাকসিন ট্রায়াল করার জন্য BMRC অনুমতি দেবার অধিকার নেই।
BMRC নম্র ঘরে আপত্তি করেছে, সাহস করে বয়ােবৃদ্ধ মুক্তিযােদ্ধা অধ্যাপক সৈয়দ মােদাচ্ছের আলী পদত্যাগ না করে নথ, দন্তহীন সিংহের আচরণ প্রদর্শন করছেন। চীনকে বাংলাদেশে করােনা ভ্যাকসিন ট্রায়ালে বিঘ্ন সৃষ্টি করে সরকার অত্যন্ত কাল কাজ করছে, পুঁজিবাদের চক্রান্তে ভারতের ফাঁদে পা দিয়েছেন, ঠিক যে ভুল করেছিল বাংলাদেশ সরকার করেছিল রােহিঙ্গা সমস্যার শুরুতে। সীমান্তে বিএসএফ প্রতি সপ্তাহে বাংলাদেশিদের হত্যা করছে। নেপাল সরকার ভারতের বিরুদ্ধে সংসদে আইন পাশ করেছে, অথচ বাংলাদেশের ভারতের প্রতি নতজানু ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে।
বাংলাদেশে চৈনিক করােনা ভ্যাকসিনের ট্রায়াল যদি স্থগিত হয়ে যায় তবে বুঝতে হবে অদূর ভবিষ্যতে আমাদের বােকামীর কারণে নতুন ওষুধ তৈরির সক্ষমতা হারাবাে। কি করে ভাত রান্না করতে হবে, তা শেখার জন্য টেক্সাসের ল্যাবরেটরিতে তাদের গবেষণার নিয়মাবলী অনুসরণের প্রয়ােজন নেই। পশ্চিমা পুঁজিবাদী জগতের ফাঁদ থেকে সাবধান। চৈনিক ভ্যাকসিন ট্রায়াল নিয়ে দ্রুত অগ্রসর হােন, তবে চীনের সাথে চুক্তি করে নিন, গবেষণা সফল হলে লাভের ৫০% মালিক হবে বাংলাদেশ।
* স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের করণীয় ১৯৮২ সনের জাতীয় ওষুধ নীতির ওষুধের মূল্য নির্ধারণ বিষয়ক নীতিমালা:
সকল ওষুধ কোম্পানি সমূহকে অনুসরণে বাধ্য করানাে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। বাজারে ওষুধের মূল্যের উর্ধ্বগতির জন্য দায়ী ওষুধ কোম্পানি নিয়ন্ত্রিত ইনডিকেটিভ প্রাইসিং (Indicative Pricing :IP) পদ্ধতি (যা শিয়ালের কাছে মুরগী দেখা শুনার দায়িত্ব দেবার সমতুল্য) অনতিবিলম্বে বাতিল করা একটি সৎ রাজনৈতিক সরকারের নৈতিক দায়িত্ব।
রােগ নির্ণয় ও অপারেশন চার্জ এবং ICU চার্জ স্থির করে দিন। দৈনিক ICU চার্জ সর্বসাকুল্যে ৩০,০০০ (ত্রিশ হাজার) টাকার অধিক হবার যৌক্তিকতা নেই। সরকার নিদ্ধারিত রােগ নির্ণয় ও অপারেশন চার্জ এবং ICU চার্জ প্রত্যেক বেসরকারি হাসপাতাল/ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ অনুসরণ করছে কিনা সেটা দেখাই স্বাস্থ্য অধিদফতরের দায়িত্ব। অন্য কোনো পুলিশি দায়িত্ব অহেতুক এবং পুঁজিবাদী ব্যবস্থাপনায় কাম্যও নয়।
ব্যক্তি মালিকরা লাভ ও সেবা দুইটাই ভালো বুঝেন। তাদের দায়িত্ব কি স্বাস্থ্য অধিদফতরের নেয়া সঠিক হবে? চিকিৎসক কত ভিজিট নেবেন তা স্থির করবেন চিকিৎসক নিজে, সরকার নয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এমন কিছু করা উচিত হবে না যাতে তাদের সম্পর্কে বিদেশীদের চর হিসেবে প্রশ্ন উঠে। অনুগ্রহ করে BMRC এর কাজে হস্তক্ষেপ রহিত করুন এবং বাংলাদেশে নিজস্ব পদ্ধতিতে এ্যান্টিবডি, এ্যান্টিজেন কিট উৎপাদনে বিঘ্ন সৃষ্টি করে দেশের স্বার্থ বিরােধী চক্রের এজেন্টে পরিনত হবেন না।
* সুলভে সার্বজনীন চিকিৎসা সেবা প্রাপ্যতার জন্য যা করণীয়, তা আপনি করছেন কি?
ভারতীয় সেবা কোম্পানির প্রতি পক্ষপাতিত্ব করছেন, কিন্তু কেনো? আপনি আমাদের সকলের প্রধানমন্ত্রী। আপনি ভারতীয় স্বাস্থ্যসেবা কোম্পানি স্যানডরকে প্রতিজন বিকল কিডনি রােগীকে হেমােডায়ালাইসিস দেবার জন্য ২১৯৫.০০ (দুই হাজার একশত পচানব্বই) টাকা ভর্তুকি দিচ্ছেন। কতক সরকারি ও প্রাইভেট হাসপাতালে মুষ্টিমেয় কয়েকজন বিকল কিডনি রােগী ৪০০ (চারশত) টাকায় মাত্র এক বার হেমােডায়ালাইসিস পেয়ে থাকেন, এ সুবিধা পাবার জন্য অন্য খরচের তদবির আছে। যা হাজার টাকার কম নয়।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় হেমােডায়ালাইসিস সেন্টার হচ্ছে গণস্বাস্থ্য ডায়ালাইসিস সেন্টার যেখানে নাম মাত্র খরচে প্রতিদিন গড়ে ২৫০ জন বিকল কিডনি রােগী হেমােডায়ালাইসিস পেয়ে থাকে। আপনি ভারতীয় কোম্পানি স্যানডরকে প্রতি বিকল কিডনি রােগীর হেমােডায়ালাইসিসে ২১৯৫.০০ (দুই হাজার একশত পচানব্বই) টাকা ভর্তুকি দিচ্ছেন, অথচ বার বার আবেদন করার পরও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের রােগীদের ৯০০ (নয়শত) টাকা ভর্তুকি দিচ্ছেন না। নিজের প্রধানমন্ত্রীর কাছে কারণ জানতে চাওয়া কি অন্যায় হবে? কি বেয়াদবী হবে? কারণ জানতে চাওয়া ও প্রতিকার কামনা প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার।
* প্রধানমন্ত্রীর কাছে একজন বােকা মুক্তিযোদ্ধার কামনা:
দেশের উন্নয়নের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি কঠিন পরিশ্রম করেছেন, কিন্তু লক্ষ্য থেকে ক্রমে দূরে সরে যাচ্ছেন, সঙ্গে বাড়ছে আপনার একাকীত্ব। দেশের এই কঠিন সময়ে আপনার নিজ দলের পুরানাে সহকর্মী এবং অন্য সকল রাজনীতিবিদদের সঙ্গে নিয়ে আপনাকে অগ্রসর হতে হবে। তাদেরকে নিশ্চিত করতে হবে সুশাসনের লক্ষ্যে আগামী নির্বাচন হবে সুষ্ঠ পরিচ্ছন্ন নির্বাচন। কোনো চালাকির নির্বাচন নয়, দিনের নির্বাচন রাতে নয়। হয়তাে বা সফলতা আপনার জন্য অপেক্ষায় রয়েছে। ঈদের দিন সময় করে সুস্বাস্থ্য কামনা করতে খালেদা জিয়ার বাসস্থানে যান, এতে দেশবাশী খুশি হবে এবং বঙ্গবন্ধু হেসে বলবেন, ভাল করেছিস, মা’।
আগামী মাসে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের (ICU) সুবিধা নিয়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (Central Aircondition) ও কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সুবিধা সমেত করােনা সাধারণ ওয়ার্ড (COVID-19 General Word) চালু করবে ধানমন্ডিস্থ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। রােগীদের সর্বসাকুল্যে দৈনিক খরচ পড়বে তিন হাজার টাকার অনধিক। আপনি কি এই অত্যাধুনিক শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ও কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ সুবিধা সমেত জেনারেল ওয়ার্ডের উদ্বোধন করবেন? সুস্থ থাকুন, আমলা ও গােয়েন্দাদের থেকে সাবধানে থাকুন, রাজনৈতিক সহকর্মীদের কাছে ডেকে নিন।
ঈদের খুভেচ্ছান্তে, (জাফরুল্লাহ চৌধুরী)
ইউএইস/
Leave a reply