দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, কেউ অপরাধ করলে তার কঠোর শাস্তি হোক এটা আমি চাই, এ বিষয়ে তদন্তে আমি প্রয়োজনীয় সকল সহযোগিতা প্রদান করব।
তিনি বলেন, আমি একজন কঠোর পরিশ্রমী, নিষ্ঠাবান, সৎ, দক্ষ, সফল এবং মেধাবী কর্মকর্তা হিসেবেই সারাজীবন কাজ করেছি। আমি একজন অহংকার এবং অহমিকামুক্ত, সরল এবং সজ্জন ব্যক্তি।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা সোয়া ৩টা পর্যন্ত দুদকের জিজ্ঞাসাবাদের পর অধ্যাপক আজাদ বেরিয়ে এলে তাকে ঘিরে ধরেন সাংবাদিকরা। তিনি তখন সঙ্গে থাকা কাগজ থেকে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান। সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নের উত্তর তিনি এ সময় দেননি।
গত ১৫ জুন দুদক কর্মকর্তা জয়নুল আবেদীন শিবলীকে প্রধান করে চার সদস্যের এই অনুসন্ধান টিম গঠন করে কমিশন। শিবলীই গত ৬ অগাস্ট আবুল কালাম আজাদকে তলব করে চিঠি পাঠান।
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে নিম্নমানের মাস্ক, পিপিই ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কেনায় দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে দুদক পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বে একটি দল এদিন তাকে সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
দুদক বলছে, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদফতর ও ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পরস্পর যোগসাজশে ‘অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে’ কোভিড-১৯ এর চিকিৎসার জন্য ‘নিম্নমানের’ মাস্ক, পিপিই ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কিনে বিভিন্ন হাসপাতালে সরবরাহ করে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ এসেছে কমিশনের হাতে।
করোনাভাইরাসের পরীক্ষা ও চিকিৎসা নিয়ে জেকেজি হেলথ কেয়ার ও রিজেন্ট হাসপাতালের প্রতারণা ও জালিয়াতির খবর ফাঁস হলে ডা. আজাদ তোপের মুখে পড়েন। এরপর গত ২১ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্র দেন তিনি।
পদত্যাগের বিষয়ে আজাদ বলেন, আমি লক্ষ্য করছিলাম, আমাকে নিয়ে অপপ্রচারের অপচেষ্টা শুরু হয়েছে। পদ আঁকড়ে রাখা আমার কাছে সম্মানের বিষয় নয়। তাই বিবেকতাড়িত হয়ে গত ২১ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক হিসেবে স্বেচ্ছায় অব্যাহতি নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করি।
আজাদ বলেন, কোভিড থেকে নিজেকেও বাঁচাতে পারিনি, মৃত্যুর দুয়ার থেকে পরম করুণাময়ের অনুগ্রহে এবং চিকিৎসকদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সুস্থ হয়েছি। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরদিনই কাজে যোগ দিয়েছি। কারণ কোভিড এমন এক মহাদুর্যোগ, যে বিশ্রামের কথা ভাবতে পারিনি।
করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ ও চিকিৎসার বিষয়ে রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের চুক্তির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে ডা. আজাদকে বৃহস্পতিবার আবারও কমিশনের কার্যালয়ে হাজির হতে হবে।
ইউএইস/
Leave a reply