ভৈরব ( কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি:
ভৈরবে ভুল অপারেশনে খাদিজা বেগম নামের এক গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। গৃহবধূর স্বামীর নাম মো. কাউসার মিয়া এবং তার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার সরাইল উপজেলার ওরাইল গ্রামে।
আজ শুক্রবার দুপুর আড়াইটায় ভৈরব শহরের নিউটাউন এলাকায় অবস্থিত গ্রামীণ জেনারেল হাসপাতালে এই ঘটনাটি ঘটে।
নিহত খাদিজার শ্বশুর মো. মলফত আলী অভিযোগে জানান, আমার পুত্রবধূকে পিত্তে পাথর অপারেশন করতে এনে ডা. মাসুদুর রহমান ভুল অপারেশনে তাকে মেরে ফেলেছে। ঘটনার পরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিহত রোগীকে জোর করে এ্যাম্বুলেন্সে ঢুকিয়ে বাড়ি নিয়ে যেতে বলে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা ৭টা) নিহতের লাশ হাসপাতালের সামনে এ্যাম্বুলেন্সে রাখা আছে। ঘটনার পর হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স, ম্যানেজারসহ সকল কর্মচারী পালিয়ে গেছে।
জানা গেছে, খাদিজা বেগমের পেটে ব্যথা হলে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে তার স্বামীসহ অভিভাবকরা গ্রামীণ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসে। তখন ডাক্তাররা তার পরীক্ষানিরীক্ষা করে জানায় তার পেটে পিত্তে পাথর হয়েছে, তাই অপারেশন করতে হবে। ডাক্তারের কথামত বৃহস্পতিবার বিকেলেই তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করে। আজ দুপুর দেড়টায় তার অপারেশনের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রোগী মারা যায় বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করে। তার মৃত্যুর পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর অভিভাবককে সমঝোতা করার চেষ্টা করছে এমন অভিযোগ রয়েছে।
নিহত খাদিজার চাচা শ্বশুর আলমীর জানান, আমার ভাতিজা বউকে হাসপাতালের ডাক্তার মাসুদুর রহমান ভুল অপারেশনে মেরে ফেলেছে। রোগীর মৃত্যুর খবর পেয়ে আমরা বাড়ি থেকে এসে দেখি লাশ জোর করে অপারেশন রুম থেকে বের করে এ্যাম্বুলেন্সে ফেলে রাখে।
খাদিজার শাশুড়ি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার পুত্রবধূ পেট ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে এলো কিন্তু এখন লাশ হয়ে গেলো। হাসপাতালের ডাক্তার ভুল অপারেশন করেছে বলেই আমার বউ মারা গেলো। আমি বিচার চাই।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদ জানান, ঘটনার খবর পেলেও আমি এখনো কোনো অভিযোগ পায়নি। গ্রামীণ জেনারেল হাসপাতাল পরিচালনার আবেদন করলেও তাদেরকে এখনো অনুমোদন দেয়া হয়নি। গত তিনদিন আগে সিভিল সার্জনের একটি টিম এই হাসপাতালে পরিদর্শনে গিয়েছিল। সেদিন হাসপাতালে অনেক অনিয়ম পাওয়া গেছে এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি দেখাতে পারেনি তারা। ডাক্তার কীভাবে, কেমন করে অপারেশন করেছে তা আমি জানি না। অভিযোগ পেলে ঘটনা তদন্ত করা হবে বলে তিনি জানান।
এই ঘটনার পর ডাক্তার, নার্স, ম্যানেজার ও কর্মচারীরা পালিয়ে যাওয়াই তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে হাসপাতালের উপদেষ্টা তোফাজ্জল হক জানান, অপারেশনে রোগী মারা যেতেই পারে। অপারেশনের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে রোগী মারা গেছে যা ডাক্তার বলেছে। এটা একটি দুর্ঘটনা। রোগীর অভিভাবকের সাথে সমঝোতা করার চেষ্টা করছি বলে তিনি জানান।
ইউএইস/
Leave a reply