ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি:
ভৈরবে শাহ আলম নামের এক যুবক খুনের ঘটনায় পুলিশের ভয়ে এলাকার ২০টি পরিবার পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ঘটনার পর ১৫ জনকে আসামি করে নিহতের স্ত্রী শেফালী বেগম ভৈরব থানায় একটি মামলা করেন। অজ্ঞাত আসামি করা হয় আরও কয়েকজনকে। এই ভয়ে এলাকার ২০টি পরিবার এখন ঘরছাড়া হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে বলে জানা গেছে।
গেলো কোরবানির ঈদের দিন ভৈরবের শিমুলকান্দি গ্রামের কান্দিপাড়া এলাকায় কোরবানির মাংস নিয়ে ঝগড়ায় শাহ আলম (৩০) নামের এক যুবক প্রতিপক্ষের লাঠির আঘাতে খুন হয়। নিহত যুবক কুলিয়ারচর বিদ্যুৎ অফিসে চাকরি করতেন। তার বাড়ি কান্দিপাড়া এলাকায়। ঘটনার পর বাদি পক্ষের লোকজন বিবাদীদের বাড়িঘর লুটপাট ও ভাঙচুর করেছে। খুনের ঘটনার পর ১২ আসামি কিশোরগঞ্জ আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাদেরকে জেলে পাঠিয়ে দেয়। তারপরও প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে হামলা করছে তারা। এই ভয়ে ২০ পরিবারের নারী শিশুসহ প্রায় শতাধিক লোকজন তাদের বাড়িঘর ফেলে পালিয়েছে। অনেকেই তাদের আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে।
জানা গেছে, গত কোরবানির ঈদের দিন তার এলাকায় একটি মসজিদে কোরবানির মাংস দুই পক্ষ মিলে বণ্টন করছিল। বণ্টন নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে তর্কবিতর্ক শুরু হলে শাহ আলম উভয় পক্ষকে থামানোর চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষ ছাত্তার তার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করলে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পথে ওইদিন রাতে তিনি মারা যান। এরপর ঘটনায় তার স্ত্রী বাদি হয়ে থানায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন।
ঘটনার পরদিন শাহ আলমের গোষ্ঠীর লোকজন কমপক্ষে ১৫/২০টি বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর লুটপাট করে। গত ২৫ দিনেও ২০টি বাড়ির লোকজন বাড়ি ফিরতে পারেনি।
কান্দিপাড়া গ্রামের নারী বন্যা বেগম জানান, আমার স্বামী বিদেশ থাকেন। ঘটনার সময় আমার পরিবারের কেউ ঘটনাস্থলে ছিল না। অথচ তারা আমাদের বাড়িঘর ভেঙ্গেছে। কোলের শিশু নিয়ে ২৫ দিন যাবত আমি বাড়িছাড়া হয়ে আছি।
রফিক মিয়া নামের এক গৃহকর্তা জানান, ঘটনার পর শাহ আলমের লোকজন আমার গরু বাছুর, ঘরের থালাবাটি পর্যন্ত লুটপাট করে নিয়ে গেছে। আমি পরিবারসহ বাড়িছাড়া হয়ে পরের বাড়িতে মানবেতর দিন কাটাচ্ছি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, এখনো তারা বাড়িঘরে হামলা করছে।
ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহিন জানান, ঘটনায় যারা জড়িত তাদেরকে গ্রেফতার করতে চেষ্টা করছে পুলিশ। সাধারণ নিরীহ মানুষকে পুলিশ হয়রানি করছে না। যারা অপরাধের সাথে জড়িত নয় তাদেরকে ধরবে না পুলিশ। কারও বাড়িঘর বাদি পক্ষের লোকজন লুটপাট ভাঙচুর করলে থানায় অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
ইউএইচ/
Leave a reply