মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় তিতাস গ্যাসের আট কর্মকর্তা-কর্মচারীকে বহিষ্কার করেছে জ্বালানি বিভাগ। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, দায়িত্বে অবহেলার কারণে মসজিদে বিস্ফোরণ ঘটার অভিযোগে সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) এই ৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তের সঙ্গে সঙ্গে তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশও দেয়া হয়েছে।
বরখাস্ত হওয়া ওইসকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা হলেন- প্রকৌ. মো. সিরাজুল ইসলাম,ব্যবস্থাপক; প্রকৌ. মাহমুদুর রহমান রাব্বি, উপব্যবস্থাপক; প্রকৌ. এস এম হান্নান শাহরিয়ার, উপ প্রকৌশলি; প্রকৌ. মানিক মিয়া, উপ প্রকৌশলি; মো. মনিবুর রহমান চৌধুরী, সিনিয়র সুপারভাইজার; মো. আইউব আলি, সিনিয়র উন্নয়নকারী; মো. হানিফ মিয়া, সাহায্যকারী; ইসমাইল প্রধান, প্রকর্মী।
এছাড়া আগামী ২ মাসের মধ্যে সকল অবৈধ গ্যাস লাইন অপসারণ করতে হবে। পরিকল্পিত এলাকার বাইরে বিদ্যুৎ-জ্বালানি সংযোগ দেয়া যাবে না। অকোপ্যান্সি সার্টিফিকেট অনুসারে সংযোগ না নিলে দ্রুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কথাও জানান প্রতিমন্ত্রী।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেন, কর্মকর্তাদের দূর্নীতি ও অসদাচারণের জন্যই রাজনীতিবিদদের বা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। কোন বিভাগের কোন কোন কর্মকর্তা অবৈধ কার্যক্রমের সাথে জড়িত তাদের তালিকা করা হচ্ছে। কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসলে প্রথমে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে পরে অভিযোগ তদন্তের পরে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, ট্রান্সমিশন লাইনের উপর কোন বিল্ডিং বা স্থাপনা থাকলে দ্রুত অপসারণ করতে হবে। গ্যাসের বকেয়া বিল সংগ্রহের টাইম লাইন নির্ধারণ করতে হবে। একইসাথে বিল খেলাপীদের তালিকা হালনাগাদ করে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের নির্দেশ দেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী এ সময় আরও বলেন, ইভিসি মিটার এবং প্রি-পেইড মিটার সকল গ্রাহকের জন্য স্থাপন করতে হবে। অটোমেশন করার প্রক্রিয়াও ধীর গতিতে চলছে- যা কাঙ্খিত নয়। একইসাথে ট্রাস্কফোর্সের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে হবে।
তিনি বলেন, তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড- এর ফতুল্লা এলাকায় যারা দায়িত্বে ছিলেন তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে নাই। তাদের শাস্তির আওতায় আনা প্রয়োজন।
এদিকে গতকাল মসজিদে বিস্ফোরণে হতাহতের প্রত্যেকের পরিবারকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা চেয়ে করা রিট করা হয়। যার শুনানি হবে আগামীকাল।
বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে রিটটির শুনানি হবে। গতকাল সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তৈয়মুর আলম খন্দকার রিটটি করেন।
রিট আবেদনে বলা হয়, মসজিদ পরিচালনা কমিটি ও স্থানীয় বাসিন্দারা গ্যাসলাইন লিকেজের বিষয়টি তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের নজরে আনলেও তিতাস গ্যাসের স্থানীয় কার্যালয়ের কর্মকর্তারা ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন লাইন মেরামতের জন্য। সংশ্লিষ্টদের অবহেলার কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটে।
রিটে এ ঘটনার জন্য কাদের দায়িত্বে অবহেলা রয়েছে, তা নির্ধারণ করার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। এছাড়া গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি ও টেলিফোনের লাইন নিয়মিত দেখভালের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
Leave a reply