৬ বছর ধরে চলমান রাজধানীর পল্লবী থানায় পুলিশ হেফাজতে যুবক, ইশতিয়াক হোসেন জনিকে পিটিয়ে হত্যা মামলায় এসআই জাহিদসহ ৩ পুলিশ সদস্যের যাবজ্জীবন ও ২ সোর্সের ৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এ রায় দেন। নির্যাতন ও পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনের প্রথম কোন মামলার রায় এটি।
বন্ধুর গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে পুলিশ সোর্সের অশালীন আচরণের প্রতিবাদ করায় ২০১৪ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি বাসা থেকে জনি ও তার ভাই রকিকে থানায় ধরে নিয়ে যায় সোর্স সুমন ও পল্লবী থানা পুলিশ। পেটানো হয় রাতভর। এক পর্যায়ে মারা যায় জনি। ভাই হত্যার বিচার চেয়ে দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনে মামলা করেন রকি।
পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করায় পদে পদে হয়রানির শিকার হতে হয় তাদের। ৬ বছরের দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার পর শেষ হলো বিচার।
এ মামলায় সুষ্ঠু বিচার হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যে আইনের ঊর্ধ্বে নন- এমন বার্তা পৌঁছাবে বলে আশা রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। এ মামলা সমাজে সমতা তৈরীর একটি সুযোগ বলে মনে করেন অপরাধ বিজ্ঞানীরা।
অপরাধ বিজ্ঞানী হাফিজুর রহমান কার্জন বলেন, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার রায়। এই মামলার রায়ের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে আস্থা ফিরে আসবে।
পুলিশি হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া যায় প্রায়ই। কিন্তু এসব ঘটনায় বিচারের কোনো নজির নেই। আর বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকারের এক ধরনের সংস্কৃতি তৈরি করে ফেলেছে পুলিশ বাহিনী। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর একান্ত প্রচেষ্টায় ২০১৩ সালে প্রথম প্রনয়ণ হয় “নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইন”।
সিনহা নিহতের ঘটনায় পুলিশ সদস্যদের দিকে যখন অভিযোগের তীর, এমন প্রেক্ষাপটেই দেয়া হচ্ছে নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনে দায়ের মামলার প্রথম রায়।
Leave a reply