বরিশালে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় মামলা দায়ের

|

বরিশাল ব্যুরো:

বরিশালে এক শিক্ষককে কান ধরিয়ে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার বরিশাল মহানগর পুলিশের কোতয়ালী থানায় মামলটি দায়ের করেছেন লাঞ্ছনার শিকার শিক্ষক মিজানুর রহমান সজল।

কোতয়ালী থানার ওসি নূরুল ইসলাম জানান, গত ৯ সেপ্টেম্বর একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ১ মিনিট ৭ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, শিক্ষক মিজানুর রহমান সজল কান ধরে দাঁড়িয়ে আছে। পাশ থেকে একজন তাকে ‘ছাত্রীকে বেশি নম্বর পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অবৈধ প্রস্তাব না দেয়ার’ শপথ করান।

পাশপাশি আরও একটি ছবিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তাতে দেখা যায় বোরকা পরা এক নারীর পা ধরে বসে আছেন শিক্ষক সজল।

ওসি জানান, গত ২৫ আগষ্ট এ ঘটনা ঘটলেও লাঞ্ছনার শিকার মিজানুর রহমান সজল পুলিশকে অবহিত করেননি। তিনি বরিশাল থেকে গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফলে চলে যান।

এরপর মঙ্গলবার তাকে থানায় ডেকে মামলা নেয়া হয়েছে। মামলায় ইমতিয়াজ ইমন নামে একজনসহ আরও ৭/৮ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে জানান ওসি।

লাঞ্ছনার শিকার শিক্ষক মিজানুর রহমান সজলের অভিযোগ, বরিশাল নগরীর রূপাতলী এলাকায় অবস্থিত জমজম নার্সিং কলেজে চাকরি করতেন তিনি। ২০১৮ সালে চাকরি ছাড়ার আগে একই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ইমন ও তার স্ত্রী মনিরা আক্তারের সাথে তার বিরোধ বাঁধে।

এর কারণ তারা শিক্ষকদের সম্মান দিতো না। পড়াশোনায় অমনোযোগী ও ঠিকভাবে ক্লাস না করেও তারা পরীক্ষায় ভালো নম্বর চাইতো। তা দিতে রাজি না হওয়ায় ইমন তার উপর ক্ষিপ্ত ছিলো।

ঘটনার দিনের বিবরণীতে সজল বলেন, ২৫ আগষ্ট দুপুরে নগরীর হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা এলাকা থেকে তাকে অপহরণ করে ইমনসহ কয়েকজন। প্রথমে অক্সফোর্ড মিশন রোড ও পরে গোরস্থান রোড এলাকায় নিয়ে কয়েক দফা মারধর করা হয় তাকে। এরপর কান ধরিয়ে উঠবস করানো হয়।

পরে জীবননাশের হুমকি দিয়ে তাদের শিখিয়ে দেয়া কথা বলতে বাধ্য করে এবং তা মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে রাখে। এসময় ইমনের স্ত্রী মনিরা আক্তারের পা ধরতেও বাধ্য করে তারা।

এ ব্যাপারে জানতে ইমতিয়াজ ইমনের মোবাইল ফোনে কল করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে সোমবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘সজলের চরিত্র ভালো না। তিনি জমজম নার্সিং কলেজে থাকাকালে মেয়েদের কুপ্রস্তাব দিতেন। আমি এর প্রতিবাদ করায় আমার স্ত্রীকে পরীক্ষায় অকৃতকার্য করিয়ে দেয়।’

তাই তিনি (শিক্ষক সজল) যেনো ভবিষ্যতে আর কোন নারীকে অবৈধ প্রস্তাব না দেয়, এই মর্মে মুচলেকা রাখতে গেলে তিনি নিজেই কান ধরেন। তাকে মারধর করা হয়নি। এছাড়া কারা ভিডিও ছড়িয়েছে এ ব্যাপারেও তিনি কিছু জানেন না বলে দাবি করেন।


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply